নয়াচরে ফের বাগড়া পরিবেশ মন্ত্রকের
য়াচরে প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ছাড়পত্র নিয়ে আবার প্রশ্ন তুলল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি। তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠী আগের বারের মতো এ বারেও কমিটির তোলা প্রশ্নগুলির জবাব দিয়েছে। কিন্তু এই বাগড়ায় প্রকল্পটি আরও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হল।
এর আগেও নয়াচরের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে পাঁচ দফা প্রশ্ন তুলেছিল পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ সংক্রান্ত কমিটি। আপত্তি তুলে বলা হয়, হুগলী নদীর মোহনার এই দ্বীপে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি হলে পরিবেশে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়ে পরিবেশবিদদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করেন। সেই কমিটি পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্টকে ধরে গত ২০ সেপ্টেম্বর বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে ছাড়পত্র চেয়ে জোরালো যুক্তি পেশ করে রাজ্য সরকার। আশা ছিল, এ বার ছাড়পত্র মিলবে। কিন্তু ফের দু’টি প্রশ্ন তুলে নয়াচরের প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি।
কী সেই উদ্বেগ? এক, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তৈরি হওয়া ছাই বা ফ্লাই অ্যাশ দ্বীপে জমা করা হলে তা পরিবেশকে দূষিত করবে। দুই, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে দ্রুত সাহায্য পৌঁছনো বা দুর্গতদের সরিয়ে আনা সমস্যা হবে। কারণ নয়াচরের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের কোনও সড়ক বা রেল যোগাযোগ নেই। কমিটির এই নতুন প্রশ্ন নিয়ে ফের রাজ্য সরকারের পরিবেশবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠী। আলোচনার ভিত্তিতে সোমবার ফের পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে জবাব পাঠানো হয়েছে।
পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে জানানো হয়েছে, নয়াচর দ্বীপে কোনও ভাবেই ছাই জমা করার পরিকল্পনা তাঁদের নেই। কেবল জরুরি পরিস্থিতিতে শুকনো ছাই এক টন মাপের বড় ব্যাগে ভর্তি করে দ্বীপে রাখা হবে, পরে যা সরিয়ে ফেলা হবে। কাজেই পরিবেশ দূষণের প্রশ্ন নেই। ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা জাতীয় স্তরের নামজাদা সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে দেখা হবে। পর্যালোচনায় যে সব ব্যবস্থা প্রণয়নের কথা উঠে আসবে, তা-ই করা হবে। বিশেষজ্ঞ কমিটিকে সন্তুষ্ট করতে এই রিপোর্ট পাঠানো হলেও কমিটি বার বার নতুন প্রশ্ন তোলায় ক্ষুব্ধ রাজ্য ও ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠী। তাদের যুক্তি, ২০১০ সালের এপ্রিলে ছাড়পত্রের জন্য প্রথম আবেদন করা হয়েছিল। তার পরে ৪২ মাস কেটে গেলেও ছাড়পত্র মেলেনি।
পর পর ১৫টি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কোনও আশঙ্কাই ঠিক নয়। ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠীর যুক্তি, নতুন যে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে, ওই সব সমীক্ষায় তার জবাবও রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ফের একই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সংস্থার চেয়ারম্যান, অনাবাসী শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই সব সমীক্ষাতেই ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। অগ্রগতি কিছুই হয়নি। তা-ও আমরা এই প্রকল্প রূপায়ণে বদ্ধপরিকর।” তাঁর ভরসা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিনিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি। তাদের আলোচ্যসূচিতে এই প্রকল্পটি চলে আসায় তারাই সুরাহা দিতে পারে। কারণ নয়াচরের এই বিদ্যুৎ প্রকল্প-সহ পাঁচটি বড় মাপের প্রকল্পকে দ্রুত ছাড়পত্র দিতে চাইছে মন্ত্রিসভার কমিটি। নভেম্বরের শুরুতে সেই কমিটির বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে রাজ্য ও ইউনিভার্সাল সাকসেস।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.