পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী, উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে বৈঠক চান গুরুঙ্গরা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঁচ দিনের দার্জিলিং সফরের সুযোগ নিয়েই তাঁরা যে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া, তা স্পষ্ট করে দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব। বিমল গুরুঙ্গরা কার্যত জানিয়ে দিলেন, এখন পাহাড়ের উন্নয়নই তাঁদের প্রথম লক্ষ্য। এমনকী রাজ্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি হলে সেখানে গোর্খাল্যান্ডের দাবি নয়, মূলত জিটিএ-র দফতর হস্তান্তর, আর্থিক বরাদ্দ ও স্বশাসন নিয়েই আলোচনা করতে চায় মোর্চা। সন্ধ্যায় বাগডোগরায় নেমে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, “আমরা পাহাড়ে শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি চাই। কোনও অছিলায় বিঘ্ন ঘটতে দেব না। পাহাড়বাসীর কাছে আমরা দায়বদ্ধ। সব পাহাড়বাসীকে সামিল করেই সেই লক্ষ্যপূরণ করব।”
অতীতেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে মোর্চা। কিন্তু তার কয়েক মাস পরেই পাহাড় অচল করেছে। কাজেই এ বারের বৈঠকে কতটা কাজ হবে? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি আশাবাদী। আগামী ২৫ অক্টোবর মোর্চার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বৈঠক ফলপ্রসূ হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি দার্জিলিং ম্যালে। মঙ্গলবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।
ঘরে-বাইরে চাপ থেকে আপাতত রেহাই পেতে মোর্চা যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকেই অক্সিজেন চাইছে, সেটা স্পষ্ট হল দু’ভাবে। প্রথমত, কেন্দ্র-রাজ্য-জিটিএ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবির বদলে রাজ্য-জিটিএ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তাব। আর দুই, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সিদ্ধান্ত না হলে উন্নয়নের কথা নয়, এই অবস্থান থেকে সরে এসে উন্নয়নের আলোচনাকেই প্রাধান্য দেওয়া।
মঙ্গলবার সাতসকালেই জিটিএ অফিস খুলে সেখানে ২৭ জন সদস্য বৈঠক করে রমেশ আলের হাতে আর্থিক ক্ষমতা দিয়েছেন। আলে বলেছেন, “পাহাড়ে অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত। তা সম্পূর্ণ করাই এখন আমাদের লক্ষ্য।” পাশাপাশি, মোর্চার তরফে দার্জিলিঙের বিধায়ক ত্রিলোক দেওয়ান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মূলত তাঁরা পাহাড়ের উন্নয়ন, জিটিএ-র সমস্যা নিয়েই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চাইবেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্র ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার ব্যাপারে আমাদের কিংবা রাজ্যকে কিছুই জানায়নি। আমরা এখন রাজ্যের সঙ্গেই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চাই। সেখানে জিটিএ-এর দফতর হস্তান্তর সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য বলব। তা মিটে গেলে আরও অর্থ বরাদ্দ, আরও স্বশাসনের বিষয়ও রয়েছে। তা নিয়ে রাজ্যের সম্মতি সাপেক্ষে আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চাই।”
এ দিন গুয়াহাটি থেকে দার্জিলিঙে ফিরে গুরুঙ্গ বলেন, “আমাদের তিন জনপ্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সব কিছু বলবেন।” পাহাড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার যে প্রবণতা সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, তা স্বীকার করে গুরুঙ্গের মন্তব্য, “অনেকে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। বেশির ভাগ আমাদের বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক। পাহাড়ের মানুষের হৃদয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি প্রোথিত। সেই আবেগ বুকে নিয়েই আমরা সব পদক্ষেপ করব।”
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের প্রাক্কালে মোর্চার তিন বিধায়ক কলকাতায় গিয়ে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ করেন। কিন্তু তৃণমূল নেতারাও স্পষ্ট করে দেন, উন্নয়নে মন না দিলে আলোচনার প্রশ্ন নেই। এর পরে ক্রমশ সম্পর্কের বরফ গলে। যদিও এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, পাহাড়ে তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলবে। জিটিএ-এর টাকা খরচের উপরে নজরদারি কমিটি গড়ারও দাবি তুলেছে তৃণমূল।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.