|
|
|
|
এক হেক্টরে পরীক্ষামূলক চাষ |
কালো নুনিয়ার জায়গা নিতে তৈরি পুষা |
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য • ময়নাগুড়ি |
কালো নুনিয়া চালের গরম ভাতের সুবাস ভুলতে বসেছে বাঙালি। উপায় কী! অনেক চেষ্টা করেও উত্তরের নিজস্ব প্রজাতির ওই ধানের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। যতটুকু হচ্ছে আগের মতো গন্ধ ও স্বাদ কোনটাই মিলছে না। মন খারাপ করা ভোজন রসিকদের জন্য তাই কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে কালো নুনিয়ার বিকল্প ধানের পরীক্ষা মূলক চাষ শুরু করেছে শিলিগুড়ি মহকুমা কৃষি দফতর। ইতিমধ্যে ধানের ফলন শুরু হয়েছে। কয়েক দিনে তা কেটে তোলা হবে। শিলিগুড়ি মহকুমা কৃষি আধিকারিক তুষারকান্তি ভূষণ বলেন, “নানা কারণে কালো নুনিয়ার সুগন্ধ কমছে। স্বাদেও পাল্টে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের এই নিজস্ব প্রজাতির ধানের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে পরামর্শের পর কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি সুগন্ধি উচ্চ ফলনশীল প্রজাতির ধানের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে এই উদ্যোগ প্রথম। কালো নুনিয়ার বিকল্প হিসেবে উচ্চ ফলনশীল ওই বিশেষ প্রজাতির ধানের বীজ দিল্লি থেকে আনা হয়েছে। প্রজাতিটির চলতি নাম ‘পুষা’ প্রজাতিগত পরিচয় ‘পিএস-৫’। কৃষিবিদের নজরদারিতে প্রাথমিক ভাবে ফাঁসিদেওয়া ও খড়িবাড়ি ব্লকে জ্যোতিনগর, ফোটামারি, ময়নাগুড়ির এক হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলন এসেছে। কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ধান গবেষক সাজিদ আলি জানান, পুষা কালো নুনিয়ার তুলনায় বেশি চিকন ও লম্বা। বিরিয়ানি তৈরির জন্য যে চাল সাধারণত ব্যবহার করা হয়, অনেকটা সেই ধরনের। সুগন্ধির গুণেও অনেক এগিয়ে। শুধু তাই নয় মাত্র ১২০ দিনে ধান উৎপাদন করা সম্ভব। যেখানে কালো নুনিয়ার সময় নেয় ১৫০ দিন। রোগ ব্যাধির প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। কৃষি কর্তারা জানান, এক বিঘেয় চাষ করে ৬ মন কালো নুনিয়া ধান পাওয়া যায়। সেখানে পুষা মিলবে প্রায় ১৫ মন। কম উৎপাদনের জন্য কালো নুনিয়া ধান চাষে আগ্রহ তেমন দেখা যায় না। তাই পরীক্ষামূলক চাষ সফল হলে চাষিরা পুষা ধান চাষে অনেক বেশি উৎসাহ দেখাবেন।
ফাঁসিদেওয়া ও খড়িবাড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ জানান, কম উৎপাদনের জন্য চাষিরা সহজে কালো নুনিয়া চাষ করতে রাজি হয় না। পুষার ক্ষেত্রে ওই সমস্যা থাকবে না। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, সুগন্ধি পুষার চাষে এগিয়ে হরিয়ানা, পঞ্জাব। উত্তরবঙ্গে এই প্রজাতি চাষের উদ্যোগ এই প্রথম। পরীক্ষা সফল হলে আগামী বছর থেকে ব্যাপক ভাবে চাষ হবে। |
|
|
|
|
|