১৪ নয়, ১৬ টাকা কেজি দরেই পুরুলিয়ায় জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে। রবিবার বাজার ঘুরে এমনটাই প্রত্যক্ষ করল টাস্ক ফোর্স। এ দিন পুরুলিয়া শহর ও আদ্রার সব্জি বাজার পরিদর্শন করেন পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। ঝালদায় পুরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজার পরিদর্শন করেছেন ঝালদার কংগ্রেসের পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। জেলা টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সবুজবরণ সরকার বলেন, “আলু একটু চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা দাম-বৃদ্ধির কিছু কারণ জানিয়েছেন। তার সত্যতা যাচাই করা হবে।” তিনি জানান, ব্লকে ব্লকেও টাস্ক ফোর্স পরিদর্শনে যাবে।
আলু, পেঁয়াজ থেকে শাক-সব্জি-- হেঁসেলের নৃত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই অগ্নিমূল্য। এক সপ্তাহ আগে আলুর দাম কেজি প্রতি ১৪ টাকার মধ্যে থাকলেও কয়েকদিন আগে দাম বেড়ে ১৬ টাকা হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্য সব্জির দামও। কেজিতে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৪০টাকা, টমেটো ৫০টাকা ও কুমড়ো ৩০ টাকায়। দু’দিন আগে রাজ্য সরকার কেজি প্রতি জ্যোতি আলুর দাম ১৪ টাকায় বেঁধে দেয়। কালোবাজারি না কি প্রকৃতই জোগানের অভাব, কী কারণে বাজার অগ্নিমূল্য তা অনুসন্ধান করতেই কর্তাদের পরিদর্শনের নির্দেশ দেন জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী। |
আদ্রার সব্জি বাজারে যান রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা, এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরা। পুরুলিয়া শহরে বাজার পরিদর্শন করেন পুরুলিয়ার (সদর) মহকুমাশাসক সৌমজিত্ দেবনাথ, ডিএসপি (ডিইবি) শেখ মহম্মদ আজিম ও কৃষি বিপনন দফতরের আধিকারিকরা। কয়েকটি আড়তেও তাঁরা যান। তবে দাম নিয়ন্ত্রণের দাওয়াই শোনা যায়নি কর্তাদের কাছে। রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক বলেন, “বাজার ঘুরে দেখলাম জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। টানা বৃষ্টিতে সব্জির ক্ষতি হয়েছে, পেঁয়াজেরও জোগান কম। তবে বিক্রেতারা যা দাম চাইছেন, তার যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখা হবে।” কয়েকটি মুদির দোকানেও তাঁরা যান। কোন বিক্রেতা কী জিনিসের কী দাম নিচ্ছেন, তা লিখে নেওয়া হয়।
পুরুলিয়া শহরের বাজারে গিয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা দেখেন জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা তাঁদের জানান, পাইকারি বিক্রেতারা তাঁদের ১৪ টাকা দরে আলু বিক্রি করছেন। সেখান থেকে দাগি আলু বাদ দিয়ে ক্রেতাদের তাঁরা ১৬ টাকার কমে বিক্রি করতে পারছেন না। পাইকারি আলু বিক্রেতারা টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের কাছে দাবি করেন, কোতুলপুর থেকে তাঁরা সাড়ে ১৩ টাকা কেজিতে আলু কিনে আনছেন। ফলে দাম কমাতে তাঁরাও অক্ষম। আদ্রার পাইকারি বিক্রেতারাও দাবি করেছেন, মেদিনীপুর, বর্ধমান থেকে আলু আমদানি করে কম দামে দেওয়া যাচ্ছে না। এক পাইকারি ব্যবসায়ীর মতে, “মজুতদাররা দাম চড়িয়ে দেওয়াতেই এই সমস্যা। দাম নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক সরকার।” প্রশাসন সূত্রের খবর, কিছু পাইকারি ব্যবসায়ীকে মালপত্র কেনার রশিদ নিয়ে কৃষি বিপণন দফতরে দেখা করতে বলা হয়েছে।
ঝালদায় কিছু সব্জির উত্পাদন হলেও রাঁচি, বোকারো ও হাওড়া থেকে ব্যবসায়ীরা এসে চাষিদের বেশি দাম দিয়ে তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বিক্রেতারা ঝালদার পুরপ্রধানের কাছে দাবি করেন। তিনি বলেন, “কমিটি গড়ে নজরদারি চালিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তবে কি সব্জির দামে রাশ পড়বে? অপেক্ষায় পুরুলিয়াবাসী। |