‘প্রিন্টার মিটার’ আছে, তবু বিল মেলে না ট্যাক্সির
বিকাশ ভবন থেকে ট্যাক্সিতে ধর্মতলা এসেছিলেন এক বহুজাতিক সংস্থার কর্মী কমল রায়। ভাড়া দিতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বচসা বাধল ট্যাক্সি-চালকের। কমলবাবুর অভিযোগ, তিনি ভাড়ার বিল চেয়েছিলেন। কিন্তু চালক তাঁকে সাফ জানান, বিল মিলবে না।
এমন ঘটনা নতুন নয়। যাত্রীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, ভাড়ার বিল চাইলেও ট্যাক্সির ‘প্রিন্টার মিটার’ থেকে তা মেলে না। বছরখানেক আগেই রাজ্য পরিবহণ দফতর ট্যাক্সির নতুন ভাড়া চালুর সঙ্গে মিটারগুলিকেও ‘ক্যালিব্রেশন’ করিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিল। যাতে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার সঙ্গে মিটারের ভাড়ার সামঞ্জস্য প্রিন্টার থেকে বেরোনো বিল দেখে বোঝা যায়। যাত্রীদের অভিযোগ, নির্দেশই সার। ট্যাক্সিচালকদের কোনও না কোনও যুক্তি থাকেই। কেউ জানান, প্রিন্টারে কালি-কাগজ নেই। কেউ আবার জানান, নতুন মিটার এখনও আসেনি।
ফলে চালকেরা যে ছাপা তালিকা দেখান, সেটা অনুযায়ীই ভাড়া দিতে হয়। মাত্র ১০ টাকায় বাজার থেকে ওই তালিকা পাওয়া যায় বলে দাবি খোদ ট্যাক্সি-চালকদের। এতে বেশি ভোগান্তি হয় বিদেশী ও অন্য রাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের। সমর রায় নামে এক ব্যক্তি বলেন, “চালকেরা যে ভাড়ার তালিকা দেখান তার হিসেব বোঝা যায় না। ছাপা ভাড়ার বিল পাওয়া গেলে তা-ও বোঝা যেত।” যাত্রীদের অভিযোগ, তালিকার সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার মিল আছে কি না, তা-ও বোঝা সম্ভব হয় না।
প্রশ্ন উঠেছে, বাসে-ট্রেনে টিকিট পাওয়া যায়। প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করলেও বিল মেলে। তা হলে ট্যাক্সিতে কেন বিল মিলবে না? কারও বক্তব্য, অনেক অফিসেই যাতায়াতের খরচ পেতে গাড়ি বা ট্যাক্সির বিল দেখাতে হয়। সে ক্ষেত্রে ট্যাক্সির বিল না দেখালে অফিস থেকে সেই সুবিধেও মেলে না।
বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল গুহও বলেন, “সব জিনিস কিনলেই তার রসিদ মেলে। কাজেই যাত্রীদের দাবিকে আমরা সমর্থন করি।” কিন্তু ২০১২-র ১ নভেম্বর রাজ্যে নতুন ট্যাক্সি ভাড়া চালু হলেও এখনও পর্যন্ত যাত্রীরা কেন বিল পাচ্ছেন না? বিমলবাবুর দাবি, “মিটার ক্যালিব্রেশন করানোর নির্দেশটি এত দিন মৌখিক ছিল। গত ২৪ সেপ্টেম্বর পরিবহণ দফতর এ বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, তিন মাসের মধ্যে মিটার ক্যালিব্রেশন করানো না হলে ট্যাক্সির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না।” ট্যাক্সি-চালক ও মালিকদের একাংশের মতে, রাজ্যের তরফে লিখিত নির্দেশিকা না থাকায় কেউই ক্যালিব্রেশনের বিষয়ে জোর দেননি। এই প্রক্রিয়ায় পাবলিক ভেহিক্লস দফতরেরও (পিভিডি) একটি ভূমিকা আছে। পরিবহণ দফতরের তরফে লিখিত নির্দেশ না থাকার জন্য পিভিডি কর্তৃপক্ষও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন না।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, সব অফিসকে এক ছাদের তলায় আনা, নতুন উপ-আঞ্চলিক পরিবহণ কার্যালয় তৈরি করা প্রভৃতি কাজে ক্যালিব্রেশনের লিখিত নির্দেশ দিতে দেরি হয়েছে। এ বার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিমলবাবু জানান, ছাপানো বিলে জানা যাবে, গাড়ি কত কিলোমিটার চলেছে, তার দরুণ কত ভাড়া উঠেছে, অপেক্ষা করার জন্য কত ভাড়া হয়েছে। পাশাপাশি, মালিকের ফোন নম্বর, সংগঠনের ফোন নম্বরও থাকে ওই বিলে। ফলে কোনও যাত্রী ট্যাক্সিতে কিছু ফেলে গেলে সহজেই তিনি ট্যাক্সির সন্ধান পেতে পারবেন। বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের খবর, ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে মিটারের ক্যালিব্রেশন করানো শুরু হয়েছে। ৩৫ হাজার ট্যাক্সির মধ্যে পুজোর আগে পর্যন্ত প্রায় ৮০০ ট্যাক্সির মিটার সংস্কারের কাজ হয়েছে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.