মহেন্দ্র জেনা • শান্তিনিকেতন |
প্রায় চার দশকের পুরনো বিশ্বভারতীর ‘অধ্যাপক সভা’কে দু’টি পৃথক সংগঠনে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। একই সঙ্গে সংগঠনের প্রতি তাঁর পরামর্শ, শুধু মাত্র শিক্ষকদের বেতন ও অবসরের সময় বাড়ানোর দাবিতেই ব্যস্ত না রেখে বিশ্বভারতীর হৃত গৌরব ফেরাতে মন দিন। অধ্যাপক সভার সদস্যদের একটি বড় অংশই অবশ্য উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ।
সম্প্রতি ই-মেল পাঠিয়ে অধ্যাপক সভার সভাপতিকে উপাচার্য ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। নির্দেশে স্নাতক থেকে গবেষণা স্তরের শিক্ষকদের এবং বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষকদের জন্য দু’টি পৃথক সংগঠন (‘অধ্যাপক সভা ১’ ও ‘অধাপক সভা ২’) গড়তে বলা হয়েছে। সেখানে অধ্যাপক সভার বর্তমান বোর্ডকে সুশান্তবাবু স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, হয় বর্তমান নির্বাচিত সদস্যদের নিয়েই নতুন ভাবে বোর্ড পুনর্গঠন করুন অথবা বর্তমান বোর্ড ভেঙে নির্বাচন করে নতুন দু’টি সংগঠন গড়ে তুলুন। নির্দেশের খবর চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বভারতীর অন্দরে।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ১৯৬৯ সালে বিদ্যাভবন, পাঠভবন, শিক্ষাসত্র-সহ ন’টি ভবনকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সভা। লক্ষ্য ছিল শিক্ষকদের একছাতার তলায় নিয়ে এসে বিশ্বভারতীর পঠনপাঠনের মানোন্নয়ন করা। তবে গত কয়েক মাস ধরে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি, অবসরের সময় ৬০ থেকে ৬৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছিল অধ্যাপক সভা। এই পরিস্থিতিতে গত ১৪ অক্টোবর পাঠানো উপাচার্যের ওই নির্দেশ এবং পরামর্শ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহল। অধ্যাপক সভার সভাপতি শান্তিরঞ্জন মিত্রকে পাঠানো ওই মেলে সুশান্তবাবু জানিয়েছেন, একমাত্র ‘প্রাক্তনীদের সংগঠন’ ছাড়া অন্য কোনও সংগঠনের উল্লেখ বিশ্বভারতীর নিয়মে নেই। ১৯৫১ সালের বিশ্বভারতী অ্যাক্টে-র ২৯ নম্বর ধারার ৩(গ), ৬(১৯) ও ২২(বি) উপধারার উল্লেখ করে তিনি দাবি করেছেন, ‘স্কুল’ ও ‘পাঠশালা’ স্তরের শিক্ষকদের সঙ্গে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও গবেষণায় কর্মরত শিক্ষকদের একটি স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। তার নিরিখে উপাচার্য প্রথম স্তরকে ‘শিক্ষক’ এবং দ্বিতীয় স্তরকে ‘ফ্যাকাল্টি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। |