প্রথম দফায় আমানতকারীদের কিছু কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে পুজোর আগেই। তার পরে সারদা কাণ্ডে গঠিত কমিশনের তহবিলে মাত্র ছ’কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, তহবিলের অবস্থা জানিয়ে মঙ্গলবারেই রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, সারদা কাণ্ডে গঠিত তহবিলে ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। তবে পুজোর আগে ওই তহবিলে মাত্র ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তহবিল থেকে প্রথম দফায় প্রায় এক লক্ষ পাঁচ হাজার আমানতকারীর টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। মহাকরণ সূত্রের খবর, কালীপুজোর আগেই আরও চার লক্ষ আমানতকারীর টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তালিকা যাচাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ না-হওয়ায় কালীপুজোর আগে তা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান মহাকরণের এক কর্তা।
সারদা গোষ্ঠীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হালহকিকত জানতে এবং তা কত দ্রুত বিক্রি করা যায়, তা নিয়ে বুধবার সরকারের সঙ্গে জরুরি বৈঠক হয় কমিশনের। সরকারের পক্ষে ওই বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, ভূমি কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। বৈঠকের পরে কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন জানান, সারদা সংস্থার ৬৪টি গাড়ি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সব গাড়ি কী অবস্থায় আছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “গাড়িগুলি নিলাম করার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। পরে জমি বা বাড়ি বিক্রির কাজ শুরু হবে।”
সারদা সংস্থার সম্পত্তি বেআইনি ভাবে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে সরকারের বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগেছে সিপিএম। শাসক দলেরই এক সাংসদ তাঁর দলের সঙ্গীদের নাম বলা সত্ত্বেও কেন আর কাউকে জেরা করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে তারা। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন বলেন, “আমরা বারবার অভিযোগ করছি। তবু সারদার সম্পত্তি হস্তান্তর হয়েই চলেছে। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা বিক্রি করেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া উচিত। কিন্তু রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে এখনও হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানায়নি। এর মধ্যে সারদার সম্পত্তি হস্তান্তর হয়েই চলেছে। কারা এ-সবের সঙ্গে জড়িত, সকলেই তো জানেন!” কোথায় কোথায় এমন হাতবদলের ঘটনা ঘটছে, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি সূর্যবাবু। তাঁর মন্তব্য, “যা খবর পাচ্ছি, বলছি। ভুল হলে তদন্তকারী বা সংশ্লিষ্ট কেউ অস্বীকার করুন না!”
মহাকরণ সূত্রের খবর, সারদা কাণ্ডে আমানতকারীদের নাম নথিভুক্ত করার দায়িত্ব পেয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থা। সেই সংস্থা ওই কাজের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা বিল পাঠায় কমিশনে। প্রথম দফায় ওই সংস্থাকে ২৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
|