|
|
|
|
দিল্লিতে রাহুলের সভায় জল ঢেলে দিল উত্তপ্ত পটনা
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি |
প্রত্যাশা ছিল তাঁকে ‘শাহজাদা’ বলে আক্রমণের জবাব দেবেন তিনি! নরেন্দ্র মোদী শানিত ভাষায় আক্রমণ করে চলেছেন তাঁকে। অনেকে ভেবেছিলেন, রাহুল গাঁধী পাল্টা কটাক্ষে ছুড়ে দেবেন কোনও শক্তিশেল। কিন্তু পটনা বিস্ফোরণ আজ জল ঢেলে দিল দিল্লির মঙ্গলপুরীতে রাহুলের জনসভায়।
দিল্লিতে আজ প্রথম নির্বাচনী জনসভা করলেন রাহুল। অথচ দিল্লির উন্নয়ন ও রাজধানীতে বসবাসকারী প্রবাসীদের বার্তা দেওয়া ছাড়া বাকি সব বিষয়েই নীরব রইলেন তিনি। টুঁ শব্দটি করলেন না বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে।
স্বাভাবিক ভাবেই মোদীর পটনা সভার তুলনায় রাহুলের সভা আজ ধারে ও ভারে মার খেয়েছে। দীপাবলির আগে শেষ রবি-দুপুরে রাহুলের বক্তৃতা শুনতে ভিড় হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু, বক্তৃতায় আগ্রাসন না থাকায় সভা ক্রমশ জোলো হয়ে গিয়েছে। এমনকী, প্রশ্ন উঠেছে পরিবারতন্ত্র নিয়ে মোদীর আক্রমণের পরে রাহুল কি গুটিয়ে গেলেন?
প্রশ্নের জবাব দিতে মাঠে নেমেছেন কংগ্রেসের রাজনৈতিক ম্যানেজাররা। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, ঘৃণার রাজনীতি নিয়ে বিজেপি-বিরোধী তোপ থামানোর প্রশ্নই নেই। মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে বিজেপির রাজনীতি যে সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছেন রাহুল। |
|
পটনার সমাবেশে নরেন্দ্র মোদী। রবিবার পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
|
কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, কিন্তু আজ পটনা বিস্ফোরণের পরে সেই বক্তব্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কী বলতেন রাহুল? এই বিস্ফোরণের পিছনে হিন্দু চরমপন্থীদের হাত রয়েছে? তাই কৌশলে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে চুপ করে থেকেছেন তিনি। কংগ্রেসের আশা, ঘৃণার রাজনীতি যে দেশের ক্ষতি করছে তা পটনা বিস্ফোরণ ফের প্রমাণ করে দিল। এ বার উদার হিন্দুরা ওই রাজনীতির বিপদ বুঝবেন।
তা হলে আজ কী বললেন রাহুল?
বস্তুত লোকসভার ভোট প্রচারে নেমে গোড়া থেকেই স্রেফ উন্নয়নের বিষয় নিয়ে সওয়াল করছিলেন মোদী। আজ সেই উন্নয়নের বিতর্ক টেনে আনেন রাহুল।
তাঁর কথায়, “ওঁরা শুধু পরিকাঠামোর কথা বলেন। কিন্তু পরিকাঠামো নির্মাণ কাকে বলে তা দিল্লিতে কংগ্রেস সরকার করে দেখিয়েছে।” তাঁর দাবি, দিল্লি মেট্রো, বিমানবন্দর, ১৩০টি ফ্লাইওভার-সবই কংগ্রেস জমানায় হয়েছে। রাজধানীর এই উন্নয়ন মডেল অনুসরণ করছে অন্য শহরগুলি।
রাহুল এও বলেন, পরিকাঠামোর প্রসঙ্গ উঠলেই বিরোধীরা বলেন এনডিএ আমলে নাকি দেশে প্রচুর সড়ক নির্মাণ হয়েছে। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, ইউপিএ জমানায় তার তিন গুণ সড়ক তৈরি হয়েছে গোটা দেশে।
এরই পাশাপাশি আজ ‘গ্রাম ও গরিবের’ প্রসঙ্গে চলে গিয়েছেন রাহুল। বোঝাতে চেয়েছেন, ইউপিএ জমানায় গরিবদের ক্ষমতায়নে তাঁর মা সনিয়া গাঁধীর ভূমিকা কতটা ছিল।
তাঁর কথায়, “মা-কে একদিন প্রশ্ন করেছিলাম, বলতো কংগ্রেসি কারা? মা জবাব দিয়েছিলেন, “যাঁরা গরিব ও দুর্বলদের জন্য লড়াই করেন
তাঁরাই কংগ্রেসি।”
সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে মুখ না খুললেও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে কৌশলে অবশ্য কিছুটা জবাব দিতে চেয়েছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। পটনায় গিয়ে আজ বিহারের আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালিয়েছেন মোদী। আর পূর্বাঞ্চলের হিন্দিভাষীদের রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ জীবন কাটানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে ধন্যবাদ দিয়েছেন রাহুল।
তবে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে রাহুলের সভার উন্মাদনা যে আজ নেই সেটা বুঝতে পারছিলেন শীলা দীক্ষিত। রাহুল পৌঁছনোর আগেই অবশ্য একপ্রস্ত গোলমাল পাকান বিধায়ক জয় কিষণ। তাড়াহুড়োতে রাহুল ও রাজীব গাঁধীতে গুলিয়ে ফেলেন তিনি। বলে ফেলেন, “দেশের জন্য রাহুল গাঁধী প্রাণ দিয়েছেন।” সভার শেষ দিকে শীলাকে বলতে হয়, “ভাববেন না এটাই দিল্লিতে রাহুলের শেষ সভা। আরও সভা করবেন তিনি।” সেই সভা জমে কি না, দেখতে উৎসুক রাজধানী।
|
ছোট হলেও |
২৫ জুলাই, ২০০৮: বেঙ্গালুরুতে ৮টি বিস্ফোরণ। হত ২, জখম ২০।
২৬ জুলাই, ২০০৮: আমদাবাদে ১৭টি বিস্ফোরণ। হত ২৯, জখম ১১০।
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৮: দিল্লিতে দু’টি বিস্ফোরণ।
হত ১, জখম ১৭।
৭ ডিসেম্বর, ২০১০: বারাণসী বিস্ফোরণ।
হত ১, জখম ২০।
৭ জুলাই, ২০১৩: বুদ্ধগয়ায় ৩০ মিনিটে ন’টি বিস্ফোরণ। জখম ২। |
|
পুরনো খবর: রাহুলকে ব্যঙ্গ করায় মোদীকে তোপ |
|
|
|
|
|