বর্ধমানে সেচখালের পাড়ে মিলল নিখোঁজ ছাত্রীর দেহ
রাতে টিউশন নিয়ে নির্জন রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরতে হয় মেয়েকে। তাই প্রতি দিনই আনতে যেতেন মা। শুক্রবার প্রবল বৃষ্টির জন্য যেতে পারেননি। আর সে দিনই ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় মেয়ে। দু’রাত পরে তার বিবস্ত্র দেহ মিলল ডিভিসি-র সেচখালের পাড়ে।
বর্ধমানের নবাবহাটে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত তাঁরা এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “আপাতত খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা শুরু হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই ধর্ষণের ধারা যোগ করা হবে।”
ওই কিশোরীর বাড়ির লোকজন জানান, প্রতি সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে খাগড়াগড়ে টিউশন সেরে খালপাড়ের রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরত সে। সেচখালের আশপাশের কিছু বাসিন্দা তাঁদের কাছে দাবি করেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ একটি মেয়ের চিৎকার শুনেছিলেন তাঁরা। কাছে একটি সাবান কারখানা রয়েছে। তার কয়েক জন কর্মী কিছুক্ষণ পরে খালপাড়ে গিয়ে দেখেন, দ্রুত গতিতে পালাচ্ছে একটি মোটরবাইক। আর কিছু তাঁদের চোখে পড়েনি। বাড়ির লোকজন জানান, এ কথা শুনে সন্দেহ হয়, মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। শনিবার সকালে খালপাড়ে খোঁজাখুঁজি করে মেয়ের জুতো মেলায় সন্দেহ দৃঢ় হয়। দুপুরে থানায় অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করা হয়।
শনিবার বিকেলে খালের জল থেকে মেয়েটির সাইকেল উদ্ধার হয়। জলের ধারে মেলে বইয়ের ব্যাগ। কিছু পরে উল্টো দিকের পাড়ে মেয়েটির জামাকাপড় পাওয়া যায়। রবিবার সকালে ফের এক দফা খোঁজার পরেই খাল থেকে খানিকটা দূরে একটি ঝোপে কাত হয়ে পড়ে থাকা দেহ মেলে। তা হলুদ বস্তায় ঢাকা ছিল। কাছেই পড়ে ছিল মেয়েটির মোবাইল।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাড় থেকে কয়েক ফুট নীচে জলের ধারে কাদায় বেশ কিছু পায়ের ছাপ ও ধস্তাধস্তির চিহ্ন। পড়ে রয়েছে একটি মদের বোতল ও খালি গুটখার প্যাকেট। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মেয়েটির মুখে আঘাতের চিহ্ন ও পিঠে আঁচড়ের দাগ ছিল। তবে কী ভাবে তাকে খুন করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই সাবান কারখানার মালিক শেখ কলিমুদ্দিনের দাবি, “এখানে প্রায়ই ছেলে-মেয়েরা এসে দাঁড়িয়ে থাকে। তাই শুক্রবার রাতে চিৎকার শুনলেও প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। পরে গিয়ে কিছু দেখতে পাইনি।” কোনও মোটরবাইক দেখার কথা তিনি মানেননি।
মেয়েটির মা অভিযোগ করেন, টিউশনে যাওয়ার পথে নবাবহাট মোড় থেকে ১০৮ শিবমন্দির পর্যন্ত রাস্তায় মেয়েকে মাঝে-মধ্যে উত্ত্যক্ত করত কিছু যুবক। মাসখানেক আগে ওই এলাকার কয়েকজনকে তা জানালে তাঁরা ওই যুবকদের সতর্ক করেন। তার পরে উত্ত্যক্ত করা বন্ধ ছিল। ছাত্রীর মা জানান, শুক্রবার মেয়েকে আনতে যেতে না পেরে তিনি মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ফোনের লাইন পাননি।
এ দিন পুলিশ দেহ আনতে গেলে বাসিন্দারা কুকুর এনে তদন্তের দাবি জানান। যদিও পুলিশ তা মানেনি। পুলিশের দাবি, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় চিহ্ন ধুয়ে গিয়েছে। তাই কুকুর এনে লাভ হবে না। দেহ বর্ধমান মেডিক্যালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। কে বা কারা এই ঘটনায় জড়িত, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও অন্ধকারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.