নিজস্ব সংবাদদাতা • কার্শিয়াং ও জলপাইগুড়ি |
পরিবহণ ধর্মঘটের মধ্যেই পাহাড়ে গিয়ে লগ্নি সংস্থা সারদায় টাকা রেখে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি চেক বিলি করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৃহস্পতিবার পাহাড়ের তিন মহকুমায় ওই ধর্মঘট ডেকেছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রভাবিত গাড়ি মালিক ও চালকদের একটি সংগঠন।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এ দিন উত্তরবঙ্গের সমতলেও সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে সরকারি চেক বিলি করা হয়। গৌতমবাবু এ দিন সকালে প্রথমে জলপাইগুড়ি শহরে চেক বিলি করেন। তারপরে তিনি কার্শিয়াঙে যান। দু’জায়গা মিলিয়ে প্রায় ৭৫০ জনের হাতে ৫০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, শ্যামল সেন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এই দুই জায়গায় সারদায় যাঁরা ১০ হাজার বা তার কম টাকা রেখেছিলেন, এমন আমানতকারীদেরই বেছে নেওয়া হয়েছে। এদিন সরকারের তরফে তাঁদের আমানতের পুরোটাই ক্ষতিপূরণ বাবদ বিলি করা হয়েছে। |
গৌতমবাবু বলেন, “কোনও বেসরকারি লগ্নি সংস্থায় প্রতারিতদের পাশে কোনও সরকার এই প্রথম দাঁড়াল। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নানা ভাবে আর্থিক বাধা দেওয়া হলেও মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সারদা-কান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দিতে বদ্ধপরিকর। তাঁর কথায় ও কাজে কোনও ফারাক নেই। সেটাই ফের পাহাড় ও সমতলের মানুষ আবার বুঝলেন।” তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের যত জন শ্যামল সেন কমিশনের কাছে আবেদন করেছেন, তার যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখে তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, সকলেই পর্যায়ক্রমে ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু টাকা হলেও পাবেন বলে গৌতমবাবু আশ্বাস দিয়েছেন। চেক পেয়ে দৃশ্যতই খুশি নিউ জলপাইগুড়ির বাসিন্দা তন্দ্রা সাহা বলেন, “পাঁচ হাজার টাকা রেখেছিলাম সারদায়। পুজোর মুখে টাকা ফেরত পেয়ে সতিই খুব আনন্দ হচ্ছে।” কার্শিয়াঙের প্রেমা শর্মার কথায়, “টাকা যে ফেরত পাব, তা স্বপ্নেও ভাবিনি। বেসরকারি সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হয়ে সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাব, তা স্বপ্নেও ভাবিনি।”
দু’জায়গাতেই এ দিন নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল এলাকা। জলপাইগুড়িতে আর্ট গ্যালারির সামনে বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছিল। মোতায়েন ছিল লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাস সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পৃথা সরকার, অতিরিক্ত জেলাশসাক সুদীপ মিত্র সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। জেলাশাসক বলেন, পরের পর্যায়ে আলিপুরদুয়ারেও চেক বিলি করা হবে। গৌতমবাবু বলেন, “এখনও বেশ কিছু বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা কারবার করছে। মানুষকে বলেছি সেখানে আমানত করবেন না। আমরা কয়েকটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার কারবারের উপরে নজর রাখছি। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |