পেশায় আইনজীবী অনিন্দ্যবাবু তাই জোড়াপাতা প্রতীকে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। এই দুই গোঁজ প্রার্থীর কাঁটা নিয়ে অবশ্য ভাবিত নন রাজা মশাইয়ের উত্তরসূরি। কারণ, অরণ্য শহরে তৃণমূলের দলীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক যে তিনিই তা বিলক্ষণ বোঝাতে পেরেছেন দুর্গেশবাবু। দলের নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটিতে থাকা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদাকে রীতিমতো কোণঠাসা করে দিয়ে প্রার্থী তালিকায় কেবলই দুর্গেশবাবুর স্নেহধন্যদের আধিপত্য। মন্ত্রী সুকুমারবাবু নিজের মুখরক্ষার জন্য তাঁর দলীয় আপ্তসহায়ক দশরথ হেমব্রমকে প্রার্থী করার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অনেক তদ্বির করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয় নি। মন্ত্রী মুখে অবশ্য বলছেন, “প্রার্থী হিসেবে ১৮টি ওয়ার্ডে অনেকের নামই প্রস্তাব আকারে এসেছিল। সর্বসম্মত ভাবে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। নেত্রী-ই শেষকথা। দলে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভের জায়গা নেই।” ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায় টানা ১৫ বছরের পুরপিতা। এবার প্রশান্তবাবু ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী। পেশায় আইনজীবী প্রশান্তবাবু সোমবার আদালতের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর কথায়, “১৯৮২ সাল থেকে টানা ৩১ বছর ঝাড়গ্রাম পুরবোর্ডের ক্ষমতায় থেকেও বামেরা ন্যূনতম পরিষেবা দিতে পারে নি। ফলে পুরবাসীর ক্ষোভের আঁচে এবার ওরা পুড়ে খাক হয়ে যাবে।” প্রশান্তবাবু মানছেন, “পুরবাসীর ক্ষোভের আঁচ এতটাই তীব্র যে, এখানে আমরা প্রার্থীরা নিমিত্ত। দলের প্রতীক-ই শেষকথা।” প্রশান্তবাবু এ কথা বললেও বাস্তব ছবিটা কিন্তু অন্য। ইতিমধ্যেই ‘ঝাড়গ্রামের ত্রাতা’ দুর্গেশবাবুকে সপার্ষদ জেতানোর আবেদন জানাচ্ছেন তাঁর অনুগামীরা। বিনয়ী দুর্গেশবাবু করজোড়ে আবার বলছেন, “আমার পূর্ব পুরুষেরা ঝাড়গ্রামের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির মানোন্নয়নে এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। মানুষ সে কথা মনে রেখেছেন। ফলে আমার জেতাটা বড় কথা নয়। পুরবোর্ডের ক্ষমতায় আমরা (তৃণমূল) এলে অরণ্যশহরের খোলনলচে বদলে দেব। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”
ক্ষাত্রতেজের শক্তি কতটা, সেটাই এখন দেখার! |