শিলিগুড়ির বাজারে আলুর আকাল, ক্ষোভ
ভাইফোঁটার প্রাক্কালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের খাসতালুক শিলিগুড়িতে আলুর আকাল দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের আর পাঁচটা জেলায় জেলাশাসকরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আলু যাতে সরকারি দরে মেলে সে জন্য নিজেরা আসরে নেমেছেন। অথচ দার্জিলিং জেলায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ছবি। বিধান মার্কেট, রথখোলা, সুভাষপল্লি, হায়দরপাড়া, চম্পাসারি প্রায় সর্বত্রই জ্যোতি আলু উধাও। বাজারে রয়েছে শুধু নতুন আলু। যার দাম ৩০ টাকা কেজি। ভাইফোঁটার আগের দিন সেই নতুন আলু চড়া দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। খুচরো আলু ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, দু-চার দিন পরে পরিস্থিতি ‘ঠান্ডা’ হলে ফের জ্যোতি আলু রাখা হবে। আপাতত অলিখিত বোঝাপড়ার মাধ্যমে বাজারে অল্প পরিমাণ পচা-নষ্ট জ্যোতি আলু রাখছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। শিলিগুড়ির বেশির ভাগ বাজারে সব্জি বিক্রেতারা নতুন আলু বিক্রি করছেন।
জ্যোতি, চন্দ্রমুখী নেই। আছে নতুন আলু। ৩০ টাকা কেজি দরে তা-ই
কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে সোমবার
ছবিটি তুলেছেন কিশোর সাহা।
কেন জেলা প্রশাসন সাধারণ বাসিন্দাদের হয়রানি দূর করতে উদ্যোগী হচ্ছে না? জেলাশাসক পুনীত যাদব দাবি করেছেন, শিলিগুড়ির বাজারে যে আলু উধাও হয়ে গিয়েছে তা তিনি জানেই না। তাঁর বক্তব্য, “ওই সমস্যা নিয়ে কেউ আমাকে কিছু জানাননি। কৃষি বিপণন দফতর থেকে অনেক জায়গায় আলু সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে শিলিগুড়িতে সেই ব্যবস্থা করার কথা ভাবা হবে। বিষয়টি কৃষি বিপণন দফতরকে জানানো হবে।”
এই ঘটনায় শিলিগুড়ি জুড়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। কেন, ভাইফোঁটার প্রাক্কালে শিলিগুড়ির বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি হওয়া সত্ত্বেও কেন প্রশাসন আসরে নামছে না তা নিয়েই বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ৩০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হওয়ায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন প্রধান দেবব্রত মিত্র বাজারে দাঁড়িয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “জ্যোতি আলু উধাও হয়ে গেল? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই আমরা ৩০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছি।” রুবি দত্ত, অমিত কুমার মৈত্রের মতো ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রশাসনের উদাসীনতায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকার ১৩ টাকা দর বেঁধে দিল। অথচ সেই আলু ব্যবসায়ীরা উধাও করে দিয়েছেন। অন্য জেলায় জেলাশাসকরা ১৩ টাকা দরে আলু বিক্রির জন্য স্টল খুলছেন। আমাদের জেলাশাসক কী করছেন? তাঁকে বুঝতে হবে, ৩০ টাকা কেজি দরে আলু কেনা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়।”
প্রদীপ পাল, জীবন সাহাদের মতো বিধান মার্কেট সবজি বিক্রেতারা জানান। পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলু মিলছে না। তাই তারাও বিক্রি করতে পারছেন না। ক্ষুদিরামপল্লি সব্জি বাজারের সম্পাদক সুবল সাহা বলেন, “নিয়ন্ত্রিত বাজারে জ্যোতি আলু নেই। কমিশন এজেন্টরা পরিবহণ খরচ দিয়ে আলু আনতে যে দাম পড়চে তাতে লাভ করতে পারছে না বলে জানান। তাই তাঁরা আলু আনতে পারছেন না। তাতে বাজারের খুচরো ব্যবসায়ীরাও অন্য আলু বিক্রি করছেন।” শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল কমিশন এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা তপন কুমার সাহা জানান, বর্ধমান থেকে সাড়ে সাড়ে ৮ টাকা কেজিতে আলু কেনার ব্যবস্থা না হলে এখানকার পাইকার ব্যবসায়ীরা জ্যোতি আলু আনতে পারবেন না। সরকার সে ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.