ভাগীরথী গিলেছে ঘরবাড়ি, ঘুম চলে গিয়েছে গ্রামের
প্রলম্বিত বর্ষায় ভাগীরথীর ভাঙনের কবলে মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানার রামনগর এলাকা। এলাকার প্রায় ২০০ পরিবার ভাঙনের মুখে পড়ার উপক্রম। ওই অঞ্চলের মন্দির, ঘাট, খেলার মাঠ, বিস্তীর্ণ কৃষি জমি, দোকানপাট ভাঙনে ভাগিরথী গর্ভে তলিয়ে যেতে বসেছে। গত দু’বছর ধরেই বিক্ষিপ্তভাবে চলা ভাঙনে অনেক পরিবারই ইতিমধ্যে এলাকা ছাড়া। বছর দশেক আগে একবার বিধায়ক কোটার অর্থে ইটের গাথুনি দিয়ে ভয়াল ভাগীরথীকে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। তারপর থেকে ফি বছর ভাঙন সত্ত্বেও তা রোধে সরকারি স্তরে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বেলডাঙা-২ এর বিডিও অরিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সেচ দফতরকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। আপাতত অস্থায়ী ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হবে।”

ভাঙছে ভাগীরথীর পাড়। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পলাশি হয়ে তেজনগর বা পলাশি ঘাট পার হলেই মুর্শিদাবাদের রামনগর ঘাট। নদীভাঙনে সেই স্নানের ঘাট ভেঙেছে। নদী তীরবর্তী মন্দিরের একাংশ গ্রাস করেছে ভাগীরথী। রামনগর ফুটবল ময়দানেরও এক দিক নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় বিঘে চল্লিশেক তিন ফসলি জমি ভাগীরথী গিলেছে। ভাঙনের আশঙ্কার দিন গুনছে বেশ কিছু পরিবার। পাড় ভাঙতে ভাঙতে ভাগীরথী লোকালয় থেকে মাত্র ৪০ মিটার দূরত্বে হাজির হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণচন্দ্র হাজরা, মনোহর হাজরা, বা উত্তম বাগদীরা রোজ রাতে দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমতে যান। তাঁদের একটাই আশঙ্কা সকলেই হয়ত একচিলতে বাড়িটা তলিয়ে যাবে নদীগর্ভে। স্থানীয় মহৎপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র হাজরা বলেন, “প্রাচীন মন্দির, নদীঘাট, ফুটবল মাঠের অস্তিত্ব বিপন্ন। অনেক তিন ফসলি জমিও নদী গিলে খেয়েছে। বছর দশেক আগে ইট দিয়ে নদীর পাড় বাধানোর খানিকটা কাজ হয়েছিল। তার পর আর কোনও কাজ হয়নি।” নদীর তীরের মুদির দোকানকার কল্পনা দাস, মিষ্টির দোকানি বাসুদেব ঘোষ, কাপড় ব্যবসায়ী হীরা দাস, তেলে ভাজার দোকান ভ্রমর দাস বলেন, “আর ১০ মিটার ভাঙলেই সমস্ত দোকানই তলিয়ে যাবে নদীর জলে।”

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। —নিজস্ব চিত্র।
রামনগর বাছরা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের নাসিরুদ্দিন শেখ বলেন, “বছর কয়েক ধরে হল ভাঙন ত্বরান্বিত হয়েছে। আমরা নতুন এসেছি। বিষয়টি ইতিমধ্যে ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।” আর মাসখানেক বাদেই বাদ্যি বাজবে লোকসভা ভোটের। তার আগে ভোটারদের মনে পেতে কোনও রাজনৈতিক শক্তি হয়ত কংক্রিটের পাড় বানিয়ে দেবে। এটাই আশাতেই দিন কাটছে রানিনগরের কয়েক হাজার বাসিন্দার। কিন্তু কত ভোটই তো এল গেল। ভাঙন তো রোধ হল না। আবার অপেক্ষা। যতই হোক চাষা বাঁচে আশায়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.