শক্ত ঘাঁটিতে ভাঙনের আঁচ কংগ্রেসে।
কাটোয়ার উপ-পুরপ্রধান অমর রাম ও প্রাক্তন কাউন্সিলর শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৬ নভেম্বর তৃণমূল ভবনে গিয়ে ওই দু’জন ছাড়াও দাঁইহাটের এক কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে নাম লেখাবেন। ১১ নভেম্বর বিকেলে কাটোয়ার স্টেশন বাজার চৌরাস্তা মোড়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের যে জনসভা করার কথা, সেখানেও তাঁরা থাকবেন বলে খবর।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া পুর এলাকায় দলের কাজকর্ম দেখার দায়িত্ব পেয়েছেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অমরবাবু ও শমীন্দ্রনাথবাবু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। রবিবার অনুব্রতবাবুর দাবি, “কাটোয়া পুরসভার কাজে বিরক্ত হয়ে এবং তৃণমূলের উন্নয়নযজ্ঞে সামিল হতেই কংগ্রেস ছাড়ছেন ওঁরা। ৬ নভেম্বর ওই দুই নেতা-সহ কয়েক জন যোগ দেবেন। ১১ নভেম্বর প্রকাশ্য জনসভায় কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দিতে চলেছেন।” |
১৯৯৫ সালে কংগ্রেস বামেদের থেকে কাটোয়া পুরসভা দখল নেওয়ার সময় থেকেই উপ-পুরপ্রধানের পদে রয়েছেন অমরবাবু। তিনি আশির দশকে কাটোয়া লাগোয়া গোয়াই পঞ্চায়েতে সিপিএম সদস্য ছিলেন। ১৯৮৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে কাউন্সিলর হন। পাঁচ বারের এই কাউন্সিলর রবিবার বলেন, “দলে আমার কোনও গুরুত্ব নেই। অবজ্ঞা করে রাখা হয়েছিল। তাই দাদার হাত ছাড়তে বাধ্য হলাম। এই সিদ্ধান্ত বদলাবে না।” তাঁর দাবি, দাদার (রবীন্দ্রনাথবাবু) ‘হাতের পুতুল’ হতে পারবেন না বলেই তাঁকে পুরপ্রধান করতে চাওয়া হয়নি। তৃণমূলের একটি সূত্রের অবশ্য খবর, লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার আশ্বাসে দল ছাড়ছেন অমরবাবু।
অমরবাবুর সঙ্গে দল ছাড়ছেন রবীন্দ্রনাথবাবুর এক সময়ের ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিত, প্রাক্তন কাউন্সিলর শমীন্দ্রনাথবাবুও। তিনি ২০০৫ সালে কাটোয়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতেন। ২০১০ সালে পুরভোটে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। তিনি বলেন, “৩১ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ভেবেছিলাম আর রাজনীতি করব না। কিন্তু রাজনীতি ছেড়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি।” তাঁর দাবি, পুরসভার দুর্নীতির কারণেই দল ছেড়েছেন।
প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য বলেন, “আমরা দীর্ঘ সময় এক সঙ্গে চলেছি। ওঁরা কেন দল ছাড়ছেন বুঝতে পারছি না। দলে গুরুত্ব ছিল বলেই অমর দীর্ঘ সময় ধরে উপ-পুরপ্রধান পদে রয়েছেন।” পুরপ্রধান না হওয়া নিয়ে অমরবাবুর ক্ষোভ প্রসঙ্গে বিধায়কের বক্তব্য, “পুরসভায় মহিলা সদস্য বেশি হওয়ায় সরকারি নিয়মেই কোনও পুরুষ পুরপ্রধান হতে পারেন না।” |