এক ওভারে তিরিশ রানের ঝটকা খাওয়ার পরের দিনই ইশান্ত শর্মার জন্য তিনটে অপ্রত্যাশিত ‘উপহার’ এসে পড়ল!
এক) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ চারটে ওয়ান ডে-র ভারতীয় দলেও দিল্লির পেসার বহাল তবিয়তে নির্বাচিত। জাতীয় নির্বাচকেরা বাকি সিরিজের জন্য পনেরো জনের একই দল রেখে দিলেন রবিবার।
দুই) মোহালি ম্যাচে ইশান্তের ঘাতক জেমস ফকনারের সান্ত্বনা ঝরে পড়েছে অসহায় বোলারের উপর।
তিন) স্বয়ং ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন ইশান্তের পাশে। যিনি কিনা চলতি সিরিজের তৃতীয় ওয়ান ডে-তে এক ওভারে তিরিশ রান বিলোনোর বাইরেও প্রথম ম্যাচে ৮ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৭.৭ ইকনমি রেটে শেষ করেছিলেন!
ধোনি শনিবার ম্যাচ শেষে “আমাদের বোলারদের কি মুখের কাছে চামচ ধরে খাওয়ানোর মতো বোলিং করাটা শেখাতে হবে?” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে ফের সেই ‘ক্যাপ্টেন কুল’। আজ তিনি বলে দিলেন, “কোনও প্লেয়ারকে একটা-দুটো ম্যাচের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ছাঁটাই করাটা অন্যায়। তা ছাড়া, দলে ঘনঘন বদল করাটা সেই দলের ভবিষ্যতের জন্য খারাপ হতে পারে।” ধোনির মতে, একটা-দুটো ম্যাচ হারলেই প্রথম একাদশের কোনও প্লেয়ারকে ‘তুমি ভাল নও’ বলে তখনই বাদ দেওয়াটা ঠিক নয়। “দলের খারাপ সময়ে প্লেয়ারদের পাশে দাঁড়ানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওরা দলের এক-একটা অঙ্গ। ওরাই সবচেয়ে প্রতিভাবান। ওদের পাশে সবাই দাঁড়ান,” বলছেন ধোনি। |
রাঁচিতে একটি অনুষ্ঠানে ভাইচুংয়ের সঙ্গে ধোনি। ছবি: পিটিআই। |
আর ফকনার? তিনি আবার ইশান্তকে রীতিমতো বরাভয় দিয়ে বলেছেন, “মোহালির ঘটনায় ভয় পেও না ইশান্ত। প্রত্যেক ভাল বোলারের জীবনেই এমন একটা ওভার আসতে পারে। যখন সে মাঠে নিজেকে একজন বোকা হিসেবে আবিষ্কার করে। তবে সেটাকে অফিসে একটা খারাপ দিন ভেবে ভুলে যাওয়াই ভাল।” এতেই না থেমে ইশান্তের উদ্দেশে ফকনারের আরও সান্ত্বনা বাণী “সীমিত ওভারের ম্যাচে ও রকম ডেথ ওভারে বল করাটা এমনিতেই কঠিন। আমি জানি। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বল হাতে আমাকেও কয়েক বার এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু আবার এমন পরিস্থিতিও তোমার সামনে আসবে যখন তুমি ভাল একটা ওভার করে দলকে জেতাবে। এটাই ক্রিকেট। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
যদিও সুনীল গাওস্করের মতো কিংবদন্তি ভারতীয় বোলিংকে একহাত নিয়েছেন। সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলে গাওস্কর বলেছেন, “মোহালিতে ডেথে ইশান্ত পরের পর লেংথ বল করে গেল। বিনয় কুমার একগাদা ফুলটস করল। ব্যাটসম্যানের পাওয়ারফুল হিটিং-কে যখন বোলার ভয় পায়, তার চেয়ে হতাশাজনক ক্রিকেটে বোধহয় আর কিছু নেই।” ইশান্ত তাঁর পাঁচ বছর আগে করা ভাল বোলিং ভাঙিয়ে খাচ্ছেন দাবি করে গাওস্কর বলেছেন, “ইশান্ত এক বার মার খেতে শুরু করলে চাপে পড়ে যাচ্ছে। মুশকিল হল, ওকে এখনও দেখা হচ্ছে ২০০৮ অস্ট্রেলিয়ায় রিকি পন্টিংয়ের বিরুদ্ধে ওর দুর্ধর্ষ স্পেলের ভিত্তিতে। কিন্তু তার পর যে পাঁচ-পাঁচটা বছর কেটে গিয়েছে!” |