গোল না পাওয়ার আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে তাঁকে।
সঙ্গী স্ট্রাইকার মোগা গোল পাচ্ছেন, স্কোরলাইনে কিন্তু তাঁর নাম উঠছে না অনেক দিন। যেখানে যখন যাচ্ছেন, সবাই প্রশ্ন করছে, কি হল গোল পাচ্ছেন না কেন? আজ শুক্রবার কল্যাণীতে সালগাওকরের বিরুদ্ধে সেই প্রশ্নের জবাব দিতে মরিয়া এডে চিডি। ডেরেক পেরিরার দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকারের সাফ কথা, “এখন কথা বলার সময় নয়। গোল ছাড়া আর কিছু ভাবছি না। আমাকে গোল করতেই হবে।”
এএফসি কাপে চারটে ম্যাচ এবং আই লিগে তিনটে ম্যাচ খেলে ফেলল ইস্টবেঙ্গল। সাত ম্যাচে চিডি গোল পেয়েছেন মাত্র একটি। শিলংয়ে লাজং এফসির বিরুদ্ধে। সালগাওকর ম্যাচের আগে তাই নিজেই নিজেকে উদ্বুদ্ধ করছেন এই বলে যে, “খারাপ সময় সব ফুটবলারের জীবনেই আসে। সেই সময় থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসাটাই চ্যালেঞ্জ,” কথা বলার সময় বলেও দেন সে কথা।
কোচ-সহ লাল-হলুদ ফুটবলাররা প্রত্যেকেই অবশ্য গোলমেশিনের এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। উৎসাহও দিচ্ছেন। অনুশীলন ম্যাচে চিডি গোল করলেই সতীর্থরা উৎসাহ দিতে তাঁর পিঠও চাপড়ে দিচ্ছেন। ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক মেহতাব হোসেন অনুশীলনের পর বলছিলেন, “চিডির মতো তারকা স্ট্রাইকাররা হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠে। হয়তো সালগাওকরের বিরুদ্ধেই জ্বলে উঠবে। একটা গোল পেলেই দেখবেন ও আর থামছে না।” কোচ মার্কোস ফালোপাও মেহতাবের সঙ্গে একমত। “চিডি খারাপ খেলছে না। গোল পাচ্ছে না বলে এত ভাবারও কারণ নেই। একটা গোল পেয়ে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।” |
অধিনায়ক-স্ট্রাইকার আলোচনা। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে কি
সালগাওকর ম্যাচের স্ট্র্যাটেজি ঝালিয়ে নিচ্ছেন মেহতাব-মোগা? ছবি: উৎপল সরকার। |
চিডির পাশাপাশি ফালোপাকে চিন্তায় রাখছে ডেরেক পেরেরার রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজি। কলকাতায় পর পর দু’টি অ্যাওয়ে ম্যাচে মোহনবাগান এবং ইউনাইটেড স্পোর্টসের বিরুদ্ধে সালগাওকর নিজের ঘর বাঁচিয়ে পালটা আক্রমণে গেছে। বিপক্ষ যাতে গোল না পায় সে জন্য এমনভাবে রক্ষণের জাল বিছিয়েছে গোয়ার ক্লাব, যা টপকে গোল করা কঠিন। ডেরেকের রক্ষণ ভাঙতে ফালোপার স্ট্র্যাটেজি— উইং দিয়ে আক্রমণের ঝড় তোলা। এ দিন যুবভারতীতে অনুশীলনের পর দেখা গেল, রবার্ট-নওবাদের ধরে ধরে ফালোপা বুঝিয়ে দিচ্ছেন কী ভাবে বিপক্ষকে বোকা বানিয়ে সালগাওকরের জমাট রক্ষণ ভেঙে গোলের মুখ খুলতে হবে। “সালগাওকর খুব ভাল দল। ওদের ডিফেন্স খুব শক্তিশালী। তবে আমরাও ঘরের মাঠে তিন পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাব,” বলছিলেন লাল-হলুদ কোচ।
কার্ড সমস্যায় বেঙ্গালুরু ম্যাচে খেলতে পারেননি উগা ওপারা। সালগাওকর ম্যাচে তিনি অবশ্য দলে ফিরছেন। উগার সঙ্গে স্টপারে খেলতে পারেন গুরবিন্দর। তবে সৌমিক আর অর্ণব এখনও পুরো সুস্থ নন। অভিষেক দাসেরও চোট রয়েছে। অভিষেকের জায়গায় রাইট ব্যাকে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে নওবার। বাকি টিমে আর কোনও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গতবারের সেরা কোচ ডেরেকের স্ট্র্যাটেজি ভাঙতে ফালোপা যখন নতুন নতুন পরিকল্পনা কষে চলেছেন, তখন মোহনবাগান মাঠে ফুরফুরে মেজাজে পাওয়া গেল সালগাওকর কোচকে। র্যান্টিদের বিরুদ্ধে জয়ের পরই আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ হয়ে গেছে করণজিৎ, ফ্রান্সিসদের। তবু ইস্টবেঙ্গলকে বাড়তি সমীহ করছেন ডেরেক। চিডি-মোগাদের বিরুদ্ধে এক পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে গোয়ার ক্লাব। ডেরেকের স্ট্র্যাটেজি খুব সহজনিজের গোল সামলে, গোলের জন্য ঝাঁপাও।
অনুশীলনের পর ডেরেক বলেন, “আই লিগের দলগুলোর মধ্যে ইস্টবেঙ্গল সেরা শক্তি। ওদের শুধু প্রথম একাদশই নয়, রিজার্ভ বেঞ্চও শক্তিশালী। আমি নিজের দলের দুর্বলতা ও শক্তি জানি। সেটা বুঝেই স্ট্র্যাটেজি সাজাতে হচ্ছে।”
দেখার, দেওয়ালি শুরুর ঠিক আগে কোথায় আলো জ্বলেময়দানে না ভাস্কোতে। |
শুক্রবারে আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : সালগাওকর (কল্যাণী, ২-৩০) |