নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
ধীরে হলেও ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত খানাকুলের দু’টি ব্লকের সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। জমে থাকা জল নামতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছে প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে গত কয়েক দিনের জমা জলে দুই ব্লকের মোট ৫০৩৮ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই কারণে এ বার চাষিদের বিকল্প চাষে উৎসাহ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা। চাষিরা অবশ্য মৃতপ্রায় ধানের চারাগুলিকে সজীব করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার খানাকুলের এক নম্বর ব্লকে আউস এবং আমন ধান চাষ হয়েছিল যথাক্রমে ৮৮০ হেক্টর এবং ৯১২০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত জল দাঁড়িয়েছিল আউস চাষ হওয়া ১১০ হেক্টর জমিতে এবং আমন চাষ হওয়া ১৩৬০ হেক্টর জমিতে। পাশাপাশি, খানাকুল-২ ব্লকে সে ভাবে আউসের চাষ না হলেও আমন চাষ করা হয়েছিল ৬৩০০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ডুবে রয়েছে ৩৫৬৮ হেক্টর জমি। দু’টি ব্লকের ডুবে থাকা মোট ৫০৩৮ হেক্টর জমির ধানই নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর।
আরামবাগ মহকুমার ভারপ্রাপ্ত কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, “স্থির জলে আমন ধান ৭২ ঘণ্টা অব্দি ডুবে থাকলে তা পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ বার তার চেয়ে বেশি দিন জমিতে জল ছিল। সেই কারণে ওই সব জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে আমরা এক রকম নিশ্চিত। জল পুরোপুরি নামলে এ ব্যাপারে আরও বিশদ তথ্য মিলবে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে।”
দুটি ব্লকেই যে সব জমির জল নেমে গিয়ে ধান জেগে উঠেছে, সেই সব এলাকার চাষিরা জমিতে সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে যে ভাবে ধানের প্রাণ সঞ্চারে উদ্যোগী হয়েছেন, তাতে তাঁদের কারিগরি পরামর্শ দিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন মহকুমা ও ব্লকের কৃষি দফতরের বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, ধানের বিকল্প হিসেবে চাষিদের মুসুর, খেসারি, সরষে এবং বাদাম চাষেও উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। মহকুমার ভারপ্রাপ্ত কৃষি আধিকারিক বলেন, “বন্যা পরবর্তী কৃষি ভাবনা নিয়ে আমরা চাষিদের সঙ্গে আলোচনায় বসব।”
খানাকুল-১ ব্লকের চকভেদুয়া গ্রামের চাষি রেজাউল মল্লিক বলেন, “কৃষি দফতরের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন প্রয়োগ করছি। রোগপোকার প্রতিষেধকও দিচ্ছি। দেখি ধানগাছ বাঁচে কি না।” একই ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন আরও অনেকেই।
|