ডার্বি নিয়ে আলোচনা ফালোপার
আমি আঠারোতে যাচ্ছি কোচ হতে, বলে দিলেন কোলাসো
কোচ নিয়ে অভূতপূর্ব পরিস্থিতি ইস্টবেঙ্গলে। এতটাই যে, তা সোপ অপেরাকেও হার মানাবে হয়তো। উত্তেজনা, নাটকীয়তায় টইটম্বুর।
চিডি-মোগাদের ইস্টবেঙ্গল মাঠে কোচিং করিয়ে ওঠার পর মার্কোস ফালোপা যখন ডার্বি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত তখন গোয়ার বাড়িতে ব্যাগ গুছিয়ে বসে রয়েছেন পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ আর্মান্দো কোলাসো। ফালোপার জায়গায় কোচ হয়ে আসার অপেক্ষায় তিনি।
রাতে অবশ্য নাটক পঞ্চমাঙ্কে পৌঁছয় যখন বিরক্ত ফালোপা ফোন করে ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যকে বলেন, “আমি আপনার সঙ্গে আলোচনা চাই।”
তা হলে আজ আলোচনার পরই কি লাল-হলুদে শেষের কবিতা পড়ে ফেলবেন ব্রাজিলিয়ান ফালোপা। সন্তোষবাবু বলে দেন, “জানি না ও কি বলবে। কি বলে শুনি তারপর তো সিদ্ধান্ত।”
ইস্টবেঙ্গলের কোচের দায়িত্বে হয়তো আর ক’দিন। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ঘটনা যাই ঘটুক, সোমবারই কিন্তু গোয়ার আগোশেইন গ্রামের চারদিক মুড়ে ফেলা হয়েছে আর্মান্দো বন্দনার ফেস্টুনে। যেখানে কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে কোচিং করাতে যাওয়ার জন্য শুভেচ্ছাও জানানো হয়েছে প্রাক্তন জাতীয় কোচকে। রাতে স্বয়ং আর্মান্দো কোলাসো গোয়া থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “আগামী রবিবার কিছু পারিবারিক কাজ রয়েছে আদালতে। পর দিন কলকাতা যাচ্ছি। ১৯ নভেম্বর কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ রয়েছে। সেটা দেখব। তার আগেই মনে হচ্ছে ওরা প্রেস কনফারেন্স করে আমার নাম জানিয়ে দেবে।”
কোলাসো কি বলছেন তা নিয়ে ফালোপা মাথাই ঘামাচ্ছেন না! এ দিনও অনুশীলনের পর খোশ মেজাজে বলে গেলেন, “আমাকে তো কর্তারা তো কিছু বলেননি। বুধবার পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চে তো আমিই বসব। ডার্বির স্ট্র্যাটেজি নিয়েও এ দিন কথা বলেছি ছেলেদের সঙ্গে।” এখানেই থেমে না গিয়ে ফালোপার সংযোজন, “ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করতে চাই। এখনও পর্যন্ত যা পারফরম্যান্স তাঁর ভিত্তিতে নিজেকে দশের মধ্যে সাত দেব।”
ফোনে কোলাসো জানতে চেয়েছিলেন ফালোপা কি ইস্তফা দিয়েছেন? লাল-হলুদ কোচের মন্তব্য শুনে আর্মান্দোর রসিকতা, “ফালোপা এ সব বলছেন নাকি? উনি তো দেখছি জিনিয়াস!”
কোচের চেয়ার নিয়ে যখন ফালোপা-আর্মান্দোর বাকযুদ্ধ চলছে তখন নাটক আরও টানটান ক্লাব কর্তাদের মন্তব্যে। অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “কোচের এখনও পর্যন্ত যা পারফরম্যান্স তাতে আমি খুশি।”
প্রশ্ন হল, ফালোপা সরছেনই। কিন্তু কবে। ডার্বির আগে না পরে? কর্তারা এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত। ক্লাবের একটা বড় অংশ ডার্বির আগেই ফালোপাকে সরিয়ে আর্মান্দোকে কোচের আসনে বসাতে চান। আর সাবধানী একটা অংশের অভিমত, এই ডামাডোলের জেরে বড় ম্যাচে হেরে গেলে তা নিয়ে জলঘোলা হবে।
তাকে নিয়ে যখন ফালোপা এ দিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চিডি-মোগাদের কোচিং করাতে আসেন। গ্যালারিতে বসে স্বামীর কোচিং দেখেন স্ত্রী অ্যানা। টানা দেড়ঘণ্টা কোচিং করানোর পর স্ত্রীকে নিয়ে ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন। মাঝখানে সেই বৈঠকে অংশ নেন দেবব্রত সরকার। বৈঠকের শেষ দিকে তিনিই বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, সচিব কোনও কথা বলবেন না। পরে বৈঠক শেষ হলে দেবব্রতবাবুই অভূতপূর্ব ভাবে কোচকে তাঁবুর স্বয়ংক্রিয় গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গাড়িতে তুলে দেন। হঠাৎ কেন কোচকে গাড়িতে তুলে দিলেন? তা হলে কি কোচের বিদায়বেলা বিদায়বেলা ঘনিয়ে এল? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে লাল-হলুদ কর্তাটি যদিও বলেন, “কোনও কোনও দিন কোচকে গাড়িতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা হয়। আজ যে রকম হল।”
আর ফালোপা? কোচ বদল নিয়ে তাঁর মন্তব্য আরও ইঙ্গিতপূর্ণ। বলে গেলেন, “মঙ্গলবার সকালে অনুশীলনের পর ফুটবল সচিবের সঙ্গে বৈঠক। আর ক্লাব আর কোচের সম্পর্ক তো প্রেমিক-প্রেমিকার মত। ঘোরা, সিনেমা দেখার পরও তো অনেক সময় বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ক্লাব যদি আমাকে রাখতে না চায় চতা হলে সরে যেতে হবে। আবার আমারও যদি ক্লাবের চুক্তি পছন্দ না হয় তখন আমি সরে যেতেই পারি। এটাই তো পেশাদারিত্ব।”
এই আবহে ময়দান জুড়ে তাই এখন একটাই প্রশ্ন, ডার্বির আগে লাল-হলুদ কোচের আসন কার দখলে থাকবে। মার্কোস ফালোপা না আর্মান্দো কোলাসো?





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.