আই লিগ, কলকাতা লিগ, এএফসি কাপের ঠাসা ক্রীড়াসূচি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা!
তিন টুর্নামেন্টের গেরোয় আটকে এই মুহূর্তে হাঁসফাঁস অবস্থা চিডি-মেহতাবদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় কুয়েত থেকে কলকাতায় ফেরার পর লাল-হলুদ ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে সেই ক্ষোভের আঁচই টের পাওয়া গেল। টিমের অধিনায়ক মেহতাব হোসেন যেমন বললেন, “শুধু তো ম্যাচ খেলতে হচ্ছে না। যাতায়াতেরও বড় ধকল রয়েছে। আজ লম্বা সফর করে কলকাতায় ফিরলাম। আবার ৯ অক্টোবর আই লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচ রয়েছে। ক্লান্তিই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। পুজোর পর আই লিগের ম্যাচ খেলতে হলে আমরা একটু মানিয়ে নেওয়ারও সময় পেতাম।’’
আর এক বঙ্গসন্তান অভিজিত্ মণ্ডলও মেহতাবের কথার রেশ টেনেই বললেন, “এ সমস্যাগুলো তো ফেডারেশনেরই বোঝা উচিত। ফুটবলাররা ক্লান্ত থাকলে আর ভাল পারফরম্যান্স করবে কী ভাবে?” এ দিন কলকাতার সময় অনুযায়ী ভোর সাড়ে ছ’টায় বিমান ধরেছে ইস্টবেঙ্গল। কলকাতায় পৌঁছেছে সন্ধে সাড়ে সাতটায়। দীর্ঘ সফরের পর রীতিমতো বিধ্বস্ত ছিলেন ফুটবলাররা।
আসলে ১৭ সেপ্টেম্বর এএফসি-র কোয়ার্টার ফাইনালে সেমেন পাদাংয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে খেলে, ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ আটের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে যেতে হয়েছে ফালোপা ব্রিগেডকে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরেই আবার ১ অক্টোবর কুয়েতে গিয়ে খেলতে হয়েছে শেষ চারের অ্যাওয়ে ম্যাচ। ৯ অক্টোবর শিলংয়ে আই লিগের ম্যাচ রয়েছে। ১৭ তারিখ ডেম্পোর বিরুদ্ধে খেলতে হবে মোগা-ওপারাদের। এর পর ২২ অক্টোবর যুবভারতীতে এএফসি-র দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। এর সঙ্গে কলকাতা লিগেরও ম্যাচ থাকছে।
দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার এডে চিডি তাই বললেন, “একেই টানা ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। তাও আবার আলাদা, আলাদা টুর্নামেন্টে। ক্লান্তির সঙ্গে পরিবেশ-পরিস্থিতি বদলেরও তো একটা চাপ থাকে। সবারই ফুটবলারদের কথা একটু ভাবা উচিত।” ফুটবলারদের সঙ্গে কোচ মার্কোস ফালোপাও একমত। তবে তাঁর যুক্তি, “জানি খুব কঠিন ক্রীড়াসূচি। কিন্তু এ নিয়ে এখন আর হা-হুতাশ করে লাভ নেই! লড়াই করতে নেমেছি যখন, নিজেদের সেরাটা দিয়েই লড়তে হবে।”
তবে সেরাটা দেওয়ার জন্য সৌমিক দে যেমন চাইছেন নিজের পছন্দের জায়গায় খেলতে। লেফট ব্যাকে খেলতে অভ্যস্ত সৌমিককে যেমন ফালোপা কখনও ব্লকার হিসেবে ব্যবহার করছেন, আবার কখনও বা লেফট হাফে খেলাচ্ছেন। এ দিন লাল-হলুদের বাঙালি ডিফেন্ডার বলেই দিলেন, “আমি যদি নিজের জায়গায় খেলতে পারি, তবে এর থেকেও ভাল পারফরম্যান্স করতে পারব। তবে দলের প্রয়োজনে কোচ যেখানে বলবে আমি সেখানে খেলতে বাধ্য।” লালরিন্দিকার আবার মন খারাপ, কুয়েত এস সি-র বিরুদ্ধে কোচ শুরু থেকে নামাননি বলে। “শুরু থেকে খেলতে পারলে ভাল লাগত। কিন্তু কোচের সিদ্ধান্ত তো মানতেই হবে,” বললেন সদ্য ভাইচুংয়ের রেকর্ড ছোঁয়া পাহাড়ি ফুটবলারটি।
আজ শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের ছুটি। কিন্তু শনিবার থেকে আবার আই লিগের জন্য লড়াইয়ে নেমে পড়তে হবে মেহতাব-চিডিদের। তবে ক্লান্ত ফুটবলাররা এই মুর্হূতে আই লিগের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে একেবারেই রাজি নন। তাঁদের সবার এখন একটাই দাবি, “খুব ক্লান্ত। একটু বিশ্রাম চাই।” |