স্ট্যান্ড থাকা সত্ত্বেও বাস দাঁড়াচ্ছে রাস্তায়, ক্ষোভ
বাস স্ট্যান্ড রয়েছে। কিন্তু সেখানে নয়, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকছে বাস। ফলে থমকে যাচ্ছে যান চলাচল। অফিস-কাছারি বা স্কুল কলেজে পৌঁছতে নাকাল হচ্ছেন চাকুরিজীবী ও পড়ুয়ারা। হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার বুকে নিত্য দিনের চিত্র এই যানজট। ছাড় পাচ্ছেন না মুমূর্ষু রোগীরাও। প্রশাসনের তরফে বাসচালকদের গাড়ি স্ট্যান্ডে রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও বাসচালকেরা তা শুনছেন না বলে অভিযোগ।
১৯৮৫ সালে চালু হয় বাসস্ট্যান্ডটি। তার আগে কোনও বাসস্ট্যান্ড ছিল না। রোদ জলের মধ্যে দাঁড়িয়েই বাস ধরতে হত যাত্রীদের। এর পরে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা এবং একটি বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ২০০৭ সালে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ছাউনি দিয়ে বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়। উপরে একটি পাঁচ তলা আবাসনও হয়। সেখানে একটি বাণিজ্যকেন্দ্র আছে। অভিযোগ, এত কিছু সত্ত্বেও বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে বাস রাখছেন না চালকেরা। পুরসভার পক্ষ থেকে অনেক বার বৈঠক ডেকে স্ট্যান্ডে বাস রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনও লাভ হয়নি। জেলা প্রশাসনের তরফে অনেক বার বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়েও ফল মেলেনি।
স্ট্যান্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে বাস। ছবি: তাপস ঘোষ।
স্বভাবতই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, মাসের অধিকাংশ দিনই হাজিরা খাতায় লালকালির দাগ পড়ছে। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে পৌঁছতে হচ্ছে অফিস-কর্মীদের। প্রতিবাদ করলেই চালক ও কন্ডাক্টরদের কাছ থেকে কটূক্তি শুনতে হচ্ছে। স্কুলছাত্রী স্বাতী দাস ও সৃঞ্জনা দাস বলেন, “রাস্তার পাশে যে ভাবে বাসগুলি দাঁড় করিয়ে রাখে, তাতে নিত্যদিন যানজট হয়। কোনওদিনই ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারি না। এলাকায় পুলিশ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের কথা বাস-চালকেরা শোনেন না।’’ চুঁচুড়া আদালতের আইনজীবী মৌসুমী ঘোষেরও একই সুর। বললেন, “সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারি না। চুঁচুড়া হাসপাতালে আসা রোগীদের এই যানজটে পড়ে অবস্থার আরও অবনতি হয়। এটা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।” অভিযোগ জানা সত্ত্বেও কার্যত অসহায় হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা। পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগের বামচালিত পুরবোর্ডের আমলে দু’বিঘা এলাকা জুড়ে এই বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে বৈঠক করে অনেক বার রাস্তার উপরে বাস রাখা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনও কর্ণপাত করছেন না বাস-চালকেরা। পুরসভার পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা হবে। তাতে ফল না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা পুলিশের ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) দেবশ্রী সান্যাল বলেন, “এই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার পাশে বাস রাখায় যানজট দীর্ঘদিনের সমস্যা। শীঘ্রই পুরসভা ও বাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক ডেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অজিত খাঁর বক্তব্য, “এই বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন রুটের মোট ২৫০-৩০০টি বাস চলে। স্ট্যান্ডের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ বাস দাঁড়াতে পারে। তাই বাকি বাস বাধ্য হয়ে রাস্তাতেই দাঁড় করাতে হয়। এই স্ট্যান্ডে একটা সারিতে তিনটির বেশি বাস দাঁড়াতে পারে। বাকিগুলি বাধ্য হয়েই রাস্তাতে রাখতে হয়। প্রশাসনের সঙ্গে অনেক বৈঠক হয়েছে, অন্য জায়গায় বাসস্ট্যান্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসন থেকে পরিবহণ দফতরের কাছে স্ট্যান্ড স্থানান্তরের জন্য জানানো হয়েছে। কোনও কাজ হচ্ছে না।” বাসচালক শেখ আখতার আলিও বলেন, “বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে বাস রাখার জন্য জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়েই বাইরে বাস রাখতে হয় আমাদের।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.