আলু বিক্রি নিয়ে সমস্যা মেটাতে দু’টি হেল্পলাইন চালু করার কথা জানাল বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এই হেল্পলাইনে ফোন করে কোথাও আলুর অভাব রয়েছে, সে কথা জানানো যাবে। খবর পেয়েই প্রশাসনের আধিকারিকেরা সেই সংশ্লিষ্ট জায়গায় আলু পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বলে জানানো হয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “দরকার হলে জেলার সমস্ত থানা, পঞ্চায়েত দফতর, ব্লক অফিস থেকে আলু বিক্রি করা হবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে। অন্তত ২০০টি আলু বিক্রয় কেন্দ্র খুলতে জেলা কৃষি বিপণন দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি বিপণন আধিকারিক প্রিয়দর্শী সেন বলেন, “এই হেল্পলাইন দু’টি আমার অফিসেই থাকছে। এর নম্বর হল যথাক্রমে ০৩৪২-২৬৪৬৩৩৫ এবং ৯৮৩০০৭৬৭২৬। এই হেল্পলাইনে ফোন করে কোনও বাজারে আলু বিক্রি বা তার মান নিয়ে অভিযোগ থাকলেও সাধারণ মানুষ সে কথা জানাতে পারবেন। ”সোমবার জেলা হিমঘর মালিক ও আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের ভিন্ রাজ্যে আলু না পাঠাতে ফের এক দফা সতর্ক করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে তাতে তেমন কাজ যে হবে না, প্রশাসন সূত্রে তা কবুলও করা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “আমাদের এখানে প্রায় একশো হিমঘর রয়েছে। তাদের কত পরিমাণ আলু বোঝাই ট্রাক কোথায় যাচ্ছে তার হিসেব রাখতে বলা হয়েছে। প্রতিটি হিমঘরকে এই পরিসংখ্যান প্রতি দিন জানিয়ে দিতে হবে কৃষি বিপণন দফতরকে।” এই নজরদারিতে সামিল করা হয়েছে পুলিশকেও। জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগ অবশ্য প্রায় প্রতি দিনই বিভিন্ন বাজারে ঘুরে নজরদারি শুরু করেছে।
জেলাশাসক জানিয়েছেন অন্ডাল, আসানসোল-সহ জেলার শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে আলু সেখানকার বাজারে না মেলার কথা জানানো হয়েছে। এই এলাকাগুলিতে আলু পাঠানোও হয়েছে।
তবে বর্ধমান শহরের বাজারগুলিতে নিম্নমানের আলু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ক্রেতারা জানিয়েছেন, ১৩ টাকা দরে যে আলু বিক্রেতারা বিক্রি করছেন, তার মধ্যে কাটা, ফাটা ও পচা আলুরই বড় অংশে রয়েছে। প্রতিবাদ করলে বিক্রেতারা বলেছেন, ভাল, বাছাই করা আলু তাদের কাছেই রয়েছে। কিন্তু সেই আলু ১৩ টাকায় দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকগুলি বাজারের ক্রেতাদের সরসরি বলে দেওয়া হচ্ছে, আলু নেই।
জেলাশাসক বলেন, “এই ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে কম হলেও আসছে। এই ঘটনার দিকে নজর দিতে বলা হবে কৃষি বিপণন দফতর ও পুলিশকে। সরকার নির্ধারিত দামে খারাপ মানের আলু বিক্রি হতে দেওয়া হবে না।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “এই নিম্নমানের আলু যাতে বিক্রেতারা না বিক্রি করেন, সে দিকে নজরদারি করতে বলা হবে এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে।”
তবে জেলার আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বর্ধমানে নতুন আলু আসবে প্রায় ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। এ বার টানা বৃষ্টিতে এখনও আলু চাষ শুরুই করতে পারেননি চাষিরা। অনেকর খেতে ধান কাটা পর্যন্ত হয়নি। ফলে আলুর দাম এমনিই বাড়বে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। |