|
|
|
|
রাজ্যের ভার কাকে, বাছবেন নরেন্দ্রই |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
নরেন্দ্র মোদী দিল্লির গদি দখল করতে সফল হলে গুজরাতে বিজেপির পরবর্তী মুখ কে? এখন থেকেই সেই বাছাইয়ের কাজটি শুরু করে দিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।
বিজেপি সূত্রের মতে, দেশে যে ভাবে কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে, তাতে নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে দিল্লি দখল করা অসম্ভব নয়। কিন্তু তিনি দিল্লি এলে রাজ্যের ভার কে নেবেন? দলীয় সূত্রে খবর, সেই বাছাইয়ের কাজও শুরু করেছেন মোদী। এখনও পর্যন্ত মোদীর উত্তরাধিকারের দৌড়ে রয়েছেন তিন জন। আনন্দীবেন, নিতিনভাই এবং সৌরভ পটেল। প্রভাবশালী পটেল সম্প্রদায়ের এই তিন সদস্যই মোদী মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। গুজরাত বিধানসভার স্পিকার বাজুভাই বালাও মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মোদী তাঁকে সেই পদ দিতে চান না বলেই স্পিকার করেছেন।
|
আনন্দীবেন |
মোদী শিবিরের মতে, তিন জনের মধ্যে মোদীর সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ হলেন আনন্দীবেন। রাজ্যের রাজস্ব, জমি সংস্কার, সড়ক, শহর উন্নয়ন ও পরিকাঠামো বিস্তারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব মোদী তাঁর হাতেই দিয়ে রেখেছেন। পাশাপাশি আমদাবাদ শহর ও জেলার গোটা দায়িত্বও তাঁর অধীনে। আনন্দীবেনের বয়স ৭১। বিজেপি নেতাদের মতে, স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে মোদীর প্রথম পছন্দ তিনিই হতে পারেন। তা না হলে রাজ্যের অর্থ, স্বাস্থ্য, পরিবহণের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী নিতিনভাইয়ের ভাগ্যে শিকে ছিড়তে পারে। আর মোদী যদি নবীন মুখকে এই পদে নিয়ে আসতে চান, তা হলে ৫৫ বছর বয়সী সৌরভ পটেলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। রাজ্যের শক্তি, পেট্রো-রসায়ন, খনি, পরিকল্পনা, পর্যটনের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলান সৌরভ।
মোদীর ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহ অবশ্য আনন্দীবেনকে খুব একটি পছন্দ করেন না। উভয়ের মধ্যে রেষারেষি রয়েছে। অমিত শাহ গ্রেফতার হওয়ার পর গুজরাতে বাজিও পুড়িয়েছিলেন আনন্দীবেনের সমর্থকরা। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “মোদী এক জন দূরদর্শী নেতা। তাই গুজরাতে তাঁর সাম্রাজ্য চালনা করতে পারবেন এমন কাউকেই মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসাতে চাইবেন তিনি।”
লোকসভা নির্বাচনের জন্য মোদী গোটা দেশে প্রচার করছেন। তেমনই নিজের রাজ্য গুজরাতের রাজনৈতিক সমীকরণ গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। উত্তরসূরি বাছার পাশাপাশি তাঁর বিরোধী নেতাদের দলে ফেরাতেও উদ্যোগী হয়েছেন। ওই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই পটেল। গুজরাতে গত বিধানসভা ভোটের আগে মোদীর বিরোধিতা করে বিজেপি ছেড়ে নতুন দল গড়েছিলেন কেশুভাই। রাজ্যের পটেল সম্প্রদায়ের একাংশের উপরে প্রভাব থাকলেও মাত্র দুটি আসন জিততে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু মোদী তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই কেশুভাইয়ের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তাঁর আশীর্বাদ নিতে। সম্প্রতি গুজরাতে মোদীর উপস্থিতিতে কেশুভাই ও লালকৃষ্ণ আডবাণীরও একটি বৈঠক হয়েছে।
কেশুভাইয়ের মন জয়ের জন্য তাঁর ছেলে ভরত পটেলকে লোকসভা ভোটে রাজকোট বা জুনাগড় থেকে টিকিট দিতে পারে বিজেপি। কেশুভাই ঘনিষ্ঠ এক নেতার মতে, “এখন আমাদের নেতার বিজেপিতে ফিরে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছক সাজিয়ে রাখছেন মোদী। কী হবে তা বলতে পারে একমাত্র সময়ই। |
|
|
|
|
|