রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া আলুর দাম নিয়ে প্রশাসন ও আলু ব্যবসায়ীদের চাপানউতোর চরমে উঠেছে জেলায়।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করতে গিয়ে শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন তিন জন আলু বিক্রেতা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম ফটিক মোল্লা, রতন হাজরা ও মুক্ত ঘোষ। বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ মোড় বাজার থেকে তাঁদের ধরা হয়। এ দিন সকালে জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে শহরের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালায়। তাঁদের সামনেই বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের বাজারে আলু বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে বচসা হয়। ক্রেতারা সরকার নির্ধারিত ১৪ টাকা কিলো দরে আলু চাইলেও বিক্রেতারা ১৮ টাকার কমে বিক্রি করতে চাইছিলেন না। পুলিশ বিক্রেতাদের সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করতে বললে, বিক্রেতারা জানায়, তাঁরা ১৪-১৫ টাকার কমে এক বস্তা আলু কিনতে পারছেন না। অশান্তি আটকাতে পুলিশ ওই তিন জন আলু বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে।
অন্য দিকে, এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানিয়েছেন, বর্ধমানের বিভিন্ন হিমঘর থেকে আলু বাইরে পাচারের চেষ্টা করছেন কিছু ব্যবসায়ী। শুক্রবার বর্ধমানের নবাবহাট মোড়ে একটি ট্রাককে আটক করে পুলিশ। ট্রাকে ৩০০ প্যাকেট আলু ছিল। ওই ট্রাকটিকে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু ট্রাকের চালকের কাছে আলু নিয়ে যাবার নির্দিষ্ট নথিপত্র না থাকায় তাদের ধরা হয়। বর্ধমানের সমস্ত হিমঘরের মালিক ও ম্যানেজারদের পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন দালাল বা ফড়েদের কাছে আলু বিক্রি না করেন। জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগকেও আলু পাচারের দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে তাঁরা এমন কয়েকটি হিমঘরের সন্ধান পেয়েছেন, যেখানে হিমঘর কর্তৃপক্ষ চাষিদের কাছ থেকে কম দামে আলু কিনে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। হাত বদলে বাড়ছে আলুর দামও। বর্ধিত দামের আলু রানিগঞ্জ, আসানসোল, কৃষ্ণনগর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ও ঝাড়খন্ডে পাঠানো হচ্ছে। এই হিমঘরগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগ।
তবে জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, আলু ভিন রাজ্যে বা এই রাজ্যের অন্যত্র পাঠানো যাবে না, এই মর্মে সরকারের কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি। তাই পুলিশি অভিযানে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে। আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমঘরগুলিতে প্রচুর আলু জমে রয়েছে। সেগুলিকে অন্যত্র না পাঠালে লোকসান দেখা দিতে পারে। |