|
|
|
|
উত্সবের মধ্যেই বৃষ্টি, মন খারাপ চন্দন-তনুশ্রীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়ূরেশ্বর |
ঝলমলে রোদ্দুর। মাঝেই হঠাত্ করে এক পশলা বৃষ্টি। প্রকৃতির এই খামখেয়ালিপনায় মুখ ভার ময়ূরেশ্বরের উঁচপুরের বধূ জয়ন্তী দলুই, সেরুনিয়ার সীমা ভল্লা কিংবা ষাটপলশার স্কুল পড়ুয়া চন্দন মণ্ডল, তনুশ্রী দাসদের।
বৃষ্টির কারণে এ বার নবমী ও দশমীতে পুজোর আনন্দ মাঠে মারা গিয়েছে। কার্যত ওই দু’দিন ঘরে কাটিয়ে দিতে হয়েছে তাঁদের। লক্ষ্মী পুজোর মেলায় সেই অপূর্ণ আনন্দ পুষিয়ে নিতে পারেননি বৃষ্টির কারণে। একই রকম ভাবে মুখ ভার চাষিদেরও। কারণ, বহু চাষির আউশ ধান মাঠে কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে বহু চাষির আমন ধানও। কিন্তু মাঝে মধ্যে বৃষ্টির জন্য সেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না, দুশ্চিন্তায় চাষিরা।
অন্য বছরের মতো এ বারও লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে স্থানীয় হাট ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালনায়, ষাটপলশায় ১৮ অক্টোবর থেকে মেলা বসেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ওই মেলায় শুধু ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার নয়, সাঁইথিয়া, লাভপুর, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থেকেও মানুষজন আসেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে বৃষ্টির জন্য ওই সমাগমে ভাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের। মেলা কমিটি তথা হাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অর্জুন মণ্ডল জানান, দৈনিক গড়ে ৩০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। বধূ জয়ন্তী দলুই, সীমা ভল্লারা বলেন, “বৃষ্টিতে দুর্গা পুজোর আনন্দ মাটি হয়েছে। ভেবেছিলাম লক্ষ্মী পুজোর মেলায় সেই আনন্দ পুষিয়ে নেব। কিন্তু বৃষ্টি হলে বাড়ি থেকে বেরোতে পারব কি না কে জানে!” স্কুল পড়ুয়া তনুশ্রী দাস, চন্দন মণ্ডলদের আক্ষেপ, “বৃষ্টির জন্য এ বার বাজি, পটকা ফাটানো হয়নি। লক্ষ্মী পুজোয় বাড়ি পোড়াতে পারব ভেবে জমিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু হঠাত্ হঠাত্ বৃষ্টির জন্য সব মাটি হয়ে গেল।”
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। লাভপুরের তেলেভাজার ব্যবসায়ী সুদাম দাস কিংবা কোটাসুরের মিষ্টি বিক্রেতা স্বপন পাল বলেন, “খরচ করে মেলায় স্টল দিয়েছি, লোক সমাগম না হলে লোকসানে পড়তে হবে।” লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে চাষিদেরও। ময়ূরেশ্বরের নবগ্রামের গণেশ মণ্ডল, লাভপুরের দরবারপুরের রহিম আলিরা বলেন, “কিছু জমিতে ধান কাটা হয়ে পড়ে আছে। কিছু জমিতে ধান পোঁতা হয়েছে। এই অবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না।” জেলা সহকারি কৃষি আধিকারিক (তথ্য) অমর মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত জেলায় যে হারে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে বিশেষ একটা ক্ষতি না হলেও, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সরকারি রিপোর্ট পাওয়ার পরে ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলা যাবে।” |
|
|
|
|
|