সচিন তেন্ডুলকরের অবসরের খবরের বিষণ্ণতার দিনেই ওর প্রাণপ্রিয় ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য সুখবর ধোনির দলের নতুন আন্তর্জাতিক মরসুমের পারফেক্ট শুরু। অশ্বিনের মতো ধুরন্ধর স্পিনার দু’ওভারে ৪১ রানের পিটুনি খেয়েছে। টিমের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার ইশান্ত শর্মার ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়েও ঝুলি খালি। তবু বলব, চিন্তার কিছু নেই। যুবরাজের আরও একটা স্বপ্নের কামব্যাক আর ধোনির সঙ্গে ওর মাস্টারক্লাস পার্টনারশিপটা ভারতকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দুশো রানের উপর টার্গেট তাড়া করা সত্ত্বেও সহজে ছ’উইকেটে জেতালই শুধু নয়। শিক্ষানবীশ ক্রিকেটারদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল, কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় বড় রান তাড়া করে জিততে হয়। এটাও শেখার, একজন ব্যাটসম্যান যখন তুখোড় ফর্মে পেটাচ্ছে, তখন তুমি নিজে সেরা ফিনিশার হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে তোমার পার্টনারকে সুযোগ করে দেবে। |
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে তৃতীয় সর্বাধিক রান তাড়া করে জেতার দিনে যুবি-ধোনি অবিশ্বাস্য পার্টনারশিপ সেটাই দেখাল। যুবরাজ তো ওর ক্লাস প্রমাণ দিয়েই চলেছে। ক্যানসারকেও হারানো ছেলেটা আবার জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর অবিশ্বাস্য খেটেছে। ফ্রান্সে কঠিনতম ট্রেনিং করেছে দিনের পর দিন। এ দিন চাপের মুখে ৩৫ বলে নটআউট ৭৭ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসটা পাঁচটা বাউন্ডারির পাশাপাশি আটটা ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো। জেতার আস্কিং রেট যখন এগারোর উপর যাচ্ছে, সেই কঠিন পরিস্থিতিতে শেষ ছ’ওভারে পাল্টা আক্রমণ করল নিখুঁত গেমপ্ল্যানে। তার পরেও স্ট্রাইকরেট ২২০। কিন্তু আমি মহাষষ্ঠীর রাতে টিভিতে অবাক হয়ে দেখলাম, ওই সময় উল্টো দিকে ধোনির ব্যাটিং। বিশ্বের সেরা ফিনিশার যথাযথ সংযম দেখিয়ে সিঙ্গলস নিয়ে-নিয়ে যত বেশি পারল, যুবরাজকে স্ট্রাইক দিয়ে গেল। একেবারে নিঁখুত গেমপ্ল্যান। ২১ বলে ধোনি ২৪ নটআউট। কিন্ত এক বারও মনে হয়নি, তাড়াহুড়ো করছে।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতের বড় রান তাড়া করার সময়েও ধোনির নীচের দিকে নামা নিয়ে অনেক কথা হয়ে থাকে। কিন্তু আমি মনে করি ধোনির উপরের দিকে নামার দরকার নেই। ও ঠিকই করে। আগে নামলে যে ফিনিশটা ও দুর্দান্ত ভাবে করে থাকে সেটা হবে না। ওর ফিনিশিংয়ের একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে। উপরের দিকে নামলে সেটা ধাক্কা খেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া দু’শো পেরিয়েও জিততে পারল না, কারণ ভারতের ফিনিশ করার প্লেয়াররা বেশির ভাগ নীচের দিকেই নামে। ধোনি, যুবরাজ, জাডেজা। টি-টোয়েন্টিতে যেটা ভীষণ জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার আবার ঠিক উল্টো। টপ অর্ডারই যা ভরসা। এ দিনও ওদের ব্যাটিংয়ে সেটা বোঝা গিয়েছে। আসন্ন ওয়ান ডে সিরিজেও এ ব্যাপারটা ওদের ভোগাবে মনে হয়।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া ২০১-৭ (ফিঞ্চ ৮৯, ম্যাডিনসন ৩৪, ভুবনেশ্বর ৩-৩৫, বিনয় ৩-২৬)
ভারত ২০২-৪ (যুবরাজ ৭৭ নঃআঃ, শিখর ৩২, ম্যাককে ২-৫০)
|