বছর খানেকের মধ্যে উপর্যুপরি দু’বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হল মুর্শিদাবাদ পুরসভার পুরপ্রধানকে সরাতে।
২০১০ সালে ভোটে ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টি পেয়ে বোর্ড গড়ে কংগ্রেস। পুরপ্রধান হন সৌমেন দাস। তাঁকে সরাতে ২০১২ সালের ২ এপ্রিল কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী তিন কাউন্সিলর সহ নির্দল ও অন্যান্য দলের আট জন সরাতে উদ্যোগী হন। অনাস্থা এড়াতে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পুরপ্রধান বদলের সিদ্ধান্ত নেন। নতুন পুরপ্রধান হন শম্ভূনাথ ঘোষ। মঙ্গলবার শম্ভুনাথবাবুর অপসারণ চেয়ে আগের ওই কাউন্সিলররাই চিঠি জমা দিয়েছেন পুরসভায়। ২২ নভেম্বর ওই পুরসভায় একটি আসনে পুনর্নিবাচন রয়েছে। তার আগে এই ঘটনা পুর এলাকায় শোরগোল ফেলে দিয়েছে। |
অনাস্থা আনা কাউন্সিলররা হলেন কংগ্রেসের মেহেদি আলম মির্জা, সাইদা বিবি ও তপন মণ্ডল। মেহেদি আলম আবার লালবাগ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি। সাইদা বিবি উপ পুরপ্রধান পদে আসীন। বাকি পাঁচ কাউন্সিলরের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বজিত্ ধর, গোকুল বিশ্বাস, ভদ্দরি মণ্ডল ও মাধুরী মণ্ডল। কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “১০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তিন জন পুরপ্রধানকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। বাকিরা অন্ধকারে রইলেন। অধীর চৌধুরী শম্ভুনাথ ঘোষকে পুরপ্রধান পদে বসান। গোটা বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।” এ ব্যাপারে কংগ্রেস কাউন্সিলর মেহেদি আলম মির্জা বা ‘নির্দল’ কাউন্সিলর বিশ্বজিত্ ধর মুখ খুলতে চাননি। কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর অবশ্য বলছেন, “গত পুরভোটে তৃণমূলের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জেতে বিশ্বজিত্ ধর। ভোটে জেতার পর এক সময় অধীরের অনুগামী বিশ্বজিত্ কংগ্রেস দল ভাঙানোর খেলায় মেতেছিল। সেই বিশ্বজিত্ ধর ও তাঁর অনুগামীদের সমর্থন নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনা ভাল চোখে দেখছেন না এলাকার কংগ্রেস কর্মীরা।”
অধিকাংশ কংগ্রেসী কাউন্সিলরই ‘দলবিরোধী’ কাজের জন্য মেহেদি আলম মির্জা-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। তাঁরা জেলা নেতৃত্বের উপরে চাপ সৃষ্টিও করছেন। পুরপ্রধান শম্ভূনাথ ঘোষ বলেন, “দলেরই তিন কাউন্সিলর যেভাবে অনাস্থা এনেছেন তা হতাশজনক। এটা ভোটাররা ভাল চোখে দেখবেন না।” এই অস্থিরতা কাটানোর দায়িত্ব বর্তেছে বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যের উপর। নীলরতনবাবু বলেন, “অধীর চৌধুরী দিল্লি থেকে ফিরলে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার করে সমাধানসূত্র বের করা হবে।”
|