তাঁর পছন্দের তালিকায় একে রোনাল্ডো, দুইয়ে মেসি।
নিজে অন্ধ ভক্ত রিয়াল মাদ্রিদের। তবে ক্রিকেটটা আগ্রাসনের সঙ্গে খেলেন বলেই ফুটবল ঘরানা হিসাবে পছন্দ জার্মানির আক্রমণাত্মক খেলা। “ক্রিকেটকে আমি যতটা ভালবাসি, ততটাই ভালবাসি ফুটবলকে। যদি ক্রিকেটার হতে না পারতাম তা হলে আমি অবশ্যই ফুটবলার হতাম।” বক্তা বিরাট কোহলি। এ দিন তালকাটোরা স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এসে যিনি কচিকাঁচাদের জমায়েতে নিজের ধুন্ধুমার স্টাইলে জোরদার ব্যাটিং করলেন ফুটবলের হয়ে। ভবিষ্যতের ভারত অধিনায়ক বলে যাঁকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেই বিরাটের থেকে দামি পরামর্শও এল উঠতি ফুটবলারদের জন্য। বললেন, “আমার মতো তোমরাও যদি কোনও খেলাকে আঁকড়ে ধরে জীবনে এগোতে চাও, তা হলে সেই খেলাটাকে সবার আগে মনপ্রাণ দিয়ে ভাসবাসতে হবে। নিজের যোগ্যতার উপর সব সময় আস্থা আর বিশ্বাস রাখতে হবে। এবং লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য নিজের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে পরিশ্রম করতে হবে।”
বিরাটের ফুটবল প্রীতির কথা জেনে দিল্লিতে চলা সুব্রত কাপের খুদে ফুটবলারদের আনা হয়েছিল বিরাটের এই অনুষ্ঠানে। যাঁদের হাজার জিজ্ঞাসার উত্তর হাসিমুখে দিয়ে গেলেন ক্রিকেট তারকা। বললেন, “ফুটবলকেও সমান ভালবাসি বলেই এই বছরের শুরুতে নিজের ফাউন্ডেশনের উদ্বোধনের দিন একটা ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করেছিলাম। সেই ম্যাচে খেলেওছিলাম।” ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আর লিওনেল মেসির ভক্ত হলেও বিরাট জানিয়েছেন, ফুটবলার হিসাবে মাঠে নামেন যখন, তাঁর সব থেকে পছন্দের জায়গাটা হল অ্যাটাকিং মিড-ফিল্ডারের। “ঠিক মারাদোনার মতো। ওই পোজিশনটায় খেলতে আমার দারুণ লাগে,” বলা শেষ হতেই খুদে দর্শকের হাততালিতে ফেটে পড়ল স্টেডিয়াম। স্ক্রিনে তখন বেকহামের খেলা দেখানো হচ্ছে। অডিও-ভিস্যুয়ালটা শেষ হতেই কোহলি কচিকাঁচাদের প্রশ্ন করলেন, “তোমরা জানো উনি কে?” গ্যালারি থেকে বেকহামের নামটা বলতেই খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠল বিরাটের মুখ। বললেন, “আমি চাই তোমরাও বড় হয়ে বেকহাম, রোনাল্ডো বা মেসির মতো হওয়ার চেষ্টা করো।” |
পাল্টা ভেসে এল এক খুদে দর্শকের প্রশ্ন। পরের বছর রিও বিশ্বকাপ দেখতে আপনি কি ব্রাজিল যাবেন? উত্তরে কোহলি বললেন, “ইচ্ছা তো খুব আছে। তবে জানি না শেষ পর্যন্ত যেতে পারব কি না!” এর মধ্যেই আর এক উত্সাহীর প্রশ্ন, তেন্ডুলকর তো বলেই দিয়েছেন, তাঁর রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারলে সেটা আপনিই পারবেন। আপনার কী মত? জবাবে কোহলি বললেন “সচিন আমার আইডল। ওকে দেখেই আমি ক্রিকেটে এসেছি। সচিনের মতো আমিও চল্লিশ বছর পর্যন্ত ক্রিকেট খেলে যেতে চাই। তবে তার জন্য ফিটনেসের ভীষণ প্রয়োজন। এ ব্যাপারেও আমি সচিনকে অনুসরণ করতে চাই। বলতে পারো, আমি অন দ্য ফিল্ড আর অফ দ্য ফিল্ড স্যরকে অনুসরণ করে চলেছি। ওর মতো ৪০ বছর বয়সের পরেও ভারতীয় দলের হয়ে ক্রিকেটটা খেলতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করব।”
নিজের সেরা ইনিংসের কথা বলতে গিয়ে বিরাট কোহলি উল্লেখ করলেন অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির কথা। তার পরেই তিনি রাখতে চান হোবার্টে ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিটাকে। জানালেন, তাঁর দেখা সেরা দুই বোলার দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন ও মর্নি মর্কেল। সব থেকে পছন্দের ব্যাটসম্যান অবশ্যই সচিন তেন্ডুলকর। বিদেশিরদের মধ্যে ক্রিস গেইল।
ইদানীং এন্ডোর্সমেন্ট-এ সচিন, ধোনিদের ছাপিয়ে তিনি চলে এসেছেন এক নম্বরে। এই কৃতিত্বটায় তিনি ঠিক কতটা খুশি?
এক দিনের ক্রিকেটে ১৫টি সেঞ্চুরির মালিক বিরাটের সোজাসাপটা উত্তর, “ভাল তো লাগেই। কিন্তু সেগুলো করতে গিয়ে আমি নিজের পরিবার আর বন্ধুদের খুব মিস করি।” |