সিদ্ধান্ত মতোই মঙ্গলবার সকালে দুবরাজপুরের পুরপ্রধান পদে আনুষ্ঠানিক শপথ নিয়ে হ্যাটট্রিক করলেন পীযূষ পাণ্ডে। তবে এ বারের প্রেক্ষিতটাই শুধু বদলেছে। গত দু’বার কংগ্রেসের পুরপ্রধান ছিলেন। এ বার তিনি তৃণমূলের পুরপ্রধান। পুরভোটের পর এ দিনই বোর্ড গঠন এবং পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ছিল। মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর) চন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী এ বার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ পাঠ করান। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর ফের পুরপ্রধান পদে মনোনীত পীযূষ পাণ্ডে ও উপ-পুরপ্রধান হিসেবে মনোনীত মির্জা সৌকত আলিকে শপথ পাঠ করানো হয়।
পীযূষবাবু বলেন, “এতদিন যে দলের হয়ে পুরপ্রধান ছিলাম, সেই দলের সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল না। তাই উন্নয়ন সে ভাবে করা যায়নি। পরিস্রুত পনীয় জল, রাস্তা, নিকাশি নালা, বাসস্ট্যান্ড না থাকার মতো বহু সমস্যা রয়েছে এই গ্রামীণ শহরে। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদ ও রাজ্য ক্ষমতাসীন দলের পুরপ্রধান হওয়ায় উন্নয়ের পথে সেই বাধা থাকবে না। তাই পুরসভার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই ঝাঁপাব।”
প্রসঙ্গত, পুরনির্বাচনোত্তর ১৬ আসনের পুরসভার ৬টি আসন পেয়ে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করলেও, পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই নিরন্তর জল্পনা শুরু হয়েছিল দলের অন্দরে ও বাইরে। কারণ, পুরপ্রধান পদে তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর পীযূষ পাণ্ডে ও প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের নাম আসছিল। প্রথম জন নির্বাচনের আগেই তিনি সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিলেও একাধিকবার পুরপ্রধানের পদ সামলেছেন। অন্য জন দলের বহু পুরোনো নেতা। |
উপপুরপ্রধান মির্জা সৌকত আলিকে শপথপাঠ করাচ্ছেন পুরপ্রধান। —নিজস্ব চিত্র। |
একধিকবার দলের টিকিটে জেতা কাউন্সিলরও। স্বাভাবিক ভাবে কে পুরপ্রধান হবেন, সেটা নিয়ে সমান কৌতুহলী ছিলেন পুরবাসীও। সোমবার বিকেলে বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে দলীয় কাউন্সিলরদের ডেকে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল পুরপ্রধান হিসেবে পীযূষবাবু ও উপ-পুরপ্রধান হিসেবে মির্জা সৌকত আলির নাম জানিয়েও দিলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হয়নি। তাই এ দিন পুরসভা চত্বরে শপথগ্রহণ মঞ্চের সামনে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন পুরভোটে দলের অবজারভার তথা মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। প্রভাতবাবু বলেন, “ব্যক্তি নয়। দলের ইচ্ছেই সব।”
তবে এ দিন শপথগ্রহণের পরে মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান নির্বাচনের সভা হয়েছে। সেখানে দলীয় সিদ্ধন্ত মেনে নির্বাচিত কংগ্রেসের ৪ কাউন্সিলর ও ১ সিপিএম কাউন্সিলর যোগ দেননি। দুই বিজেপি কাউন্সিলর অবশ্য উপস্থিত ছিলেন। চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আশা করি উন্নয়নের প্রশ্নে বিরোধী দলের কাউন্সিলররা আমাদের পাশে থাকবেন।” পুরপ্রধান নির্বাচনী বৈঠকে হাজির না থাকলেও কংগ্রেস কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন, সিপিএম কাউন্সিলর শেখ আলাউদ্দিনরা আশ্বাস দেন, “উন্নয়েনের প্রশ্নে সব সময় পাশে থাকব।” একই মত বিজেপি নেতা সত্যপ্রকাশ তিওয়ারিরও। |