মুজফ্ফরনগরে ফের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, হত ৪
ফের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগর এলাকা। গতকাল রাতে ওই এলাকার দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে চার জন নিহত হয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে ওই এলাকায় গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে এখনও ঘরছাড়া বহু মানুষ। সেই মুজফ্ফরনগরেই ফের সংঘর্ষ হওয়া পুলিশের গাফিলতির ফল বলে মেনে নিয়েছেন ডিজি দেবরাজ নাগর।
পুলিশ জানিয়েছে, মুজফ্ফরনগরে বুধানা এলাকার মহম্মদপুরাইসিং ও হুসেইনপুর গ্রামের মধ্যে দূরত্ব এক কিলোমিটার। তবে দুই গ্রামের কৃষিজমি একেবারেই পাশাপাশি। গতকাল রাতে কয়েক জন রটিয়ে দেয় মহম্মদপুরাইসিং গ্রামের কয়েক জনের উপরে হামলা করার পরিকল্পনা করছেন হুসেইনপুরের বাসিন্দারা। তার পরেই সংঘর্ষ শুরু হয় দুই গ্রামে। পিটিয়ে মারা হয় আফরোজ, মেহেরবান ও আজমল নামে তিন যুবককে। নিহত হন এক মহিলাও। তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। শুরু হয়েছে আধাসেনার টহলও।
বুধানা থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পুলিশ। ধৃত ৮ জন। সেপ্টেম্বরের মতো এই সংঘর্ষও সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু ডিজি নাগর সাফ বলেছেন, “পুলিশের গাফিলতিতেই ফের সংঘর্ষে জড়ানোর সাহস পেয়েছে কিছু লোক। আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।”
সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষের দায় গোড়া থেকেই বিজেপির ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে রাজ্যের শাসক সমাজবাদী পার্টি। উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছেন কয়েক জন বিজেপি নেতা। গতকালের ঘটনার দায়ও ‘সাম্প্রদায়িক শক্তির’ উপরেই চাপাতে চেয়েছেন সমাজবাদী নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব। আজ একটি দলীয় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তি ফের গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকার তাদের শেষ করে দেবে।” তাঁর ছেলে মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদবের বক্তব্য, “ভোটের আগে কোনও কোনও শক্তি এই পরিস্থিতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারে। তা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সমাজবাদী পার্টির বিরুদ্ধে বিজেপির পাল্টা দাবি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের একতরফা নীতির জন্যই ওই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। আজ দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ বলেছেন, “যদি সেপ্টেম্বরেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হত তাহলে আর এই ঘটনা ঘটত না। উত্তরপ্রদেশ সরকারের এটা বোঝা উচিত।”
মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু ভোটের পুনর্বিন্যাসের কথা শোনা গিয়েছিল সেপ্টেম্বরেই। তখন ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, রাহুল ও সনিয়া গাঁধী। ভোটের কথা মাথায় রেখেই সরকার তথা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব মুজফ্ফরনগরে ছুটে গিয়েছেন বলেও তখন ধারণা হয়েছিল নানা শিবিরের। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাবে আরও বড় বিপদের আশঙ্কার কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। ফের গোলমালের খবরে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র অখিলেশ সিংহ যাদব সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
মুজফ্ফরনগরে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে নজরদারি চালাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। আজ প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, “রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে একটি নিরপেক্ষ দল পাঠাতে পারি আমরা। ত্রাণ শিবিরগুলি নিয়েও রাজ্য সরকার সত্য বলছে কি না সন্দেহ।”

রাহুলকে নোটিস
কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীকে নোটিস পাঠাল নির্বাচন কমিশন। মুজফ্ফরনগর গোষ্ঠী-সংঘর্ষের পিছনে রয়েছে বিজেপি রাজস্থানের চুরুতে এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে সম্প্রতি এমনটাই বলেছিলেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি আরও বলেছিলেন, “বিজেপি ঘৃণার রাজনীতি করে।” সামনেই রাজস্থানের ভোট। সেখানে দাঁড়িয়ে এ হেন মন্তব্য করায় রাহুলের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বিজেপি। তাতেই এই পদক্ষেপ।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.