দেনার টাকা শোধ দেওয়ার নামে বাড়িতে ডেকে বন্ধুকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হল মালদহের কালিয়াচকের এক যুবক। পুলিশ জানায়, নিহত পিন্টু আলির (২২) দেহ শনিবার সকালে মিলেছে ধৃত রেজাউল হকের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে। গত ১৪ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কালিয়াচক থানার মোথাবাড়ি এলাকার মেহেরাপুর কুড়িয়াটার গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু।
মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বিবাদের জেরেই বাড়িতে ডেকে পিন্টুকে খুন করা হয়। রেজাউলকে জেরা করে তার বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পিন্টুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধরা হয়েছে রেজাউলকে।”
পিন্টু আলি।—নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় সূত্রের খবর, পিন্টু কুড়ানটোলা গ্রামের বাসিন্দা, বন্ধু রেজাউলের সঙ্গে জমি কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। দু’জনের একে অপরের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, মাস তিনেক আগে পিন্টুর কাছ থেকে রেজাউল ৩ লক্ষ টাকা ধার নেয়। সেই টাকা সে ফেরত না দেওয়ায় দুই বন্ধুতে বচসা হয়। গত ১৪ অক্টোবর রেজাউল সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে পিন্টুকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় বলে জেনেছে পুলিশ। সে দিন থেকেই পিন্টু নিখোঁজ বলে পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়। শুক্রবার পিন্টুর পরিবার মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায়। পিন্টুর বাবা বাবা তৈমুর শেখ বলেন, “পিন্টু নিখোঁজ হওয়ার পরেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল। ও যে রেজাউলের বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল, সেটা শুক্রবার ফের ফাঁড়িতে গিয়ে জানাই। এ দিন খারাপ খবরটা পেলাম!”
পুলিশ শুক্রবারই রেজাউলকে আটক করে জেরা করতে শুরু করে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, শুক্রবার রাতে টানা জেরায় ভেঙে পড়ে রেজাউল পুলিশকে জানিয়েছে, ১৪ অক্টোবর রাতে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রথমে কিছুক্ষণ পিন্টুর সঙ্গে গল্প করে সে। তারপরে ধারের ৩ লক্ষ টাকা শোধ করতে পারবে না বলে পিন্টুকে জানিয়ে দেয়। পিন্টু খেপে গিয়ে চেঁচামেচি শুরু করলে রেজাউল তাঁকে শান্ত করে ফের গল্প শুরু করে। তার পরে এক সময় পিছনে থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে পিন্টুকে খুন করা হয়। দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। দুর্গন্ধ যাতে না ছড়ায়, সে জন্য ওই ট্যাঙ্কের উপরে মাটিও চাপা দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, রেজাউল গ্রেফতার হতেই তার পরিবারের সদস্যেরা পালিয়ে যান। পিন্টু খুনে তাঁদেরও ভূমিকা থাকতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে। |