দুই পার্টি অফিসে অনুষ্ঠান দুই গোষ্ঠীর
জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ্য নিবার্চনের জের কাটতে না কাটতে পুরুলিয়ায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ বার উপলক্ষ্য বিজয়া সম্মিলনী। পুরুলিয়া ২ ব্লকের সদর বিবেকানন্দ নগরে (বোঙাবাড়ি) মাত্র পঞ্চাশ মিটারের ব্যবধানে তৃণমূলের দু’টি পার্টি অফিসে পরপর দু’দিন দু’টি বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে দলের দুই গোষ্ঠীর উদ্যোগে।
শুক্রবার বিবেকান্দ নগরে পুরুলিয়া-বরাকর রাস্তার পাশে দলীয় অফিসে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাঞ্চন দিগর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, দলের মহিলা সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। শনিবার ওই পার্টি অফিসেরই অদূরে দলের বিধানসভা কমিটির কাযার্লয়ে বিজয়া সম্মলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্থানীয় পুরুলিয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দ রাজোয়াড়। তাতে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার বিধায়ক কে পি সিংহ দেও, জেলা পরিষদের বন কর্মাধক্ষ্য হলধর মাহাতো, জেলা পরিষদ সদস্য পুষ্প বাউরি, ব্লকের যুব সভাপতি রাজপতি মাহাতো প্রমুখ। এই অফিসটি চলতি বছরের গোড়ায় উদ্বোধন করেছিলেন কে পি সিংহ দেও। দু’টি অনুষ্ঠানেই অবশ্য উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রফুল্ল মাহাতো। আবার দু’টি অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। দু’টি অনুষ্ঠানের জন্যই কার্ড ছাপানো হয়েছিল। যেহেতু বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান, তাই কর্মী-সমর্থকদের জন্য খিচুড়ি-মাংস সহযোগে দুপুরের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল দুই গোষ্ঠীই। দু’টি অনুষ্ঠানের কার্ডেই শান্তিরাম মাহাতো এবং কে পি সিংহ দেও উপস্থিত থাকবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু, দুই নেতা একটি করে অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাওয়ায় ফের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এল বলেই মনে করছেন দলের নিচুতলার কর্মীরা।
তাঁদের অনুষ্ঠানকেই দলের মূল অনুষ্ঠান বলে দাবি করে কাঞ্চন দিগর বলেন, “আমি দলের ব্লক সভাপতি। আমরা অনুষ্ঠানে দলের জেলা সভাপতি এসেছেন। শুধু এসেছেন নয়, দল যে এখানে আমার নেতৃত্বে পরিচালিত হবে, তা-ও জানিয়েছেন।” শনিবারের অনুষ্ঠানকে দলে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে উস্কানি দেওয়ার অনুষ্ঠান’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কাঞ্চনবাবু। অন্য দিকে, শনিবারের অনুষ্ঠানের আয়োজক আনন্দ রাজোয়াড়ের বক্তব্য, “আমাদের অনুষ্ঠানেই এই ব্লকের তৃণমূল কর্মীরা এসেছেন। আর ব্লক সভাপতির নেতৃত্বে আগের দিন যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে ছিলেন গত পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের দলীয় প্রার্থীদের অনেকের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়া লোকজন। ভোট পেরিয়ে এখন তাঁরা ও-দিকে ভিড়েছেন।” তাঁর আরও দাবি, আমাদের অনুষ্ঠানে ব্লকের সব পঞ্চায়েতের প্রধানেরাই উপস্থিত ছিলেন। আনন্দবাবুর কথায়, “আমি নিজে জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে কথা দিয়েছিলেন।” বিধায়ক কে পি সিংহ দেও বলেন, “জেলা সভাপতি কথা দিয়েছিলেন থাকবেন বলে। অথচ উনি আগের দিনের অনুষ্ঠানে থাকলেন, পরের দিন অনুপস্থিত থাকলেন! এটাকে কী বলা যায়?” ব্লক সভাপতি কাঞ্চনবাবুও দাবি করেছেন, তাঁরা কে পি সিংহদেওকে তাঁদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি আসেননি। জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “এটা কোনও গোষ্ঠী রাজনীতির ব্যাপার নয়। আমি শনিবার অন্য কাজে আটকে পড়ায় যেতে পারিনি।” আর পঞ্চায়েতে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধেই নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে যাঁরা দলের বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের শুক্রবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “ভিড়ে বিক্ষিপ্ত এমন কেউ কোথাও দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু এমন অভিযোগ ঠিক নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.