|
|
|
|
উচ্চতম পটেল-মূর্তির পাল্টা নীতীশের সর্বোচ্চ হিন্দু মন্দির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তির (সর্দার পটেল) শিলান্যাস করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নীতীশ কুমারের পালা। আজ তিনি সর্বোচ্চ হিন্দু মন্দিরের মডেলের আবরণ উন্মোচন করলেন। বিহারের পশ্চিম চম্পারণের জানকিনগরের প্রস্তাবিত ৪০৫ ফুট উঁচু ‘বিরাট রামায়ণ মন্দির’ গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিহার স্টেট বোর্ড অফ রিলিজিয়াস ট্রাস্ট। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট মন্দিরের আদলেই গড়া হবে এই মন্দির। শেষ পর্যন্ত কম্বোডিয়ার আপত্তিতে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে ট্রাস্ট। ঠিক হয় সর্বোচ্চ মন্দির গড়া হবে। মডেল তৈরি। লোকসভা ভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের হাতে তার আবরণ উন্মোচন করানোর সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাস্ট সদস্যরা।
মোদী-নীতীশ দ্বৈরথে এই মূর্তি-মন্দির বাড়তি মাত্রা জোগাবে বলেই মনে করছেন রাজ্য-রাজনীতির কুশীলবরা। আসলে লোকসভা নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা হতে ঢের দেরি। কিন্তু বিহারের রাজনীতি এখন এতটাই উত্তপ্ত যে মনে হবে নির্বাচনী লড়াই চলছে জেডিইউ বনাম বিজেপির। দু’দলের তরফেই ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে রাজনৈতিক সভা। তৃতীয় দফার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে ফের বিহারে হাজির করছে বিজেপি। তাকে দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ৩ থেকে ৪টি সভা করানোর পরিকল্পনা করেছেন রাজ্য নেতারা।
পাশাপাশি, বিজেপি-র মোকাবিলা করতে জেডিইউ-ও চুপ করে বসে নেই। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে সংকল্প র্যালি। রাজ্যে অন্তত ১২টি জায়গায় এই সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেডিইউ নেতৃত্ব। রাজগিরে দলের দু’দিনের সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেডিইউ-এর
এই র্যালি চলবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত। ফলে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাস জুড়ে চলবে দু’দলের রাজনৈতিক যুদ্ধ। তাতেই জমবে প্রাক্-নির্বাচনী তরজা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে জানিয়েছেন, “রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদীকে সভা
করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তিনি রাজি হয়েছেন। আমরা তাঁকে দিয়ে তিন থেকে চারটি সভা করার পরিকল্পনা করেছি। সভা কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি।” ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নরেন্দ্র মোদীর বিহারে আসার কথা। জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি দফায় দফায় সভাগুলি করবেন।
বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পর থেকে বিহারের রাজনীতিতে নতুন ঢেউ এসেছে। তাতে জেডিইউ এবং বিজেপি নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার জন্য লড়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কে টিকে থাকবে তা দেখার। তবে নীতীশকে চাপে রাখতে বিজেপি যে ভাবে নরেন্দ্র মোদীকে তুরুপের তাস করতে চাইছে তাতে জেডিইউ যে রীতিমতো অস্বস্তিতে তা বোঝাই যাচ্ছে। মন্দির ছেড়ে উন্নয়ন নিয়ে সরব মোদীকে বিহারে ঠেকাতে নীতীশ কী শেষ পর্যন্ত ‘রাম মন্দির’কে অন্যতম হাতিয়ার করতে চাইছেন? জেডিইউ প্রকাশ্যে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয়। তবে একান্তে তাঁরা বলছেন, “রাম আমাদের প্রাণপুরুষ, এ কথা তো অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে মোদী বা বিজেপি-র মোকাবিলা আমরা রাজনৈতিক ভাবেই করব।”
সেই কারণে বিজেপির মোকাবিলা করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং রাজ্যের বিশেষ মর্যাদাকে তুলে ধরতে সংকল্প র্যালির প্রস্তুতি নিচ্ছে জেডিইউ। রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠ নারায়ন সিংহ বলেন, “যে কোনও মূল্যে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা হবে। একটা শক্তি রাজনৈতিক স্বার্থে এই সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে।” দলের এক নেতার কথায়, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে বিজেপি ফয়দা তুলতে চায়। মানুষকে এই ব্যাপারে সতর্ক করাই সংকল্প র্যালির উদ্দেশ্য।” দলের মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলছেন, “নরেন্দ্র মোদী বারবার যে বিহারে আসছেন তা রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য নয়। বিহারকে অশান্ত করাই ওদের উদ্দেশ্য। আমাদের লক্ষ্য তা প্রতিহত করা।” |
পুরনো খবর: নেহরুই পটেলকে সাম্প্রদায়িক বলেন, দাবি আডবাণীর |
|
|
|
|
|