ধর্ষণ নিয়ে চটুল মন্তব্য, বিপাকে সিবিআই প্রধান
বেটিংকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে ধর্ষণের উপমা টেনে বিতর্কে জড়ালেন সিবিআই অধিকর্তা রঞ্জিত সিন্হা। তাঁর ইস্তফা দাবি করেছেন মহিলা কমিশনের সদস্য থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেত্রী-সকলেই।
সিবিআইয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান চলছে রাজধানীতে। গত কাল তারই অংশ হিসেবে ক্রীড়াজগতে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে একটি আলোচনাসভায় যোগ দেন সিন্হা। সেখানে বেটিংকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে নানা উপমা টানেন তিনি। বেটিং বন্ধ করার উপযুক্ত পরিকাঠামো আছে কি না সেই প্রশ্নও তোলেন।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হঠাৎ বলে বসেন, “বেটিং বন্ধ করতে না পারলে তাতে আইনি সিলমোহর দেওয়া উচিত। কথায় আছে ধর্ষণ আটকাতে না পারলে তা উপভোগ করুন। এটাও সেই ধরনের ব্যাপার।”
সিবিআই প্রধানের এই মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে শোরগোল। নানা শিবিরের মতে, আইনের এক রক্ষকের মুখে এই মন্তব্য গভীর এক সামাজিক ব্যাধির প্রতিফলন। মহিলা কমিশনের সদস্য নির্মলা সামন্ত প্রভালকরের দাবি, “যে পদে উনি আছেন তাতে এই ধরনের মন্তব্য একেবারেই অনভিপ্রেত। এটা জঘন্য মানসিকতার পরিচয়।”
কমিশন ইতিমধ্যেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে সিন্হাকে নোটিস পাঠিয়েছে। ওই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতা শর্মাও। তাঁর কথায়, “আমরা ভাবতাম কেবল নিচুতলার সরকারি কর্মীদের সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এখন বোঝা যাচ্ছে শীর্ষকর্তাদের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।’’ কমিশন সিন্হাকে সরানোর সুপারিশও করতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্মলা।
সম্প্রতি বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়েছে সিবিআই। কোনও কোনও মামলায় তারা এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্র। কয়লা কেলেঙ্কারি মামলায় কার্যত কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ওই তদন্তকারী সংস্থা। আবার বিরোধীদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে তার নাম ‘কংগ্রেস ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ দিয়েছে কিছু রাজনৈতিক দল। সিন্হার এই মন্তব্য অকারণে তদন্তকারী সংস্থাকে ফের বিতর্কে জড়াল বলে মনে করছেন অনেকে।
সিন্হার মন্তব্যে স্তম্ভিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার কিরণ বেদী, শিল্পপতি কিরণ মজুমদার শ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামিনী শর্মার মতো ব্যক্তিত্বরা। বিষয়টি অক্সিজেন জুগিয়েছে বিরোধীদের সিবিআই-বিরোধিতাতেও। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট ‘বিকৃত মানসিকতার’ গন্ধ পেয়েছেন এই মন্তব্যে। তাঁর প্রশ্ন, “বেশ কিছু ধর্ষণ মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি এই মন্তব্য করেন কি করে?” সিন্হার ইস্তফা দাবি করেছে বিজেপিও।
পরিস্থিতি দেখে সিবিআইয়ের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সিন্হা কাউকে আঘাত করতে চাননি। কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
তাতে অবশ্য চিড়ে বিশেষ ভেজেনি বলেই মনে করছেন অনেকে। বিজেপি মুখপাত্র নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, “যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সিবিআই প্রধানের পরিবার তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেন কি না জানার ইচ্ছা রইল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.