দিনের পর দিন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির বোলের বাজার জেটিঘাট ও উল্টো দিকে পূর্ব দ্বারিকাপুরের আদিবাসীপাড়ার জেটিঘাট দু’টির। পাথরপ্রতিমার পূর্ব দ্বারিকাপুর ও বোলের বাজারের মধ্যে রয়েছে মৃদঙ্গভাঙা নদী। দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল জেটি ঘাট দু’টি। বছর খানেক আগে বোলের বাজারে নতুন কংক্রিটের জেটিঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হলেও কয়েক মাস ধরেই কাজ বন্ধ । ফলে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “বর্ষার জন্য কাজ বাকি রয়েছে। দ্রুত ওই সেতু দু’টির কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।”
পাথরপ্রতিমা ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মী জনার্দনপুর, অচিন্ত্যনগর, হেড়ম্ব গোপালপুর এলাকার বাসিন্দাদের নিত্য প্রয়োজনে রায়দিঘি হাসপাতাল, কলেজ, ও মথুরাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে কলকাতায় যাওয়ার জন্য আদিবাসীপাড়া ঘাট থেকে নৌকায় করে মৃদঙ্গভাঙা নদী পেরোতে হয়। |
অন্য দিকে, রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর, কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েতে এলাকার বাসিন্দারা পাথরপ্রতিমায় পৌঁছনোর জন্য বোলেরবাজার ঘাট থেকে আদিবাসীপাড়া ঘাটে যাতায়াত করেন।
নৌকাই পারাপারের একমাত্র ভরসা। ভোর পাঁচটা থেকে রাত ৮টা অবধি নৌকা চলে। কিন্তু আদিবাসীপাড়ার ঘাটটির সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। তার উপর নদীর চরা পড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে এসেছে ঘাটটি। সংস্কার না হওয়ায় ইট সরে গিয়ে পুরো জায়গাটারই নড়বড়ে অবস্থা। ঘাটে ওঠানামা করতে গিয়েদুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। পাথরপ্রতিমার পূর্বদ্বারিকাপুর আদিবাসীপাড়া ঘাটটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রজ্জাক বলেন, “কংক্রিটের ঘাট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।” |
অন্য পারের বোলেরবাজার ঘাটটিও বেহাল দীর্ঘদিন ধরে। বছর খানেক আগে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে নতুন কংক্রিটের ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু মাঝপথে বন্ধ হয়েছে সেই কাজও। ঘাটের প্রায় ২০ ফুট দীর্ঘ এলাকায় কোনও ঢালাই না পড়ায় কার্যত বাঁশের মাচার উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। এক বার পা পিছলে পড়লে নদীতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বিপন্ন মহিলা ও শিশুরা। এছাড়াও দু’দিকের ঘাটেই নেই কোনও আলো বা পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই একটি শৌচাগারও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই ঘাট ছাড়া যাতায়াতের অন্য কোনও মাধ্যমও নেই। বর্ষায় অবস্থা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
ওই দু’ঘাটে খেয়া পারাপার করেন কালু খান। জানান, প্রতিদিন দু’দিক থেকে অন্তত হাজার দুয়েক লোক খেয়া পারাপার করেন। আলো না থাকায় সন্ধ্যায় অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে ওঠে।এ নিয়ে মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি পীযূষ বৈরাগী বলেন, “আমরা নতুন ক্ষমতায় এসেছি। বোলেরবাজার ঘাটে পানীয় জল, যাত্রী প্রতীক্ষালয় ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য আমরা উদ্যোগী হব।”
|