ভাইয়ের পাতে আজ চমক পাতুরি সন্দেশ
ভাইফোঁটার সঙ্গে মিষ্টির সম্পর্ক চিরকালীন। বছরের এই বিশেষ দিনে ভাইদের মিষ্টিমুখ করানোর জন্যই সারা বছর অপেক্ষা করেন বোনেরা। দুর্গাপুর শহরে ভাইফোঁটার আগের দিনেই মিষ্টির দোকানগুলোতে উপচে পড়ল ভিড়।
মিষ্টি ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার দুর্গাপুরে ভাইফোঁটার বিশেষ মিষ্টি হল পাতুরি সন্দেশ। কলার পাতায় মোড়া এই মিষ্টি এই বারের ভাইফোঁটায় ক্রেতাদের অন্যতম প্রথম পছন্দ। মিস্টান্ন ব্যবসায়ী ননীগোপাল সাহা বলেন, এই মিষ্টি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনই এর স্বাদও খুব ভাল।” দুর্গাপুরের বেনাচিতির এক মিষ্টি ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, মিষ্টির পাতুরির সঙ্গেই বাজারে দেদার বিকোচ্ছে কাজু, কিশমিশ, পেস্তা, শুকনো ফল দিয়ে তৈরি ফ্রুট স্লাইস। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক বছরের মতো এ বারও মিষ্টি ব্যবসায়ীদের প্রধান ভরসা যন্ত্রে গড়া মিষ্টি। রসগোল্লা, কালাকাঁদ বা রস মালাইয়ের মতো মিষ্টি কারিগররাই বানান। কিন্তু শুকনো মিষ্টিগুলি তৈরি হয় যন্ত্রে। দুর্গাপুর শহরে অবশ্য যন্ত্রে গড়া মিষ্টির কারখানা নেই। তবে বর্ধমান, রানিগঞ্জ প্রভৃতি জায়গায় এই কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখান থেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী এই মিষ্টি সরবরাহ করা হয় দুর্গাপুরের বাজারে।
দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারে একটি দোকানে বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।
সিটি সেন্টারের কাছের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী শুভঙ্কর দত্ত জানান, অন্যান্য মিস্টির সঙ্গে ‘ভাইফোঁটা’ লেখা মিষ্টির বিক্রিও ভাল। দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের এক মিষ্টির দোকানের কর্মী বর্তন সাউ বলেন, “এ বার শুকনো মিষ্টির চাহিদা একটু বেশি।” মিলছে চিনি ছাড়া মিষ্টিও।
নানা স্বাদের মিষ্টি পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। মিষ্টি কিনতে আসা চৈতন্য অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা অপূর্ব সেনগুপ্ত খুশি মনে বলেন, “নতুন ধরনের মিষ্টির খোঁজে এসেছিলাম। পেয়ে গিয়েছি।”
তবে বর্ধমান শহরের ছবিটা অবশ্য একটু অন্য রকম। এখানকার মিষ্টি ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে সন্দেশ বা ছানার তৈরি মিষ্টির তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ল্যাংচা ও লাড্ডুই ভরসা। পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির বর্ধমান শাখার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন দাস কবুল বলেন,“কাঁচা মালের অভাবেই আমরা ক্রেতাদের চাহিদা মতো মিষ্টি তৈরি করতে পারিনি। ফলে এ বছর বাজারে নতুন কোনও মিষ্টি আনা যায়নি।” বিসি রোড, বিবি ঘোষ রোড, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়, বোরহাট ইত্যাদি এলাকায় মিষ্টির দোকানগুলিতে ভাইফোঁটার আগের দিন সকাল থেকেই ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও পছন্দের মিষ্টি না পেয়ে অনেককে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়। স্থানীয় নতুনগঞ্জের বাসিন্দা দেবাশিস চৌধুরীর আক্ষেপ, “পছন্দের মিষ্টি কিনতে পারলাম না। এখন অতিথিদের পাতে কী দেব তাই ভাবছি!” কাঞ্চন নগরের বাসিন্দা পতিতপাবন দত্তের প্রশ্ন, “বাজারে সন্দেশ নেই। লাড্ডু, রসগোল্লা দিয়ে কী ভাইফোঁটার থালা সাজানো যায়?”
বর্ধমানের দুই বিখ্যাত মিষ্টি সীতাভোগ ও মিহিদানার প্রস্তুতকারক প্রয়াত ভৈরবচন্দ্র নাগের নাতি অনিরুদ্ধ নাগের অবশ্য দাবি, “ছানা ও দুধের অভাবে অন্যান্য মিষ্টি মার খেলেও সীতাভোগ আর মিহিদানা এখনও বাজার ধরে রেখেছে। এই দুটি মিষ্টির কল্যাণে মনে হচ্ছে, বাজার ঠিক থাকবে।”
পসরা সাজিয়ে বিক্রেতা। লাইন দিয়েছেন ক্রেতারা। কাটোয়া ও বর্ধমানে।
কবে কালনা ও কাটোয়াতে মিষ্টির নতুনত্ব চোখে পড়েছে। কালনার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শহরের বড় মিষ্টির দোকানগুলিতে মিলছে বাটার স্কচ, কোক বরফি, ক্ষীর মাখানি, ক্ষীর রোল, ম্যাঙ্গো স্পাইস, কোক সন্দেশ, বাটার রোল, পেস্তা রোল, তোতা বল, ক্রিম রোলের মতো মিষ্টি। এগুলির দাম ৬ টাকা থেকে ১৪ টাকার মধ্যে। রয়েছে জলভরা সন্দেশ। যার দাম ১২ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া প্রচলিত মিষ্টির মধ্যে রয়েছে ক্ষীরের পান্তুয়া, জাফরান পান্তুয়া, মাখা সন্দেশ কাঁচাগোল্লা, কেশর রসগোল্লা, টু ইন ওয়ান রসগোল্লা ও আমের রসগোল্লা। রয়েছে আনারস, কমলালেবু, কলা, আপেল, কিশমিশ দিয়ে তৈরি মোরব্বা।
কাটোয়ার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ বার ভাইফোঁটায় শুকনো মিষ্টির কদর বেশি। চিনির পরিমাণ কম দিয়ে তৈরি মিষ্টিরও এ বার ভাল চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও চাহিদা রয়েছে নানা রকম সন্দেশ, বরফি, ক্ষীর পটল, ক্ষীর পুলি, গোলাপ ভোগ ও গোলাপ জামের।

তৃণমূলের ফেক্স ছেঁড়ার নালিশ
রাতের অন্ধকারে কাটোয়া শহরের পাঁচটি জায়গায় তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতাদের ফ্লেক্স ও কাট আউট ছেঁড়ার অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৭ নভেম্বর কাটোয়া পুরসভার উপ পুরপ্রধান অমর রাম, প্রাক্তন কাউন্সিলর শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, জনি চৌধুরীদের কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা। ৯ নভেম্বর কাটোয়া শহরের স্টেশন বাজার চৌরাস্তায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের জনসভাতেও থাকার কথা তাঁদের। সে কারণে, অমরবাবুরা শহর জুড়ে মমতা-সহ দলের নেতাদের ফ্লেক্স টাঙিয়েছেন। তৃণমূলের কাটোয়া শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের অভিযোগ, “কাটোয়া শহরে তৃণমূলের শক্তি বাড়ছে কাটোয়া শহরে। তাই রাতের অন্ধকারে ফ্লেক্স ও কাট আউট ছিঁড়ে দিয়েছে কংগ্রেস। পতাকাও খুলে নিয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের কোনও ঘটনা আমার জানা নেই। দলের কেউ এ রকম কাজ করবেও না।” তৃণমূলের দাবি, এ ব্যাপারে কাটোয়া থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, তারা কোনও লিখিত অভিযোগ পায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.