খোলা তারের স্ফুলিঙ্গেই আগুন, দাবি ব্যবসায়ীদের
স্থায়ী পাইকারি সব্জি বাজারের গা ঘেঁষেই রয়েছে দু’টি ট্রান্সফর্মার। যার নীচে রয়েছে বৈদ্যুতিক তার-সহ নানা যন্ত্রাংশ। খোলা অবস্থায় থাকার কারণে প্রায়ই ট্রান্সফর্মার থেকে দেখা যায় বিদ্যুতের ঝলক। আড়তদারদের দাবি, শুক্রবার রাতে সে রকমই বিদ্যুতের ফুলকি থেকে লাগা আগুনেই পুড়ে গিয়েছে আটটি সব্জির আড়ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারুলিয়ায় এসটিকেকে রোডের পাশেই বহু বছর ধরে রয়েছে স্থায়ী পাইকারি সব্জি বাজার। কয়েক মাস আগে দু’দশকের বেশি পুরনো এই বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। মাস ছয়েক আগে কাজ শুরু হয়। ওই বাজারের ২৮ জন আড়তদারকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের একটি অস্থায়ী জায়গায়। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ এই অস্থায়ী বাজারেই আগুন লাগে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার কিছু আগে থেকেই পাশের ট্রান্সফর্মারের খোলা বৈদ্যুতিক তার থেকে স্ফুলিঙ্গ দেখা যাচ্ছিল। সেখান থেকেই আগুন লাগে অস্থায়ী বাজারের একটি লেপ-তোষকের দোকানে। ওই দোকানে তুলো-সহ বেশ কিছু দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। লেপ-তোষকের দোকান ছাড়াও পুড়ে যায় সব্জি আড়তদারদের আটটি দোকান। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। ঘণ্টা দেড়েক পরে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের কালনা শাখা। ভোরের দিকে আয়ত্তে আসে আগুন। কিন্তু দমকলের ইঞ্জিন ফিরে যাওয়ার পরেই ফের দেখা যায় আগুন। ফের খবর যায় দমকলে। এ বার ঘটনাস্থলে আসে দমকলের কাটোয়া শাখা। সকাল পর্যন্ত চেষ্টা চালানোর পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে অবশ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে আড়তদারদের কাছে মজুত থাকা সব্জি, নগদ অর্থ, হিসেবের খাতা।

ট্রান্সফর্মার সারাচ্ছেন কর্মীরা—নিজস্ব চিত্র।
আড়তদার সমীর সাহা বলেন, “আগুন লাগার সময় আড়তদারদের ঘরে ছিল আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি-সহ বেশ কিছু সব্জি। ছিল বেচাকেনার অর্থ ও হিসেবের খাতা। আগুন লাগার পর ব্যবসায়ীরা প্রায় কেউই কিছু বের করতে পারেনি।” তাঁর দাবি, আগুনে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সমীরবাবুর ক্ষোভ, “ট্রান্সফর্মার লাগোয়া খোলা বৈদ্যুতিক সামগ্রী ঢাকা দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরেই বলে আসছিলেন। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” একই অভিযোগ করেছেন ওই বাজারের আড়তদার তপন চক্রবর্তী, দেবু ঘোষ, বিলু সাহা, মধূসুদন দেবনাথ-সহ অনেকেরই।
শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় ও পূর্বস্থলী থানার আইসি রঞ্জন সিংহ। তাঁদের সামনে ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। বিধায়ক বলেন, “বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজারকে ট্রান্সফর্মারের সামনে খোলা অবস্থায় থাকা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ঢেকে দিতে বলা হয়েছে। সোমবার এই কাজ করার কথা।” তিনি আরও বলেন, চেষ্টা চলছে মূল সব্জি বাজার সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার। শনিবারই ক্ষতিগ্রস্ত আড়তদারেরা স্থানীয় পারুলিয়া বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজারের দফতরে অভিযোগ জমা দিতে যান। কিন্তু দফতরে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজার ছিলেন না। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হবে।
তবে ট্রান্সফর্মারের খুঁটি থেকে আগুন লাগার বিষয়টি মানতে রাজি নয় বিদ্যুৎ দফতরের কালনা শাখা। পাড়ুলিয়ার বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার চঞ্চল বিশ্বাস বলেন, “ট্রান্সফর্মার থেকে যে দূরত্বে আড়তের দোকানগুলি রয়েছে সেখানে আগুনের স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুন লাগার কথা নয়। দোকান ঘরগুলির পাশের দু’টি তারের সংযোগের স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুন ছড়াতে পারে। সঠিক তদন্ত ছাড়া এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.