‘গার্ড অব অনার’ দেবেন গোটা দলের সঙ্গে। ব্যস্, এই পর্যন্তই। এর বাইরে সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে বেশি মাতামাতি করতে রাজি নন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ডারেন স্যামি।
বলছেন, “একা সচিন কেন? ম্যাচ জিততে গেলে তো কুড়িটা উইকেট দরকার। কোহলি, ধবনরাও তো রয়েছে সেই তালিকায়।”
এ বারের ভারত সফরে ক্যারিবিয়ানদের থিম আবার ‘ওয়ান টিম, ওয়ান গোল’। কী সেই গোল? চন্দ্রপলদের অধিনায়ক উত্তরে বলছেন, “আরে আমরাও তো জিততে এসেছি! মাঠে সচিনদের এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়ব না।” বুধবার দক্ষিণ কলকাতার টিম হোটেলে স্যামি যখন সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলছেন, তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ সচিন তেন্ডুলকর লাহলির রঞ্জি ম্যাচে মুম্বইকে জিতিয়ে প্যাভিলিয়নে। ব্যাটে অপরাজিত ৭৯। ক্যারিবিয়ানদের মহড়া নেওয়ার আগে ছন্দে মুম্বইকরের ব্যাট। শুনে হাসছেন স্যামি। বলছেন, “ভারতে শেষ যে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম সেখানে সচিন শতরানের দোরগোড়া থেকে ফিরে গিয়েছিল। এ বার ওকে দু’টেস্টেই প্রথম বলে ফেরাতে চাই। পারলে দারুণ ব্যাপার হবে। আমরা তার জন্য তৈরি হচ্ছি।” সাংবাদিক সম্মেলন শেষে আলাদা করে ছুড়ে দেওয়া গেল প্রশ্নটা-- তা হলে তো আপনি ভারতে সবচেয়ে বড় খলনায়ক হয়ে যাবেন। জবাবে ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের রসিকতা, “আগের বার শতরানের সামনে সচিনের ক্যাচটা ধরার থেকেই তো আমি খলনায়ক। তখন আপনারা সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি দেখতে এসে আমাকে ভিলেন বানিয়েছিলেন। দলের স্বার্থে আপনাদের কাছে আবার ভিলেন হতে এসেছি।” |
অপারেশন তেন্ডুলকর
 যুদ্ধের প্রস্তুতি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
এর পরমুহূর্তেই অবশ্য সচিনের প্রতি শ্রদ্ধা ঝরছে স্যামির গলায়, “দারুণ মানুষ। ক্রিকেটের বড় শুভেচ্ছাদূত। লন্ডনে সুনামি পীড়িতদের চ্যারিটি ম্যাচে প্রথম আলাপ। সে দিন থেকেই আমি সচিনে মুগ্ধ।”
আর বিরাট, ধবনদের অ্যান্টিডোট? স্যামির উত্তর, “ওরা বেশ ভাল ফর্মে রয়েছে। সে কথা আমরা জানি। ওদের জন্য আমরা ভাল রকমের হোমওয়ার্ক করছি। মাঠে নেমে এ বার সেগুলো প্রয়োগ করতে হবে।” সঙ্গে নিজেদের রেকর্ড মনে করিয়ে দিয়ে হুঙ্কার, “ভুলে যাবেন না, আমরা কিন্তু পর পর ছ’টা টেস্ট জিতে ভারতে পা দিয়েছি।” প্রতিপক্ষ যদিও বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবোয়ে, তবুও ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক মনে করছেন সেই আত্মবিশ্বাসই ভারত সফরে ঊর্ধ্বগামী করে দেবে দলের পারফরম্যান্স গ্রাফ। |
স্যামির হুঙ্কার
“চন্দ্রপলদের অভিজ্ঞতা আর কেমার রোচ, শিলিংফোর্ডদের তারুণ্য।
এটাই ভারত সফরে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
আর ভুলে যাবেন না,
আমরা কিন্তু পর পর ছ’টা টেস্ট জিতে ভারতে পা দিয়েছি।” |
|
নারিন, ডোয়েন ব্রাভোরা নেই। তা সত্ত্বেও ক্যারিবিয়ানরা আশাবাদী ভারতে সচিনদের কোণঠাসা করা সম্ভব। স্যামুয়েলস, গেইলরা রয়েছেন। বলছেন শিবনারায়ণ চন্দ্রপলের কথাও। মুম্বইয়ে সচিনের দ্বিশত টেস্টের আসরে যিনি খেলবেন কেরিয়ারের ১৫০তম টেস্ট ম্যাচ। সেই চন্দ্রপলের অভিজ্ঞতা ভারত সফরে তাঁদের অন্যতম বড় হাতিয়ার বলে মনে করছে ক্যারিবিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক এরই সঙ্গে জানাচ্ছেন এই সফরে সচিন-ধবনদের জন্য তাঁর ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ বাঁ হাতি পেসার শেলডন কোটারেল।
দুপুরে সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাঠে ক্যারিবিয়ানদের পুরোদস্তুর অনুশীলনের সময় দেখা গেল চন্দ্রপলও যেন অধিনায়ককে কিছুটা স্বস্তি দিতে নেটে ঘণ্টাখানেক সময় কাটালেন একাগ্র মনে। বাংলাদেশ, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ানদের শেষ টেস্টে শতরান করেছেন। ভারতে আসার আগেই কাউন্টি ম্যাচে ডার্বিশায়ারের হয়েও পরপর তিন ম্যাচে অর্ধ শতরানের ইনিংস খেলে এসেছেন। ক্যারিবিয়ান থিঙ্কট্যাঙ্ক তাই গেইলের পর ভারতে সচিন-উৎসব ম্লান করতে তাকিয়ে রয়েছেন ওই চন্দ্রপলের ব্যাটের দিকেই।
তাঁদের অধিনায়কও যে বলছেন, “চন্দ্রপলদের অভিজ্ঞতা আর রোচ, শিলিংফোর্ডদের তারুণ্য। এটাই ভারত সফরে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।” |