কংগ্রেস-প্রশ্নে পলিটব্যুরো অমীমাংসিতই
বিজেপি-কে রুখতে অ-সাম্প্রদায়িক দল স্বাগত। কিন্তু আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা আটকাতে কংগ্রেসের হাত ধরা হবে কি না, সেই বিতর্কের এখনও কোনও নিষ্পত্তি করতে পারল না সিপিএমের পলিটব্যুরো।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান প্রতিহত করতে আগামী ৩০ অক্টোবর দিল্লিতে সব ধর্মনিরপেক্ষ দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি সম্মেলন করছে বামেরা। চার বাম দল ছাড়াও ওই সম্মেলনে থাকার সম্মতি জানিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। আসতে পারেন জয়ললিতাও। যোগাযোগ করা হয়েছে বিজেডি এবং জেডিইউ নেতৃত্বের সঙ্গেও। কিন্তু ওই সম্মেলনে কেন অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি কংগ্রেসকে ডাকা হবে না, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল সিপিএমের অন্দর মহলেই। আজ পলিটব্যুরো বৈঠকে আলোচনা হয়েও সমাধান সূত্র অধরাই থেকে গিয়েছে।
গোটা বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে উস্কে দিয়েছে পুরনো সেই বিতর্ক রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাবে সিপিএমের সামনে বড় শত্রু কে? কংগ্রেস না বিজেপি? নির্বাচন কমিশন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা করে লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে। এক দিকে মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, সংস্কারের মাধ্যমে উদারীকরণের পথে হাঁটা কংগ্রেস, অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা বিজেপি। এদের মধ্যে আসন্ন নির্বাচনে দলের প্রধান রাজনৈতিক শত্রু কে হবে, তা নিয়ে কার্যত এখন একাধিক শিবিরে বিভিক্ত সিপিএম!
সিপিএম সূত্রের খবর, পারস্পরিক মতান্তরের এই আবহেই আজ দিল্লিতে দলের পলিটব্যুরো বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল। দলের একাংশের মতে, আসন্ন নির্বাচনে যেখানে ইউপিএ সরকারের আর্থিক নীতি সিপিএমের প্রচারের বড় হাতিয়ার হতে চলেছে, সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলালে ভোটারদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে দল। পরিবর্তে বরং ভোটের পরে পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হোক। পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতৃত্ব কংগ্রেসের প্রতি নরম মনোভাব নিয়ে চলার পক্ষপাতী। রাজ্য নেতাদের মতে, সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা যাবে। সিপিএম-বিরোধী ভোট ভাগ হলে ভোটের ময়দানে ফায়দা পাবেন বাম প্রার্থীরা।
তবে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে বিজেপি-কে রুখতে সিপিএম যে তৎপর থাকবে, তা তারা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু আজ বলেছেন, “৩০ অক্টোবর দেশের বিভিন্ন ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক দলগুলির সম্মেলন ডাকা হয়েছে।” দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে নিয়ে ওই সম্মেলনে তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকেরা হাজির থাকবেন বলে সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব আশ্বস্ত করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে।
তবে গত লোকসভার মতোই এ বারও যে ভাবে নির্বাচনের আগে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ দলকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে, তা ফের তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনাকে উস্কে দিয়েছে। যদিও দলের একাংশের বক্তব্য, দুর্বল তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার চেয়ে বিজেপি-র মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রোখা অনেক বেশি জরুরি। তাই জাতীয় স্তরে তৃতীয় ফ্রন্টের চেয়ে সিপিএম এখন রাজ্য স্তরে আঞ্চলিক জোট গঠনে জোর দিতে চাইছে। দলীয় সূত্রের খবর, যে রাজ্যগুলিতে সামনে বিধানসভা ভোট, সেখানে আঞ্চলিক জোট গড়া হবে কি না, তা নিয়ে আজকের বৈঠকে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
বিমানবাবু অবশ্য বলেছেন, “আজকের বৈঠকে মূলত ওই সম্মেলনের বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। এর সঙ্গে তৃতীয় ফ্রন্ট বা লোকসভা ভোটের সম্পর্ক নেই।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.