সেজেগুজে প্রস্তুত লালদিঘি। ফোয়ারা, চারপাশে টালি দিয়ে বাঁধানো পথ, রংবেরঙের গুল্ম। আশপাশের আবর্জনা অনেকটাই উধাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আগেই সেজে উঠেছে পাটুলির তিনটি দিঘি। সেজেছে কলেজ স্কোয়ারও। নয়া সাজের লালদিঘির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে মাসখানেকের মধ্যেই।
মহাকরণ, জিপিও, সিটিও তিন পাশে তিন ঐতিহ্য-ভবনের মাঝে কয়েক একর জায়গা নিয়ে লালদিঘি। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার কিছুকাল বাদে মহাকরণের বারান্দা থেকে লালদিঘির অবস্থা খেয়াল করেন মমতা। এর পরেই সঙ্গী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সেটি সাজানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই জলাশয় ও আশপাশ সাজানোর প্রকল্প অনুমোদিত হয় জওহরলাল নেহরু জাতীয় নগরোন্নয়ন মিশনে (জেএনএনইউআরএম)। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার দেবে মোট ব্যয়ের ৩৫ শতাংশ করে। পুরসভা দেবে ৩০ শতাংশ। পুরসভার ডিজি সুব্রত শীল বলেন, “তিন পর্যায়ে হচ্ছে কাজটা। প্রথম পর্যায়ে ১৩ কোটি টাকার। এটা শেষ হয়ে গিয়েছে গত জুলাইয়ে। এখন চলছে ৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। বাকি ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার কাজ হবে পরে।” |
বিবাদী বাগের রাস্তার ধারে ফুটপাথে টালি বসানো এবং রাস্তার মাঝে ডিভাইডার বসানোর কাজ হয়েছে প্রথম পর্যায়ে। দ্বিতীয় পর্যায়ের মূল কাজটা লালদিঘির মাঝে ফোয়ারা তৈরির। এর জন্য খরচ হয়েছে এক কোটি টাকার কিছু বেশি। সাতটি নৌকোর উপরে সাতটি ফোয়ারা। মাঝেরটির জলের উচ্চতা ৪০ ফুট। এখন প্রতি দিনই কিছুক্ষণ করে চলছে ওই ফোয়ারার মহড়া। দিঘির চারপাশে তৈরি হয়েছে এক ডজন বসার আসন। প্রতিটিতে বসতে পারে তিন জন করে। রেলিংয়ে নীল-সাদা রং করা হয়েছে। দিঘি ঘিরে ‘পেভার ব্লকে’ আচ্ছাদিত হাঁটাপথ।
লালদিঘির দেখভালের দায়িত্ব মূলত রাজ্যের পূর্ত দফতরের। তারা ওই জলাশয়ে মাছ ধরার অনুমতি দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই জলাশয়ের সৌন্দর্যায়নের দায়িত্ব নেওয়ার পরে পুরসভা সমস্যায় পড়ে মৎস্যশিকারিদের নিয়ে। যাঁরা মাছ ধরেন, তাঁদের সঙ্গে পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং পুর-কর্তাদের বৈঠক হয়। মেয়র বলেন, “মৎস্যশিকারিদের নির্দিষ্ট বসার জায়গা করে তবেই জলাশয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। এ ছাড়াও আশপাশে ১৭০টি বড় গাছের নীচে বাঁধানো বেদি ও মানানসই গুল্ম বসানো বাকি আছে।” পুজোর আগে কলেজ স্কোয়ারের সৌন্দর্যায়ন শেষ করেছে পুরসভা। খরচ হয়েছে ৩৮ লক্ষ টাকার মতো।
প্রসঙ্গত, এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেজেগুজে উঠেছে পাটুলির তিনটি জলাশয়। একটির মাপ দুই একর, আর একটি তিন একর এবং বড় জলাশয়টি সাড়ে সাত একরের। দূর করা হয়েছে আশপাশের আগাছা। জলাশয়ের ধার দিয়ে পাথরের ব্লক বসানো ফুটপাথ। প্রস্থ ১২ ফুটের মতো, মোট দৈর্ঘ্য ৩২৫ মিটার। এই পথের এবং জলাশয়ের ধারে হরেক গুল্ম আর সবুজের গালিচা। প্রায় ৬০০ ফুট দীর্ঘ, সাত ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়েছে পুরো জায়গাটা। এক পাশে ‘জেনিভা জেট’ নামে ৯০ ফুট উঁচু ফোয়ারা, আর এক পাশে গোটা পাঁচ ছোট ফোয়ারা। হয়েছে শিশু উদ্যানও।
|
পুরনো খবর: কোন সে আলোর... |