নিজস্ব সংবাদদাতা • চণ্ডীতলা |
চণ্ডীতলার কুমিড়মোড়া অঞ্চল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ভোলানাথ সাধুখাঁর (৫০) অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। রবিবার তিনি মারা যান। তাঁর পরিবার এবং
|
ভোলানাথ সাধুখাঁ।
—নিজস্ব চিত্র। |
তৃণমূল অভিযোগ, ভোলানাথবাবুকে মারধর করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছিল সিপিএমের কিছু লোকজন। সেই দৃশ্য মোবাইলে রেকর্ড করে এমএমএসের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই কারণে আহত হওয়ার পাশাপাশি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মৃত্যুর জন্য ওই যুবকদেরই দায়ী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভোলানাথবাবুর স্ত্রী। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম।
এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার, লক্ষ্মীপুজোর দিন বাজার করে মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন ভোলানাথবাবু। কুমিড়মোড়া দক্ষিণপাড়ার কাছে অন্য একটি বাইকের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। ধাক্কাধাক্কি হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, এলাকার সিপিএমের কিছু ছেলে ইচ্ছে করেই বাইক থেকে ভোলানাথবাবুকে ফেলে দিয়ে হাসাহাসি করতে থাকে। তা নিয়েই বচসা বাধে। ভোলানাথবাবু এক যুবককে চড় মারেন। বিষয়টি তখনকার মতো মিটে গেলেও সন্ধ্যায় ওই যুবকেরা দলবল জুটিয়ে ভোলানাথবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভোলাদার কাছে জবাবদিহি চায় ওরা। মানুষটাকে রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি করে। শেষে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে।”
মৃতের স্ত্রী করুণাদেবী জানিয়েছেন, ধাক্কাধাক্কিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ভোলানাথবাবু। শুক্রবার তাঁকে উত্তরপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
রবিবার সন্ধ্যায় চণ্ডীতলা থানায় দাঁড়িয়ে মৃতের ভাই শ্রীকান্তবাবুর বলেন, “দাদা ক্ষমা চাইছেন, সিপিএমের লোকেরা সেই ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছিল। সেই ছবিই ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে দাদা মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন। দাদার মৃত্যুর জন্য ওরাই দায়ী।”
চণ্ডীতলার সিপিএম নেতা ভক্তরাম পান দাবি করেন, “যাঁর সঙ্গে বাইকে ধাক্কা লাগে, ভোলানাথ তাঁকে চড় মারে। সেই কারণে পাড়ার লোকজন ভোলানাথের বাড়িতে গিয়েছিল। কেউ মারধর করেনি। আমাদের কেউ সেখানে ছিলও না। এখন এর মধ্যে রাজনীতি কোথা থেকে আসছে বোধগম্য হচ্ছে না।” |