পুরনো রেশন কার্ড বদলে খাদ্য দফতর নতুন ‘ডিজিট্যাল’ রেশন কার্ড দিতে শুরু করবে এ বছরের শেষে। নতুন কার্ডে যে ‘বার কোড’ থাকবে, তাতে ধরা থাকবে গ্রাহকের নিজস্ব পরিচিতি নম্বর। এখন রাজ্যে ৯ কোটি ১১ লক্ষ মানুষের রেশন কার্ড রয়েছে। এই সব গ্রাহকের হাতে নতুন কার্ড তুলে দেওয়ার পর পুরনো কার্ড বাতিল করা হবে


১। রাজ্যের যে কোনও রেশন দোকান থেকে গ্রাহক নিজের রেশন তুলতে পারবেন। ‘বার কোড’ পড়ার যন্ত্র সরকার থেকেই রেশন দোকানগুলিকে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে একটি ট্যাবলেট কম্পিউটারও দেওয়া হবে, যার মধ্যে ওই রেশন দোকানের অধীনে সব গ্রাহকের নম্বর এবং পরিচয় থাকবে।
২। সরকারের কাছে প্রতিটি রেশন গ্রাহকের নম্বর ও পরিচিতি নথিভূক্ত থাকবে। ভুয়ো গ্রাহকের সম্ভাবনা কমবে।
৩। কে কত রেশন তুলছেন, তারও বিশদ তথ্য থাকবে সরকারের কাছে। দেশে অর্ধেকেরও বেশি রেশনের শস্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছয় না। এই দুর্নীতি রুখতে ডিজিট্যাল কার্ড কাজে দেবে।


পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও অবধি খাদ্য নিরাপত্তা বিল কার্যকরী করেনি। যতদিন নতুন ব্যবস্থায় বিলিবণ্টন শুরু না হয়, ততদিন পুরনো নিয়মেই চাল-গম তোলা যাবে। অন্ত্যোদয়, বিপিএল গ্রাহকরা তাঁদের জন্য নির্ধারিত দরে, নির্ধারিত পরিমাণে শস্য পাবেন, এপিএল-রাও তাই।
রাজ্য যখন খাদ্য নিরাপত্তা বিল গ্রহণ করবে, তখন ‘অগ্রাধিকার পরিবার’(‘প্রায়োরিটি ফ্যামিলিজ’) চিহ্নিত করে নতুন তালিকা তৈরি হবে। সেই তালিকায় থাকবেন রাজ্যের ৬ কোটি ১ লক্ষ মানুষ। এই তালিকার বাইরে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা কে কী পাবেন তা রাজ্য সরকার স্থির করবে।


রেশন ব্যবস্থার অধীনে মোট পরিবার কমলেও, বরাদ্দ খাদ্যশস্য কমছে না। কেন্দ্রের থেকে রাজ্য প্রতি ৩৮ লক্ষ মেট্রিক টন শস্য ভর্তুকিতে পাচ্ছিল। এখনও সেই পরিমাণ শস্যই মিলবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি ব্লকে রেশন কার্ডের দাবিতে বিডিও অফিসে স্মারকলিপি। —ফাইল চিত্র।


অন্ত্যোদয় পরিবারগুলি প্রতি মাসে পরিবারপিছু ৩৫ কিলোগ্রাম খাদ্যশস্য পাবেন। ‘অগ্রাধিকার’ পরিবারগুলি প্রতি মাসে মাথাপিছু ৫ কিলোগ্রাম খাদ্যশস্য পাবেন। সকলকেই যে দর দিতে হবে তা হল, চাল ৩ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম, গম ২ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম, অন্যান্য মোটা শস্য ১ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম।


ডিজিট্যাল কার্ডের জন্য আবেদনের প্রয়োজন নেই। পর্যায়ক্রমে পুরনো কার্ড বদলে নতুন কার্ড দেওয়া হবে। ২০১১ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর, এবং পুরসভাগুলি থেকে আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করবে খাদ্য দফতর।
তালিকা তৈরির কাজ একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। কবে শেষ হবে বলা সম্ভব নয়।


খাদ্য দফতর ‘বিপিএল’ বলে চিহ্নিত কার্ড আর দেবে না।


পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের একটি পৃথক বিপিএল তালিকা রয়েছে। এখন যে তালিকাটি ব্যবহার হচ্ছে তা ওই দফতরেরই ২০০৫ সালের ‘গ্রামীণ গৃহস্থলী সমীক্ষা’-র ভিত্তিতে তৈরি। ইন্দিরা আবাস যোজনা, বিধবা বা বার্ধক্য ভাতা, হাসপাতালে ফ্রি বেড প্রভৃতির বিষয়টি ওই তালিকা ধরেই নির্ধারিত হচ্ছে। তবে সেই তালিকারও সংশোধনের কাজ চলছে। নতুন তালিকা কবে প্রকাশিত হবে, নিশ্চিত নয়।


না, আধার কার্ডের আলাদা নম্বর রয়েছে। তবে খাদ্য দফতর প্রয়োজনে রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কাছ থেকে আধার কার্ডের নম্বর নিতে পারে। জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারে প্রতিটি ব্যক্তির যে সংখ্যা রয়েছে, তার সঙ্গে আধার কার্ড এবং ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের নম্বর মিলিয়ে কোথায় কত গ্রাহক তার মানচিত্র তৈরি করতে পারবে।


স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের কাজ এখন আসছে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন-এর (ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশন) অধীনে। ওই প্রকল্পে এপিএল-বিপিএল বিভেদ তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারা সরকারি ভর্তুকির যোগ্য, তা গ্রামবাসীরাই আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবেন, এমনই বলা হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, ওই প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় সম্ভবত ভর্তুকি প্রাপকদের তালিকার সঙ্গে বিপিএল তালিকার অথবা ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টারের সংযোগও রাখা হবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.