|
|
|
|
মঙ্গলবার শপথগ্রহণ |
পীযূষ না প্রভাত, জল্পনা পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে |
দয়াল সেনগুপ্ত • দুবরাজপুর |
আদি তৃণমূল, না কি নতুন তৃণমূল? দুবরাজপুর পুরসভায় পুরপ্রধানের পদ পাবেন কে, তা নিয়েই জোর জল্পনা এলাকায়। এক দিকে রয়েছেন, ভোটের মুখে কংগ্রেস ছেড়ে শাসকদলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে। অন্য দিকে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থেকে তৃণমূল সংগঠন মজবুত করার অন্যতম কারিগর প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। শেষ হাসি কে হাসবেন, তার উত্তর মিলবে কাল, মঙ্গলবার।
গত মাসের ২৪ তারিখ পুরভোটের ফল প্রকাশ হয়েছিল। ১৬ আসনের দুবরাজপুর পুরসভার ৯টি আসন পেয়ে ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল। কাল, মঙ্গলবার ওই দিনই শপথগ্রহণ। দলের তরফে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। জয়ী তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে শপথ নেবেন পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলররাও। তবে সমস্ত উত্সাহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পুরপ্রধান নির্বাচন।
দল সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনে প্রাক্তন পুরপ্রধানের ভূমিকা থাকলেও প্রভাতবাবুর ভূমিকা কোনও অংশে কম নয়। তাই শেষ পর্যন্ত কে ছাড়পত্র পাবেন, সেটা নিয়ে যথেষ্ট গোপনীয়তা বজায় রেখেছে দল। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল পরিষ্কার জানাচ্ছেন, কলকাতা থেকে মুখ বন্ধ খামে আসবে পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানের নাম। আগে থেকে কিছু বলা যাবে না। তবে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার কথায়, “জেলা সভাপতি যাঁকে চাইবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের শীলমোহর সেখানেই পড়বে।” তবে দলের তরফে প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের নামটা বেশি করে উপস্থাপিত হচ্ছে। তুলনায় খানিকটা পিছনে পীযূষবাবু। আর যদি অভিজ্ঞতার নিরিখে সিদ্ধান্ত হয়, তা হলে পীযূষবাবুই বিবেচনায় থাকবেন।
পুরপ্রধান পদের দাবিদার দুই নেতা অবশ্য ‘দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, মেনে নেব’ গোছের জবাব দিয়ে প্রসঙ্গ এড়ালেও, দু’জনেই চান তাঁকে পুরপ্রধান করা হোক। প্রসঙ্গত, পুরভোটের ঠিক আগে আগেই কংগ্রেস কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে দুটো বিষয় রয়েছে। প্রথমত তাঁর সঙ্গীরা যেন পুরভোটের টিকিট পান এবং জিতলে তাঁর পছন্দের কাউন্সিলররা তাঁকে পুরপ্রধান হিসেবে সমর্থন করেন। পছন্দের অধিকাংশ প্রার্থী জেতায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন পীযূষবাবু।
অন্য দিকে প্রভাতবাবু নিজে জয়ী হলেও তাঁর পছন্দের বেশ কয়েকজন প্রার্থী হেরে যাওয়ায় তিনি কিছুটা চাপে পড়ে যান বলে দল সূত্রের খবর। কিন্তু ফল প্রকাশের পর যখন জানা গেল, শীর্ষ নেতৃত্বের ইচ্ছেয় পুরপ্রধান নির্বাচিত হবে, সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ফের পুরপ্রধান পদপ্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় আছেন তিনি। কারণ, ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে সঙ্গে নিয়ে দুবরাজপুর ব্লকের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি দখল, বোর্ডগঠন এবং পুর-নির্বাচনের আগে পীযূষবাবু-সহ একাধিক কংগ্রেস কাউন্সিলরকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর মূল কারিগরের ভূমিকায় ছিলেন প্রভাতবাবুই। সেই সুবাদে যদি সত্যিই প্রভাতবাবুর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে, পীযূষবাবুর কাছে একটা রাস্তাই খোলা, সেটা হল ভোটাভুটির রাস্তায় যাওয়া। তবে সে সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন পীযূষবাবু। তিনি বলেছেন, “পুরপ্রধান না হলেও ভোটাভুটির প্রশ্ন নেই। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।” অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, “আমরা দুবরাজপুর পুরসভায় দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন দেব। মাত্র তো কয়েক ঘণ্টা। অপেক্ষা করুন না।” |
|
|
|
|
|