|
|
|
|
ঘর সামলাতে প্লেনাম ডাকল কেরল সিপিএম
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিবাদ মেটাতে নজিরবিহীন ভাবে গড়তে হয়েছে পলিটব্যুরোর ৬ সদস্যের কমিশন। সেই কমিশনের কাজেও এসে পড়েছে পুরনো তিক্ততারই ছায়া! এ বার লোকসভা ভোটের আগে ঘরের কোন্দল নিয়ে আলোচনা করতে প্লেনাম ডাকতে হল কেরল সিপিএমকে। পালাক্কাডে আগামী ২৭-২৯ নভেম্বর তিন দিনের ওই বিশেষ অধিবেশনে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট-সহ প্রায় অর্ধেক পলিটব্যুরোরই উপস্থিত থাকার কথা। প্লেনামের সিদ্ধান্ত পেশ হবে ডিসেম্বরে আগরতলায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে।
প্লেনামের অর্থ ‘বিশেষ অধিবেশন’। কমিউনিস্ট পার্টিতে যাকে ‘বিশেষ কংগ্রেস’ হিসাবেই দেখা হয়। দু’টি পার্টি কংগ্রেস বা রাজ্য সম্মেলনের মাঝে কোনও গুরুতর বিষয়ে বিতর্ক করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার হলে প্লেনাম ডাকা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের যেমন ১৯৭৮ সালের বর্ধমান প্লেনাম এখনও প্রবীণ নেতাদের স্মৃতিতে আছে। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে প্লেনাম বিরল হলেও সাংগঠনিক বিষয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে মাঝেমধ্যে বিশেষ অধিবেশন হয়ে থাকে।
কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “গত বছর কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসেই এ রাজ্যের সাংগঠনিক বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা কত দূর রূপায়িত হয়েছে, কোথায়ই বা সমস্যা হচ্ছে, এ সব প্রশ্নে এখন আলোচনা দরকার হয়ে পড়েছে। তাই রাজ্য প্লেনামের সিদ্ধান্ত।” কেরলের ১৪টি জেলা এবং গণসংগঠন থেকে প্রায় ২৭৫ জন প্রতিনিধি বছার কাজে হাত দিচ্ছে দলের রাজ্য কমিটি।
কোঝিকোড়ের যে প্রস্তাবের কথা সামনে রেখে এই প্লেনামের আয়োজন, সেখানেও গত বছর বিতর্ক বেধেছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ভি এস অচ্যুতানন্দনকে নিয়েই। পার্টি কংগ্রেসে পেশ করার জন্য রাজ্য সম্পাদক পিনারাই বিজয়নের তৈরি রিপোর্ট বাইরে ফাঁস করে দেওয়ার দায়ে ভি এসের দিকে আঙুল তুলেছিল দলেরই একাংশ। শেষ পর্যন্ত ভি এসের দফতরের সঙ্গে যুক্ত তাঁর অনুগামী তিন দলীয় কর্মীকে বহিষ্কার করেছে সিপিএম। এ বার প্লেনামও ভি এস-কে আরও কোণঠাসা করার প্রস্তুতি বলেই দলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা।
দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে বেফাঁস মন্তব্য না-করার জন্য গত সপ্তাহেই ভি এস-কে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পলিটব্যুরো। এই অবস্থায় সোমবার তিরুঅনন্তপুরমে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দু’দফার যে বৈঠকে প্লেনামের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেখানেও প্রবল সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হয়েছেন ভি এস। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে সিংহভাগ সদস্যই জানিয়েছেন, সতর্ক করা সত্ত্বেও দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করে চলেছেন ভি এস। তাঁর আরও কড়া শাস্তিই বিধেয়। বিরোধী দলনেতার পদ বা কেন্দ্রীয় কমিটি, কোনও একটা থেকে তাঁকে সরানোর পক্ষপাতী বিজয়নেরা। ভি এস জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী বিধানসভা ভোটে তিনি আর দাঁড়াবেন না। এখন লোকসভা ভোটের আগে ভি এস-ক্ষত খুঁচিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি কতটা নেওয়া সম্ভব, ঠিক করতে হবে প্রকাশ কারাটদের! |
পুরনো খবর: দরকারে কংগ্রেসের পাশে, মত ভিএসের |
|
|
|
|
|