রাজ্য সরকার কড়া অবস্থানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে কোণঠাসা করার পরে দার্জিলিং পাহাড়ে দলীয় সংগঠনকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে তৎপর হচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আগামী ২৪ অক্টোবর পাহাড়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতেই আনুষ্ঠানিক ভাবে পাহাড়ে তৃণমূলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। ওই দিনই পাহাড়ে তৃণমূলের প্রথম রাজনৈতিক সম্মেলন ও কর্মিসভা হবে দার্জিলিং জেলা সদরে। সেই কর্মসূচিকে সামনে রেখেই সংগঠন মজবুত করার কাজে নামছে তৃণমূল। প্রথম দফায় তাঁরা প্রায় ২০ হাজার সদস্য সংগ্রহের কর্মসূচি নিয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়।
তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা হয়েছে, বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বন্ধের রাজনীতিতে পাহাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দা বীতশ্রদ্ধ। বন্ধ মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক দৃঢ়তা ও কড়া মনোভাব পাহাড়ের মানুষের বড় অংশ সমর্থন করছে। সে দিকে লক্ষ রেখেই এ বার পাহাড়ে তৃণমূলের শাখা বিস্তারের কর্মসূচি নিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। সেখানকার ছাত্র, যুব থেকে শুরু করে মহিলাদের সদস্য করার দিকে নজর দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকী, মোর্চার সদস্যদের একাংশ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা আছে বলে তৃণমূল সূত্র থেকে জানা গিয়েছে।
দলের সদস্যকরণের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম এ দিনই ছাপতে দেওয়া হয়েছে। মুকুলবাবু জানান, সোমবারের মধ্যেই পাহাড়ে ওই ফর্ম পৌঁছে দেওয়া হবে। বস্তুত, মুকুলবাবুর উদ্যোগেই পাহাড়ে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তারের কাজ এ মাসের গোড়া থেকে শুরু হয়েছে। এ দিন মুকুলবাবু বলেন, “পাহাড়ের মানুষ অশান্তি চান না। মমতাদির নেতৃত্বে রাজ্যে যে উন্নয়নের কাজ চলছে, তাতে তাঁরা পুরোপুরি অংশ নিতে চান।” ফলে মোর্চার প্রতি ক্ষুব্ধ পাহাড়ের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ তাদের দিকে আসবে বলে তৃণমূল আশাবাদী।
বস্তুত, চলতি মাসেই কার্শিয়াঙে আয়োজিত তৃণমূলের এক সমাবেশে পাহাড়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মীদের একটা বড় অংশ যোগ দিয়েছিল। তাঁদের অধিকাংশই মোর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর পরেই জিটিএ-র ৫০০ জন অস্থায়ী কর্মী যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের কর্মী সংগঠনে। সেখানে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের শাখাও খোলা হয়েছে।
দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “লোকসভা ভোটের আগেই পাহাড়ে আমাদের শক্তপোক্ত সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।”
এমনিতেই রাজ্য সরকারের কড়া অবস্থান এবং পাহাড়বাসীর বিরূপ মনোভাবে মোর্চা বেশ কোণঠাসা। তার উপর তাদের খাস তালুকে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা গুরুঙ্গদের বিব্রত। মোর্চা নেতৃত্বের একাংশ, বিশেষত হরকা বাহাদুরের মতো বিধায়করা চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙে থাকাকালীনই তাঁর সঙ্গে অন্তত এক বার দেখা করার। বস্তুত, এ দিন মুকুলবাবুকে ফোনও করেছিলেন হরকাবাহাদুর। তবে মোর্চা বিধায়কের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে, তা অবশ্য এ দিন জানাতে চাননি মুকুলবাবু।
|