প্রকাশ্য দিবালোকে সিপিএমের একটি লোকাল কমিটির অফিস দখল করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেলে পাড়ুই থানার সাত্তোর অঞ্চলের ঘটনা। সিপিএমের দাবি, ওই দলীয় কার্যালয়টি দখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা আগেই জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে তারা দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন বিনা বাধায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে রীতিমতো মিছিল করে এসে তৃণমূল ওই পার্টি অফিসের দখল নেয়। বোলপুরের মহকুমাশাসক মলয় হালদার বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে আমরা কোনও চিঠি হাতে পাইনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিএমের ‘উত্তর কোপাই লোকাল কমিটি’র ওই দলীয় কার্যালয় বছর তিনেক ধরে বন্ধ। এ দিন সাত্তোর অঞ্চলের তৃণমূল সম্পাদক শেখ মুস্তফার নেতৃত্বে শ’ দু’য়েক লোক নিয়ে একটি মিছিল বের হয়। তৃণমূলের দাবি, মিছিলে থাকা কর্মীরা সম্প্রতি সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ওই মিছিল সিপিএমের ওই পার্টি অফিসে পৌঁছয়। কার্যালয়ের তালা খুলে তৃণমূল কর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই কার্যালয়ের ছাদে তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। |
মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন এক সময়ের (১৯৯৩-৯৮) স্থানীয় পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য শেখ নৌসাদ, গ্রাম কমিটির সদস্য আব্দুল খাবির, শেখ নিয়ামতের স্থানীয় স্তরের নেতা-কর্মীরা। শেখ নিয়ামত বলেন, “আমরা স্বেছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছি দলীয়। সিপিএমের কার্যালয়টিও তুলে দিয়েছি।” শেখ মুস্তফার দাবি, বামেদের অপশাসনে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিলেন। এখন এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে তাঁরা খুশি। তাই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। অন্যের পার্টি অফিস দখলে তাঁর যুক্তি, “স্থানীয় বাসিন্দাদের টাকায় সিপিএম ওই কার্যালয় গড়েছিল। এলাকার মানুষই ওই কার্যালয় চালাতেন। তাঁরা আমাদের দলে যোগ দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই ওই কার্যালয় তৃণমূলের হেফাজতে থাকবে।”
এ দিনের ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক বলে জানিয়েছেন সিপিএমের বোলপুর জোনাল সম্পাদক উৎপল রুদ্র। তাঁরা দাবি, “ওই দলীয় কার্যালয়টি দলের জেলা সম্পাদকের নামে রয়েছে। কার্যালয়টি যে দলেরই সম্পত্তি, তার সব রকমের কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা সেই নথি জমা করে ওই কার্যালয়টি দখলের আশঙ্কার কথা পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। তারপরেও তা আটকানো গেল না।” শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে আগামী পদক্ষেপ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। |