সামনে জগদ্ধাত্রী পুজো। তার পরই পুরভোট। এই অবস্থায় রাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে বেশ কিছু পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ করা নিয়ে সমালোচনার মুখে কৃষ্ণনগর পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রোড, অনন্তহরি মিত্র রোড, লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র রোড, হাইস্ট্রিট, রাজা রোড, বসুলা রোড, আশুরায় রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর পাশাপাশি ব্যাঙ্ক লেন, চাষাপাড়ার রাজদে রোডের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে যাওয়ার রাস্তাগুলোও সংস্কার করা হচ্ছে বলে। পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, ‘‘শহরের প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। বৃষ্টিতে কাজ থমকে গেলেও জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
উৎসবের দিনগুলোতে শহর পরিষ্কার রাখতে তিনশো জন সাফাই কর্মী দু’বেলা জঞ্জাল পরিষ্কার করবেন। কেনা হয়েছে আরও ১০টি ট্রলি-সহ ট্র্যাক্টর। দুর্ঘটনা এড়াতে মূল রাস্তাগুলির দু’পাশের নর্দমাগুলি কাঠের পাটাতন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জরুরিকালীন আলোর ব্যবস্থা করার জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকবে। উৎসবের দিনগুলিতে দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা জল সরবরাহ করা হবে বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুরসভার এই তৎপরতার পিছনে নানা ‘কারণ’ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। নিন্দুকরা বলছেন, বাইরে থেকে আসা মানুষের কাছে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য পুরসভার এই সক্রিয়তা। বিরোধীরা আবার এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিবার দেখেছি পুরভোটের আগে রাস্তা সংস্কার থেকে শুরু করে বিভিন্ন মূর্তি প্রতিষ্ঠার মতো উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে পুরসভা। এ বার ভোটের মাত্র কয়েক দিন আগে জগদ্ধাত্রী পুজো। আর পুজোকে সামনে রেখে সেই কাজটা করা অনেক সহজ হবে। মূল লক্ষ্য আসলে পুরভোট।’’
যদিও অসীমবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রতিবারই জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে এই ধরনের পরিষেবামূলক কাজ আমরা করে থাকি। এ বারও ব্যতিক্রম নয়। এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ভোটের দিন ঘোষণার পরে পুরসভা কি আদৌ কাজ করতে পারে? কৃষ্ণনগরের মহকুমাশাসক (সদর) মৈত্রেয়ী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা কাজ শুরু করেছে নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার আগেই। ফলে সমস্যা নেই।”
বিতর্ক থাকবে। থাকবে রাজনৈতিক টানাপোড়েনও। তার মধ্যেই উৎসবের মুখে চেনা ছন্দে সেজে উঠবে কৃষ্ণনগর। মেতে উঠবেন কৃষ্ণনাগরিকরাও। |