|
|
|
|
|
|
|
খেলাধুলা... |
|
|
ট্যাক্সিওয়ালাকেও বদলে দিত সচিনের সেঞ্চুরি |
ওঁরা যে কোনও সওয়ারিকে ভাড়া নিতেন হাসিমুখে। তাঁর ব্যাট হাতে দাঁড়ানো মানে অমিতাভ বচ্চনের কাজ
ভুলে যাওয়া।
তাঁকে দেখতে পেলে কাছে যেতেন পণ্ডিত ভীমসেন যোশী। নন্দনকাননে সচিন রমেশ
তেন্ডুলকরের বিদায়ী
মুখড়া ৬ নভেম্বর।
তার আগে আকৈশোর তাঁকে বেড়ে উঠতে দেখার
স্মৃতিকথায় মুম্বইয়ের
সাংবাদিক পাপ্পু সন্সগিরি। শুনলেন প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত |
অজিত তেন্ডুলকর মাঝে মাঝেই আমার বাড়িতে আসে। আর যত বার আসে, তত বার আমার ড্রয়িং রুমে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসে।
অজিত যেখানে বসে তার পাশেই একটা কাঠের আলমারি আছে। একটা সময় দেখতাম, সচিন নিয়ে অজিত যখন কথা বলত, তখনই ওই আলমারির কাঠটা ছুঁয়ে থাকত।
টাচউড ব্যাপারটা জানেন তো? সে রকমই আর কী! সচিন নিয়ে আমরা দু’জন সমান কুসংস্করাচ্ছন্ন।
আলমারির কাঠ ছুঁয়ে আমরা দু’জনই বলতাম, সচিন যেন চিরকাল খেলে যায়। কোনও দিন যেন অবসর না নেয়। এর পর অজিত আমার বাড়িতে এলেও আলমারিটা ছুঁয়ে আর কথা বলবে না!
সচিন তেন্ডুলকরের অবসরের ঘোষণাটা ছিল আমার কাছে আচমকা বজ্রপাতের মতো।
এমন নয় যে ঘটনাটা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল। গত কয়েক মাস ধরেই তো সচিনের বিরুদ্ধে মিডিয়া-প্রতিক্রিয়ার ঝড় চলছিল। সবার জিজ্ঞাসা, আর তো পারফর্ম করতে পারছে না। আর কত দিন খেলে যাবে? এ বার না হয় অবসরটা নিয়েই ফেলুক। এ রকম ঝড়ের মধ্যে হঠাৎ বাজ পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যার উপর বাজটা পড়ে, সে-ই বুঝতে পারে তার তীব্রতা ঠিক কতটা।
আমার কাছে কেন, গোটা বিশ্বের কাছে সচিন ছিল ‘চেরাপুঞ্জি’। চব্বিশ বছর ধরে ওর রানের অঝোর বৃষ্টিকে বোঝাতে এর চেয়ে ভাল উপমা অন্তত আমার মাথায় আসছে না। ক্রিকেটের এই চেরাপুঞ্জি এ বার মানচিত্র থেকে মুছে যেতে চলেছে।
আপনাদের কলকাতার কথা জানি না, তবে আমাদের মুম্বইয়ে কিন্তু বর্ষাকাল শুরু আর শেষ হয় প্রচণ্ড ঝড়, প্রবল বজ্রপাতের মধ্যে। আর কী অদ্ভুত ব্যাপার দেখুন, সচিনের কেরিয়ারের শুরু আর শেষটাও ঠিক সে রকম।
সচিনের এই ‘বৃষ্টি’ ঝাপটা দিয়ে গিয়েছে ডন ব্র্যাডম্যান থেকে লতা মঙ্গেশকর, সানিয়া মির্জা থেকে উসেইন বোল্টকে।
লতাকে এক বার বলতে শুনেছিলাম যে সচিন যখনই ব্যাট করে, তখনই উনি নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান। একেবারে আক্ষরিক অর্থে।
এক বার অমিতাভ বচ্চনকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম, সচিন যখন ব্যাট করে তখন আপনি কী করেন?
উত্তরটা এখনও মনে আছে। অমিতাভ বলেছিলেন, আমি শ্যুটিং বন্ধ করে ওর খেলা দেখি! মজা করেই হয়তো বলেছিলেন, কিন্তু কথাটার পিছনে যে কী গভীর সচিন-প্রেম লুকিয়ে আছে, সেটুকু বুঝতে এতটুকু অসুবিধে হয় কি?
সচিন-ভক্তি নিয়ে বলতে গিয়ে আর একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল। |
|
ছবি: উৎপল সরকার। |
অনেক বছর আগেকার ঘটনা। কোনও একটা এয়ারপোর্টে সচিনের সঙ্গে ফ্লাইটের অপেক্ষায় বসে আছি। মুম্বই এয়ারপোর্টই হবে হয়তো। সচিন কোথাও একটা হেঁটে যাচ্ছিল।
হঠাৎ পিছন থেকে একটা গলা ভেসে এল, “ম্যায় আপকা বহুত বড়া ফ্যান হুঁ সচিন। জরা পিছে মুড়কে দেখো।”
কে ছিল জানেন? পণ্ডিত ভীমসেন জোশী! ভাবতে পারছেন! ওঁর মতো বিশ্বখ্যাত একজন তারকা একদম সাধারণ ফ্যানের মতো সচিনের পিছন পিছন এসেছেন! সচিন খুব বিব্রত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এই ঘটনাটা থেকেই বোঝা যায়, ‘সচিন’ নামটা আমাদের দেশে কত বড় আবেগ।
১৯৮৪-তে সাংবাদিক জীবন শুরু করার পরে সচিন নিয়ে কত শব্দ লিখেছি! সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোই তা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু এত বছর পরেও ভুলতে পারিনি আমার দেখা প্রথম সচিনকে এক মাথা ঝাঁকড়া চুলের দুবলা-পাতলা সেই ছেলেটাকে।
স্কুল ক্রিকেটে ওর খেলা কোনও দিন দেখতে পারিনি। কিন্তু ওই দিনগুলোতেও সচিনের কথা কম কিছু শুনিনি। মনে আছে ওকে যখন প্রথম মুম্বই রঞ্জি টিমে নেওয়া হয়, তখন ও বারো কি তেরো।
মাঠে নামেনি, শুধু রঞ্জি ব্যাপারটার একটা স্বাদ যাতে ও পায়, তাই সচিনকে টিমে রাখা। যত দূর মনে পড়ে, ম্যাচটা ছিল গুজরাতের বিরুদ্ধে।
এক দিন খেলার শেষে টিম হোটেলে গিয়েছিলাম প্লেয়ারদের সঙ্গে কথা বলতে। গিয়ে দেখি কেউ নেই। একা সচিন লবিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই তোমার সিনিয়ররা কোথায়?
লাজুক উত্তর এল, ওরা মন্দিরে গিয়েছেন। পরের দিন সিনিয়রদের জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা সত্যি সত্যিই মন্দিরে গিয়েছিলে নাকি? ওরা হাসতে হাসতে বলল, না না। আমরা একটু ডিস্কোয় গিয়েছিলাম। বাচ্চা ছেলেটাকে বলেছিলাম মন্দিরে যাচ্ছি। ভেবে দেখুন সচিন কতটা নিষ্পাপ ছিল! ও সত্যি সত্যিই ভেবে নিয়েছিল যে ওর টিমমেটরা মন্দিরে গিয়েছেন!
তার পর যখন সচিন ওর প্রথম রঞ্জি ম্যাচে নামল, আমি ওর খেলা প্রতিটা বলের হিসেব একটা কাগজে টুকে রেখেছিলাম। নিজের বার্থ সার্টিফিকেটের মতো বহু বছর সচিনের কেরিয়ারের বার্থ সার্টিফিকেটটা খুব যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম। এখন অবশ্য ওটা আর খুঁজে পাই না।
তখন একটা ম্যাচে সচিন ভাল কিছু শট খেললেই আমরা বাকি রাজ্যের সাংবাদিকদের জিজ্ঞেস করতাম, ক্যায়সা লগা? ওই ম্যাচটায় মনিন্দর সিংহকে পরপর দুটো বলে একটা কভার ড্রাইভ আর একটা স্কোয়্যার কাট মেরেছিল সচিন। আমি দিল্লির এক সাংবাদিককে যথারীতি জিজ্ঞেস করলাম, ক্যায়সা লগা? উনি বলেছিলেন, এই দুটো শট দেখেই বলে দিচ্ছি, ইয়ে লড়কা বহুত দূর যায়েগা। |
|
ওই ম্যাচটার সঙ্গে আরও একটা স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এক দিন খেলার পর হাসপাতালে দৌড়েছিলাম। আমার বাবা তখন খুব অসুস্থ। আইসিইউ-তে ভর্তি। ডাক্তার সে দিনই বলে দিলেন, বাবা আর বেশি দিন নেই।
প্রচণ্ড মনখারাপ নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরোতে বেরোতে দেখা সুনীল গাওস্করের মায়ের সঙ্গে। উনি বোধহয় কোনও আত্মীয়কে দেখতে এসেছিলেন।
আমাকে দেখেই জিজ্ঞেস করলেন, সচিন আজ কেমন খেলল? আমার উত্তরটা শুনে উনি যা বললেন, আজও ভুলতে পারিনি। বলেছিলেন, আমার নাতিকে বলেছি সচিনের খেলা দেখে শিখতে। ভাবুন একবার, সুনীল গাওস্করের মা রোহন গাওস্করকে বলছেন সচিনের ব্যাটিং থেকে শিখতে! অত দুঃখের মধ্যেও ওঁর কথাটা শুনে ভেতরটা কেমন জুড়িয়ে গিয়েছিল।
সত্যি, সচিনের একটা সেঞ্চুরি বা একটা বড় ইনিংস ছিল এক-একটা পেনকিলারের মতো। কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুনিয়ার সব ব্যথা ভুলিয়ে দিত। ও ভাল খেললে গোটা দেশে একটা পজিটিভ এনার্জি ছড়িয়ে পড়ত।
মুম্বইয়ের যে ট্যাক্সি চালক এমনি দিনে আমাকে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব পার করাতে রাজি হত না, সচিন সেঞ্চুরি করলে সেই লোকটাই হাসিমুখে বলত, বইঠ জাইয়ে! লতার একটা ভীষণ সুন্দর গান, অমিতাভের মন ছুঁয়ে যাওয়া কোনও দৃশ্য বা আপনাদের রবীন্দ্রনাথের কবিতা এ সবের চেয়ে সচিনের একটা বড় ইনিংস কম কোথায়?
কেরিয়ারের শুরুর দিকে সচিনের গ্রিপ নিখুঁত ছিল না। ব্যাটের হাতলটা একটু নিচুর দিকে ধরত। আমাদের মুম্বইয়ে তখন এক জন কোচ টেকনিকের দিক দিয়ে প্রচণ্ড বিখ্যাত ছিলেন বসন্ত আমলাডি। গাওস্করও যাঁর কাছে টেকনিকের এবিসিডি বুঝে নিতেন
মাঝে মাঝে। আমলাডি এক-এক সময় আমাকে বলতেন সচিনের গ্রিপ নিয়ে ওঁর খুঁতখুঁতানির কথা।
বহু বছর পরে সেই আমলাডিই আমাকে বলেছিলেন, “সচিন যে আমাকে ভুল প্রমাণ করল, তাতে সব চেয়ে বেশি খুশি আমিই হয়েছি!” চুরানব্বইয়ের কাছাকাছি সময়ে প্রথম কাউন্টি মরসুম খেলে সচিন যখন দেশে ফিরল, তখন এই আমলাডি আমাকে ফোন করেন। বলেন, “পাপ্পু আমি সচিনকে কয়েকটা কথা বলতে চাই। ও শুনবে?”
আমার কাছে সচিন এ কথা শুনে ওঁর বাড়ি চলে যেতে চাইছিল। কিন্তু তাতে ভক্তরা ভিড় জমাবে ভেবে আমি আমলাডিকেই ওর বাড়িতে নিয়ে গেলাম। আমলাডির কথা খুব মন দিয়ে শুনে সচিন বলেছিল, স্যর আমি তো এখন মরসুমের মধ্যে আছি। এখন টেকনিকে বদল করব না। কিন্তু আপনার কথা নিশ্চয়ই মনে রাখব।
তার পর সচিন ওঁকে জিজ্ঞেস করল, স্যর ধরুন আমাকে অফস্পিনার বল করছে। অন সাইডে সাত জন ফিল্ডার, এক জন অফে। আমি কী ভাবে অ্যাটাক করব? বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, তখন ওর বয়স কুড়ির কাছাকাছি। ওই বয়সে ও রকম আক্রমণাত্মক মানসিকতা আমি খুব কম দেখেছি। সচিন হল ক্রিকেটের এমন এক শিক্ষার্থী, যে সব সময় নতুন কিছু শিখতে তৈরি। নিজেকে বদলাতে তৈরি।
দুর্বল মুহূর্তের সচিনকেও আমি পেয়েছি। মুম্বইয়ে বোধহয় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট ছিল। এমনিতেই টেস্টের আগের রাতে সচিন ঘুমোতে পারে না। সে দিন ওর হঠাৎ মনে হল এক্ষুনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব। রাত্তিরে তাজ হোটেল থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা চলে গেল শিবাজি পার্কের গণেশ মন্দিরে। আর তার পরের দিনই একটা সেঞ্চুরি! |
মিস করব |
• অজিত তেন্ডুলকর আমার বাড়িতে এলেও ওর আর আলমারিটা ছুঁয়ে কথা বলার প্রয়োজন হবে না। |
• আর কোনও ‘বসন্ত আমলাডি’ বলবেন না, ‘আমি অমুক ভারতীয় ক্রিকেটারকে এই কথাটা বলতে চাই। ও শুনবে কি?’ |
• এত সরল, নিষ্পাপ, মাটিতে পা-রাখা সেলিব্রিটি ক্রিকেটারও কি আর দেখতে পাব! |
• আর কোনও সেঞ্চুরি ‘পেনকিলার’-এর অনুভূতি এনে দেবে না। |
|
ছোটবেলায় সচিন যখন আমার বাড়িতে আসত, তখন ডব্লিউডব্লিউএফ আর সিনেমা নিয়ে কথা বলত। আস্তে আস্তে যত বড় হল, তত ওর মধ্যে একটা সংযম লক্ষ করতাম।
এক বার লন্ডনে খোলা স্টেজে গাওস্কর আর সচিনকে ইন্টারভিউ করছিলাম। প্রায় বারো হাজার দর্শক জড়ো হয়েছিল সেদিন।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে আমি দু’জনকেই মরাঠিতে বললাম, এই প্রশ্নের উত্তরটা দিতে দিতেই আমরা স্টেজ ছেড়ে ভেতরের দিকে পালিয়ে যাব। না হলে দর্শকদের ঘেরাও সামলাতে হবে।
তা প্রোগ্রাম-শেষে ব্যাকস্টেজের দিকে দৌড়তে দৌড়তেই সচিনের হঠাৎ চোখ পড়ে গেল প্রতিবন্ধী এক ভক্তের দিকে। তক্ষুনি দাঁড়িয়ে পড়ল ওকে অটোগ্রাফ দিতে। ব্যস, সেই সুযোগে বাকিরাও ওকে পাকড়াও করে ফেলল। শেষমেশ প্রায় শ’খানেক সই দিতে হল সচিনকে। কে বলবে, রাত পেরোলেই ওকে নটিংহ্যাম টেস্ট খেলতে নামতে হবে!
আসলে সচিনের পা দুটো খুব শক্ত ভাবে মাটির উপর রাখা। আর অসম্ভব একটা সরল মন নিয়ে চলাফেরা করে ও। ওর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এটাও।
লোকে ওকে ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা করে। কিন্তু আমার কেবলই মনে হয়, ব্র্যাডম্যান কি তাঁর টিমমেটদের মধ্যে এত জনপ্রিয় ছিলেন? সচিন কিন্তু সেই ১৯৮৯ থেকে ২০১৩ সব টিমমেটের কাছে সমান জনপ্রিয়।
সেই সঙ্গে আর একটা কথাও মনে রাখবেন, ব্র্যাডম্যানকে কিন্তু স্লো-মোশন, ভিডিও অ্যানালিসিস, ইন্টারনেটের যুগের চাপ নিয়ে খেলতে হয়নি। এ সব সামলে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলা যে কতটা কঠিন, তার আন্দাজ আমাদের পক্ষে করা অসম্ভব।
তার মধ্যেও কি সচিনের জীবনে হতাশা আসেনি? এসেছে। কিন্তু তা-ও কোনও দিন কি শুনেছেন ও ড্রেসিংরুমে ভাঙচুর করেছে? বা দেখেছেন মাঠের মধ্যে ওকে মেজাজ হারাতে?
আমার মনে হয় সচিন খুব সচেতন ভাবে নিজের এই ভাবমূর্তিটা মেনটেন করত। কারণ ও জানে, কত প্রজন্মের কাছে ও এক জন আদর্শ রোল মডেল। শুধু ক্রিকেটার হিসেবে নয়, হয়তো বা মানুষ হিসেবেও।
ইডেনে একটা টেস্টের কথা মনে পড়ছে। ক্রিজে সচিন আসতেই শুরু হয়ে গেল কলকাতার ক্রিকেট পাগল দর্শকের কানফাটানো চিৎকার। ডন ব্র্যাডম্যানের জন্মভূমির মানুষ হয়েও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের মতো ক্রিকেটার পর্যন্ত সেদিন সচিনকে জিজ্ঞেস করে ফেলেছিলেন, তুমি প্রতিটা ম্যাচে এই চাপ নিয়ে কী করে খেলো বলো তো? শেষমেশ আমার কী মনে হয় জানেন? ব্র্যাডম্যান ক্রিকেট নামক একটা খেলা খেলতেন। আর সচিন হল ক্রিকেট নামের একটা ধর্মের সাধক।
সেই বিরল ক্রিকেট-সাধককে আর আমরা বাইশ গজে দেশের জন্য বুক চিতিয়ে লড়তে দেখব না!
সচিন অবসরটা নিয়েই ফেলল। কিন্তু এই শেষ পর্বে ওর অবসর ঘিরে যে জল ঘোলাটা হল, সেটা কি ওর পাওনা ছিল?
যাঁরা এটা করলেন, তাঁদের কি একবারের জন্যও ভাবা উচিত ছিল না, সচিন কোনও সরকারি চাকুরে নন, যে তাঁর অবসরের দিনক্ষণ বাকিরা ঠিক করে দেবেন।
বরং সচিন রমেশ তেন্ডুলকর এমন এক জন মাপের ক্রিকেটার, যার আবির্ভাব একশো বছরে হয়তো এক বার ঘটে।
আসলে চোখের সামনে অসীম ক্ষমতাধরের আবির্ভাব, তাঁর বিচরণ, তাঁর ওঠা পড়া অনেক সময়ই সমকাল ঠিকমতো নিতে পারে না। পৃথিবীর ইতিহাসে এমনটা তো বারে বারেই ঘটেছে। এ ক্ষেত্রেও হয়তো বা তেমনই হল।
এঁরা কী করলেন, তা হয়তো নিজেরাই জানেন না। |
|
|
|
|
|