নেই মাতৃযান, সমস্যায় প্রসূতিরা
রকারি মাতৃযান পরিষেবা নিয়মিত না মেলার অভিযোগ উঠেছে সালানপুরে। প্রসূতিদের দাবি, এই পরিষেবা যাতে সহজে এবং নিয়মিত পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সালানপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপিএল তালিকাভুক্ত প্রসূতীদের জন্য এই পরিষেবা চালু করেছে সরকার। প্রসূতিরা চাইলেই মাতৃযানে করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বিনা খরচে তাঁদের নিয়ে আসা হবে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য, শিশু মৃত্যুর হার ও মহিলাদের প্রসবকালীন ঝুঁকি কমানো।
ব্লক স্তরের প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো সালানপুরেও এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু ব্লকের মহিলারা নিয়মিত এই পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। পিঠাইকেয়ারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক পদাধিকারী জানান, গোটা জেলায় এক জন ঠিকাদারই দরপত্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মাতৃযান বানানোর বরাত পেয়েছেন। ফলে এতগুলো উন্নতমানের যান সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না তাঁর পক্ষে। এমনকী কোনও গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে তড়িঘড়ি মেরামত করাও সম্ভব হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে বর্ধমান জেলা পরিষদ মাতৃযান হিসেবে ব্যবহারের জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেয়। স্থানীয় একটি সংস্থাকে দিয়ে সেটি চালানোর উদ্যেগও করে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু সেটি পড়েই থাকত বলে অভিযোগ। পরে আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী ও বারাবনির প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ সরকারও পিঠাইকেয়ারী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দেন। কিন্তু সেই দু’টিও বিপিএল তালিকাভুক্ত প্রসূতিরা নিয়মিত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ যে কিছুটা হলেও সত্যি তা স্বীকার করেছেন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়। তবে তাঁর দাবি, “সমস্যা অনেকটাই মিটিয়ে এনেছি। এখন একটা গাড়ি নিয়মিত দৌড়চ্ছে।” তাপসবাবু আরও জানান, বর্তমানে একটি গাড়ি রূপনারায়ণপুরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে একটি গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা ঠিকমতো চালাচ্ছে না, এই অভিযোগ পেয়ে গাড়িটি বর্তমানে মুক্তাইচণ্ডী পাহাড়ের আনন্দমেলা কমিটির তত্বাবধানে দেওয়া হয়েছে। আর একটি গাড়ি রয়েছে সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে। তাপসবাবুর দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের সময় গাড়ি চলাচলে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে সমস্যা শীঘ্রই মিটে যাবে।
সালানপুরে অনিয়মিত মাতৃযান চলাচলে ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি শ্যামল মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে একাধিক প্রত্যন্ত গ্রাম আছে। সেখানে নিয়মিত যানবাহন চলে না। ওইসব অঞ্চলে প্রসূতিদের একমাত্র ভরসা মাতৃযান। কিন্তু সেই পরিষেবাও নিয়মিত মিলছে না। শ্যামলবাবুর আরও অভিযোগ, মাতৃযান না মেলায় বাধ্য হয়ে চড়া দরে গাড়ি ভাড়া করতে হয় প্রসূতিদের পরিবারকে। একই অভিযোগ সিপিএমের বারাবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, বাম আমলে জেলা পরিষদ ও তাঁদের সাংসদ, বিধায়কেরা পিঠাইকেয়ারী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সেগুলি ঠিকমতো চালাতে না পাড়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষজন।
সালানপুর ব্লকটি বারাবনি বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত। এলাকার বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানতেন না তিনি। অবশ্য তাঁর আশ্বাস, সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.