ত্রিপক্ষ বৈঠক ২২শে, কথা জিটিএ নিয়েই
দার্জিলিং তথা জিটিএ-র সমস্যা নিয়ে কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বসতে চলেছে কেন্দ্র, রাজ্য ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। আগামী ২২ নভেম্বরের ওই বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী। তার আগের দিন ২১ তারিখ রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে মোর্চা নেতাদের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের কাছে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার আবেদন জানিয়েছিলেন মোর্চা নেতৃত্ব ও দার্জিলিঙের সাংসদ যশোবন্ত সিন্হা। নালিশ ছিল, জিটিএ গঠনের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি প্রতিশ্রুতি মতো রূপায়ণ হচ্ছে না। রাজ্য সরকার চুক্তির খেলাপ করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, রাজ্য সরকার রাজি থাকলে তবেই দার্জিলিংয়ের সমস্যা নিয়ে ত্রিপক্ষ বৈঠকে বসবে কেন্দ্র। গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিঙে গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয় রোশন গিরি-হরকাবাহাদুর ছেত্রীদের।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন ঝগড়া করুন। কিন্তু উন্নয়ন থামাবেন না। মোর্চা নেতারাও জানান, পাহাড়ে আর বন্ধ হবে না। রাজ্যের সঙ্গেও তাঁরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে রাজি। কিন্তু জিটিএ নিয়ে প্রশাসনিক সমস্যা তাতেও মেটেনি। তাই রাজ্যের সম্মতির ভিত্তিতেই এ বার ঠিক হয়েছে, ২২ নভেম্বর কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে।
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সম্মতি দিলেও গত রবিবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যে ভাবে দার্জিলিঙে গিয়ে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন, তাতে অসন্তুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে কেন এই ধরনের বৈঠক হবে? ওই দিন দার্জিলিঙে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও উপস্থিত ছিলেন। তার আগের দিন দিল্লিতে রাজ্যপালের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠক হয়। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপতি তথা কেন্দ্রের এই মনোভাবে মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি তৃণমূল নেতারা। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে অবশ্য বলা হচ্ছে, মোর্চা-প্রধান গুরুঙ্গ বিভিন্ন দাবিদাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি দিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি যেখানেই যান, সেখানে অনেকেই এই ধরনের স্মারকলিপি দেন। রাষ্ট্রপতি তা কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দেন। দার্জিলিঙেও গুরুঙ্গ ছাড়া আরও অনেকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন, স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
প্রবণ-গুরুঙ্গ বৈঠকে আসলে প্রণব-পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে দার্জিলিং থেকে প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই দিন জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎও দার্জিলিঙে হাজির ছিলেন। রাষ্ট্রপতি ভবন বলছে, অভিজিৎ দার্জিলিঙে থাকলেও বৈঠকে ছিলেন না। তৃণমূল নেতারা বলছেন, এটা প্রণব, অভিজিৎ বা কোনও ব্যক্তিবিশেষের প্রশ্ন নয়। অভিজিৎ মোর্চার মদতে দার্জিলিং থেকে জিতলে সেই আসনটি কংগ্রেসের ঝুলিতে যাবে। সুতরাং অভিজিৎ দাঁড়ালে তৃণমূলও তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে। পাহাড়ে দলের সংগঠন বাড়াতে মমতার পাশাপাশি মুকুল রায়, গৌতম দেবও নিয়মিত দার্জিলিং যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের অবশ্য দাবি প্রণব-গুরুঙ্গ বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনাই হয়নি।
রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে কেন্দ্রের সরাসরি মোর্চার সঙ্গে কথা বলা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। এ নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্র তথা কংগ্রেস নেতারা মোর্চার পৃথক রাজ্যের দাবিতে ইন্ধন জোগাচ্ছেন। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্য, মোর্চা নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রের মন্ত্রীদের কখনোই পৃথক রাজ্য নিয়ে আলোচনা হয়নি। এমনকী রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া গুরুঙ্গের স্মারকলিপিতেও পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবির উল্লেখটুকুও নেই। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও পৃথক রাজ্যের দাবি বা জিটিএ-চুক্তির বাইরের কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, জিটিএ-চুক্তি রূপায়ণ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর্যালোচনা করার জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা ওই চুক্তিতেই বলা হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী কোনও পক্ষ চুক্তির খেলাপ করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বৈঠক ডেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারে। এ জন্য চুক্তি রূপায়ণ কমিটিও রয়েছে। ২২ তারিখের বৈঠকে তাই কেন্দ্র ও রাজ্যের আমলারাই যোগ দেবেন। মোর্চার তরফে সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় যাবেন। রোশন অবশ্য বলেন, “আমাদের সমস্ত সমস্যাই আমরা তুলে ধরব।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.