বিসর্জনের শোভাযাত্রায় মাইক না বাজিয়েই শোরগোল ফেলে দিয়েছে ঝালদার একটি পুজো কমিটি। এত দিন মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে ঠাকুরের বিসর্জন করত ঝালদা সাবর্জনীন দুর্গাপূজা কমিটি। এ বার তার বদলে শুধু ঢাক বাজিয়েই তারা প্রতিমা বিসর্জন দিলেন। জাঁকজমক করে শোভাযাত্রা করার খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকায় তারা লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন শনিবার অন্নকূট উত্সব করলেন। পুজো কমিটির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ঝালদাবাসী। পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ বলেন, “অন্য বছর আমরাও মাইক বা সাউন্ডবক্স বাজিয়ে শোভাযাত্রা-সহকারে প্রতিমা বিসর্জন করতাম। কিন্তু এ বছর আমরা ঠিক করি ওই ভাবে বিসর্জন দেওয়া হবে না। তার বদলে ঢাক বাজিয়ে বিসর্জন দেওয়া হবে।” কেন এই ভাবনা? তিনি জানান, মাইকের তীব্র শব্দে অনেকের অসুবিধা হত। আবার ওই ভাবে শোভাযাত্রা করারও দাবি কম ছিল না। তা ছাড়া শোভাযাত্রার ফলে শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া পুরুলিয়া-ঝালদা রাস্তাতেও দীর্ঘক্ষণ যানজট লেগে থাকত। তার বদলে শোভাযাত্রার খরচ ছেঁটে অন্নকূট করে অনেক বেশি তৃপ্তি পাওয়া গিয়েছে। পুজো কমিটির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ঝালদার বাসিন্দারা। ঝালদা গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা অপর্ণা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পুজো কমিটির এই উদ্যোগকে মুক্তকন্ঠে স্বাগত জানাচ্ছি।” ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার নিজে এই পুজো কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, “তীব্র শব্দে মাইক বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে বিসর্জনে এ বার অনেকেই আপত্তি করেছিলেন। তাই আমরা ঠিক করি সাধারণ মানুষকে নিয়ে অন্নকূট উত্সব করব।” ঝালদা স্টেশন রোডের বাসিন্দা স্বাতী চক্রবর্তী, দোলা সরকাররাও জানান, যে ভাবে তীব্র শব্দে মাইক বাজিয়ে কোনও কোনও শোভাযাত্রা যায়, তাতে এলাকার সবারই কষ্ট হয়। তাঁদের মতে ওই পুজো কমিটি যে ভাবে এ বার বিসর্জন করেছে, তা অন্যদের অনুসরণ করা উচিত।
|
এলাকার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কর মুখোপাধ্যায়, অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তাটি বন্ধ হয়ে পড়ায় আমরা অসুবিধায় পড়েছি। বাড়িটির একাংশ ধসে পড়লেও অন্য অংশটি খুব বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেটিও যে কোনও সময় ধসে পড়তে পারে। প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।” বাসিন্দারা জানান, সমস্যার কথা পুরকর্তাদেরও তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা আমল দেননি। তাঁদের দাবি, দ্রুত বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হোক।” ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি দে বলেন, “শুধু রাস্তাটি পরিষ্কার করলেই হবে না। পুরো বাড়িটি না ভাঙলে যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। বাড়ির মালিক বাইরে থাকে। বাড়িটি ভাঙার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।”
|